রানিগঞ্জ, 30 জুলাই : যোগাতে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এ (India Book of Records) নাম তুললেন রাজ্যের মেয়ে ৷ টানা 31 মিনিট 30 সেকেন্ড ধরে পর্বতাসন করে রেকর্ড গড়েছেন রানিগঞ্জের অভিসিক্তা দাশ । ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এর পাঠানো সেই চিঠি 19 জুলাই হাতে পেয়েছেন তিনি । আর ক'দিনের মধ্যে আসবে মেডেল, অ্যাওয়ার্ড ও সার্টফিকেট । ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এ 2021-এর রেকর্ড বুকে নাম উঠবে তাঁর ।
নীরোগ শরীর, সুস্থ মন বজায় রাখতে নিয়মিত যোগাসন প্রয়োজন । মানসিক জড়তা, অবসন্নতা কাটাতে মাত্র 6 বছর বয়সে অভিসিক্তাকে যোগা ক্লাসে ভর্তি করেছিলেন তাঁর মা শিপ্রা দাশ । রানিগঞ্জের গির্জা পাড়ার বাসিন্দা অভিসিক্তা এখন বিএসসির ছাত্রী ৷ স্কুল থেকেই একের পর এক জাতীয় স্তরের পুরস্কার জিতেছেন । এবার যোগাতে ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এ নাম তুললেন তিনি । ট্র্যাডিশনাল যোগাসনের অন্যতম কঠিন ভঙ্গি 'নি' ব্যালেন্স (Knee Balance) পর্বতাসন অর্থাৎ হাঁটুর উপর ভর করে পর্বতাসন । এক সময় উদয় ধীবর তাঁর ট্রেনার ছিলেন । এখন তিনি কৌশিক দাশের কাছে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন ৷ অভিসিক্তার দাবি, অল্প বয়সে প্রথম একমাস শিখে ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে জাতীয় স্তরের যোগা প্রতিযোগিতায় প্রথম পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি । তারপরেই যোগাসন নিয়ে এগিয়ে যাওয়া অভিসিক্তার ৷ বাবা আশিস দাশ বছর পাঁচেক আগে প্রয়াত হয়েছেন । সেই সময় এক বছরের জন্য মানসিক ও আর্থিক সমস্যায় যোগাসন বন্ধ হয়ে গিয়েছিল তাঁর ।
আরও পড়ুন : Tokyo Olympics : ভারতের দ্বিতীয় পদক নিশ্চিত, বক্সিংয়ে সেমি-ফাইনালে লভলিনা
মা শিপ্রা দেবী বলেন, "2013-তে দিল্লিতে যোগার জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় গোল্ড মেডেল পেয়েছিল মেয়ে । 2014 সালে গুজরাতে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় সিলভার ও 2015 সালে জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় মহারাষ্ট্রে ও গোল্ড মেডেল পায় ।" জাতীয় স্তরের যোগাতে বাংলার মেয়ে সোনা জিতে আসার পর রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সংবর্ধনা দেন তাঁকে । 2017-য় কলকাতার রবীন্দ্রভবনে আন্তর্জাতিক যোগা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিলেন রানিগঞ্জের এই ছাত্রী । 2019-র ডিসেম্বরে জাতীয় স্তরের চ্যাম্পিয়ন ও মেগাচ্যাম্পিয়ান হয়েছিল সে । লকডাউনের মধ্যে গত দু'বছরে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অনলাইন প্রতিযোগিতাগুলিতে অভিসিক্তা সেরার শিরোপা অর্জন করেছেন ।
লকডাউনে কী ভাবে সম্ভব হল ইন্ডিয়া বুক অফ রেকর্ডস-এ নাম তোলা ? অভিসিক্তা বলেন, "সংস্থার পেজে অ্যাপ্লিকিশেন ফর্ম রয়েছে । সেখানে বিষয় নির্বাচন করে ওদের পোর্টালে ভিডিয়ো ও ভ্যালিড ডকুমেন্ট পাঠানো হয়েছিল ।" তিনি 12 জুলাই আবেদনপত্র জমা করেন ৷ 17 জুলাই তাঁর ভিডিয়োটি দেখে অভিজ্ঞ বিচারকেরা এই স্বীকৃতি দিয়েছেন । হাঁটুর উপর ভর করে এখনও পর্যন্ত সারা দেশে 31 মিনিট 30 সেকেন্ডের পর্বতাসন কেউ করতে পারেননি । তিনিই প্রথম এই রেকর্ডের অধিকারী ।
এর পর অভিসিক্তার লক্ষ্য ওয়ার্ল্ড বুক অফ রেকর্ডস-এ নাম তোলার । আগামী দিনের স্বপ্ন অলিম্পিকসে দেশের হয়ে অংশগ্রহণ আর স্বর্ণপদক জেতা ৷ কারণ এই বছর প্রথম যোগাসন ইভেন্ট অলিম্পিকে অনুমোদন পেয়েছে । সেক্ষেত্রে যোগাসন নিয়ে দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ থাকছে তাঁর ।
আরও পড়ুন : Tokyo Olympics : জাতীয় রেকর্ড গড়েও 3000 মিটার স্টেপলচেস ফাইনালে যাওয়া হল না অভিনাশের