আসানসোল, 28 এপ্রিল : একদিকে চাঁদিফাটা গরম, হাঁসফাঁস অবস্থা । এই অবস্থায় মানুষ স্বস্তি পেতে রাস্তার ধারে লস্যি, আখের রস কিংবা অন্যান্য নানা ধরনের শরবত পান করছেন । সেই পানীয়তে মেশানো হচ্ছে বরফ (Adding ice to corpse is being mixed in drink)। কিন্তু এই বরফ আসলে কি? সূত্র বলছে, বিভিন্ন বরফ কারখানায় যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল বরফ তৈরি হয়, যা মূলত মাছ-মাংস কিংবা বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য এমনকী মৃতদেহ সংরক্ষণ করতে ব্যবহার করা হয়, সেই বরফই মিশছে রাস্তার ধারের পানীয়তে । অস্বাস্থ্যকর ভাবে তৈরি এই বরফ পেটে যাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের রোগ ডেকে আনছে । জেলা স্বাস্থ্য দফতর বা আসানসোল পৌরনিগম বিষয়টি নিয়ে তৎপর বলে দাবি করলেও কোথাও এই বিষয়ে অভিযান এখনও চোখে পড়েনি ।
আসানসোলের কল্যাণপুর, জামুড়িয়ার চাঁদা অঞ্চলে রয়েছে বরফ তৈরির কারখানা । সেখানে বোরিং করে মাটি থেকে তোলা জল সরাসরি লোহার বাক্সের মধ্যে ফেলে তা দিয়ে তৈরি হয় বরফ । এই জল পরিশুদ্ধ নয় কিংবা এই জলকে পরিশুদ্ধ করার কোনও প্রক্রিয়াও কারখানাগুলোতে দেখা যায়নি । অর্থাৎ ভূগর্ভস্থ জলে কোনও রাসায়নিক রয়েছে কি না, তা কেউ জানে না । পাশাপাশি নোংরা মরচে পড়া লোহার বাক্সগুলি কতটা স্বাস্থ্যসম্মত সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে ।
আরও পড়ুন : পানীয় জলের বোতলে ভাসছে শ্যাওলা, বোতল বিক্রি করে বিপাকে ব্যবসায়ী
অন্যদিকে বরফ তৈরি হওয়ার পর রাস্তার ধারে সেগুলি পড়ে থেকে তুষে মাখামাখি হয় নোংরা অবস্থায় । রাস্তার ধারে যেভাবে বরফ পড়ে থাকে, তা কতটা পানযোগ্য সে বিষয়েও কেউ ভাবেন না । মানুষজনও অসচেতন হয়ে রাস্তার ধারে বিভিন্ন শরবতের দোকানগুলোতে অস্বাস্থ্য়কর বরফ মেশানো পানীয় পান করছেন ।
পশ্চিম বর্ধমান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মহম্মদ ইউনুস বলেন, "অস্বাস্থ্যকর এই বরফ পেটে গেলে ভাইরাল ফিভার থেকে শুরু করে পেটের নানা রকমের রোগ হতে পারে । আমরা আমাদের খাদ্য পরিদর্শককে অবিলম্বে নির্দেশ দেব এই বরফ পরীক্ষা করার জন্য । যদি কিছু অনিয়ম ধরা পড়ে সে ক্ষেত্রে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।"
অন্যদিকে, আসানসোল পৌরনিগমের কমিশনার নীতীন সিংঘানিয়া বলেন, "বাজারজুড়ে অভিযান চলছে । কোনওরকমের অস্বাস্থ্যকর পানীয় বরদাস্ত করা হবে না ।"
যদিও বাজারজুড়ে দেখা যাচ্ছে দেদার বিকোচ্ছে এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল বরফ মিশ্রিত পানীয় । মানুষজন সচেতন হলে অনেকটাই এই সমস্যা থেকে সমাধান মিলবে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।