দুর্গাপুর, 27 অগস্ট: দিনভর উত্তপ্ত রইল দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গ চত্বর ৷ অভিযোগ চিকিৎসক না-আসায় সময় মতো একাধিক মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়নি ৷ যাও বা হয়, ময়নাতদন্তের পর দেহ সেলাই করে ঠিকঠাকভাবে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য 3 হাজার টাকা দাবি করে মর্গের কর্মীরা ৷ ঘটনার প্রতিবাদে রবিবার দুপুরের পর থেকে হাসপাতালের গেটে তালা দিয়ে দেন মৃতের পরিবারের সদস্যরা ৷ মর্গের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন তাঁরা ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে হাসপাতালে পৌঁছয় নিউ টাউনশিপ থানার পুলিশ ৷
জানা গিয়েছে, দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গে শনিবার চারটি মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় ৷ রবিবার বেলা 12টার মধ্যে ময়নাতদন্ত হয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও চিকিৎসক আসেনি বলে অভিযোগ ৷ তার উপর ময়নাতদন্তের পর দেহ সেলাই ও প্লাস্টিকে মুড়ে দেওয়ার জন্য মহকুমা হাসপাতালের মর্গ কর্মীরা মোটা টাকা চাইছে বলে অভিযোগ ওঠে ৷ এরই প্রতিবাদে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের মূল প্রবেশদ্বার বন্ধ করে দেন মৃতের আত্মীয়রা ৷ মর্গের সামনে বিক্ষোভে সামিল হয় তারা ৷ দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিক জীবন কুমার মণ্ডল বলেন, "একটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল ৷ কিন্তু, সেটা মিটেও গিয়েছে ৷ আর টাকা নেওয়ার যে অভিযো উঠছে, সেই বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখব ৷"
বাঁকুড়ার বাসিন্দা সুকুমার বাগদি অভিযোগ করেছেন, "শুক্রবার দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া দেহ গতকাল ময়নাতদন্তের পরে নিয়ে যাওয়ার কথা জানানো হয়েছিল ৷ কিন্তু, গতকাল ময়নাতদন্ত হয়নি, চিকিৎসক আসেনি বলে ৷ আজ সকাল থেকে দুপুর তিনটে পর্যন্ত চিকিৎসক অনুপস্থিত ৷ এখানে মর্গের যে কর্মীরা রয়েছে, তাঁরা বলছেন ময়নাতদন্তের পর সেলাই করার জন্য তাদেরকে 3 হাজার টাকা দিতে হবে ৷ সরকারি হাসপাতালে এ কেমন অব্যবস্থা ? আমরা তার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ করেছি ৷"
আরও পড়ুন: পুলিশ মর্গ থেকে মৃতদেহের অংশ বের করে নিয়ে যাচ্ছে কুকুরে, দায় এড়াতে তৎপর সবপক্ষ
অন্য এক মৃতের আত্মীয় মহম্মদ মাহির আনসারি তিনিও একই অভিযোগ তুলেছেন ৷ তিনি বলেন, "অযথা রবিবার সকাল থেকে আমাদেরকে বসিয়ে রাখা হল ৷ গতকাল একবার ময়নাতদন্ত হয়নি ৷ আজ দুপুর বারোটার মধ্যে ময়নাতদন্ত হবে বলে জানানো হয় ৷ চিকিৎসক সময় মতো এসেও হাসপাতালের ভিতরে বসে ছিলেন ৷ আমাদের বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর তিনি বেগতিক বুঝে ময়নাতদন্ত করতে চলে এলেন ৷"
দুর্গাপুর সরকারি মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্ত নিয়ে বিভ্রাটের ঘটনা নতুন কিছু নয় ৷ তাই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আধিকারিকদের এই বিষয়টি খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করছেন অন্যান্য রোগীর আত্মীয়রা ৷