দুর্গাপুর, 1 মে: পশ্চিম বর্ধমানের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র দেউল। কাঁকসার ঘন জঙ্গলের মাঝে ঐতিহাসিক শ্যামরূপা মন্দির ও দেউলকে কেন্দ্র করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার কথা বিগত বাম সরকারের সময়কাল থেকে বহুবার শোনা গিয়েছিল। কিন্তু অজয় নদীর তীরে ঘন জঙ্গলে ঢাকা এই দেউলকে ঘিরে পর্যটন কেন্দ্রের কোনও উন্নয়ন হয়নি। পাশাপাশি কাঁচা রাস্তা থাকায় জঙ্গল প্রেমীদের ইচ্ছা থাকলেও এখানে ঢুকতে রীতিমতো ভয় পেতেন ৷ এবার ঘন জঙ্গলের বুক চিরে তৈরি হচ্ছে কংক্রিটের রাস্তা ৷ সোমবার সেই কাজের সূচনা করলেন রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ৷
বন দফতরের বাধার জেরে এতদিন পর্যন্ত জঙ্গলের এই পথ লাল মাটিরই থেকে গিয়েছিল। এই রাস্তা দিয়ে বহু বালি বোঝাই লড়ি ছাড়াও বহু যানবাহন চলাচলের কারণে রাস্তার অবস্থা বেহাল। অথচ এই রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে এমনকী ভিন রাজ্য থেকেও কাঁকসার জঙ্গলের মাঝে শ্যামরূপার মন্দির ও দেউল দেখার জন্য বহু পর্যটক আসেন। একসময় অবিভক্ত বর্ধমান জেলার জেলা পরিষদের উদ্যোগে দেউলের কাছেই তৈরি হয় রিসোর্টও। উন্নয়ন বলতে ওইটুকুই। শুধু তাই নয় এই জঙ্গলেই রয়েছে প্রচুর হরিণ, ময়ূর ৷ সম্প্রতি দেখা মিলেছে নীল গাইয়েরও।
জঙ্গল প্রেমী পর্যটকদের কাছে এই পর্যটনকেন্দ্র স্বাভাবিকভাবেই আকর্ষণীয়। কিন্তু এখানকার এই রাস্তা এতটাই বেহাল ছিল যে, পর্যটন প্রেমীরা এই রাস্তা দিয়ে পরিবার নিয়ে আসতে রীতিমতো ভয় পেতেন। এবার এই পর্যটন কেন্দ্রকে পথ দেখাবে পথশ্রী প্রকল্প। প্রায় এক কোটি 66 লক্ষ টাকা ব্যয় করে শুরু হল সাড়ে তিন কিলোমিটার নতুন পাকা রাস্তা নির্মাণের কাজ। জানা গিয়েছে, পথশ্রী প্রকল্পের আওতায় কাঁকসার বিষ্ণুপুর থেকে আজয়পল্লী পযন্ত কাঁচা রাস্তা অবশেষে পাকা হতে চলেছে। সোমবার সকালে কাজের সূচনা করেন রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ৷ হাজির ছিলেন, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার চেয়ারম্যান সুভাষ মণ্ডল। ইছাই ঘোষের দেউলকে ঘিরে গড়ে উঠেছে বনদফতরের পর্যটন কেন্দ্র।
এখানে রয়েছে প্রায় 100 চিতল হরিণ ও কয়েকশো ময়ূর ৷ রয়েছে নীল গাইও ৷ বন দফতরের রিসর্ট এবং ওয়াচ টাওয়ার গড়ে উঠেছে সেখানে। তবে পর্যটকদের যাতায়াতের ক্ষেত্রে দীর্ঘ দিনের সমস্যা পূরণ হতে চলেছে এবার পথশ্রী প্রকল্পের মাধ্যমে। দেউল পর্যটন কেন্দ্রে যেতে ব্যাপক সম্যসার মুখে পড়তে হত পর্যটকদের। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরপথে যেতে হত পর্যটকদের। এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই রাস্তার। এবার এলাকাবাসী এবং পর্যটকদের দাবি পূরণ করল রাজ্য সরকার। কয়েকমাসের মধ্যে রাস্তার কাজ শেষ হয়ে যাবে বলেও আশাবাদী খোদ রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী। তিনি বলেন, "দেউলের দিকে যারা যাবেন তাদের দন্য এই রাস্তা খুব সহায়ক হবে ৷ জঙ্গলের ভিতর দিয়ে এরকম মনোরম রাস্তা উপভোগ করবেন পর্যটকরা ৷ আরও বেশ কিছু যায়গা থেকে ছোট ছোট রাস্তার অনুরোধ এসেছে আমাদের কাছে৷ আমরা চেষ্টা করছি সেগুলি করার ৷" খুশি এলাকাবাসীও।
আরও পড়ুন: অপরূপা পোদ্দারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলা খারিজ হাইকোর্টে