আসানসোল, 5 জুলাই: রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে সোমবার গভীর রাতে উত্তাল হল আসানসোল জেলা হাসপাতাল । চিকিৎসায় গাফিলতের অভিযোগ তুলে হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখানোর পাশাপাশি ভাঙচুর চালান রোগীর পরিবারের সদস্যরা এবং তাঁর প্রতিবেশীরা (Asansol Hospital Vandalised)। মৃত রোগীর নাম কাঞ্চন বাউরি (21)। তিনি জেলা হাসপাতালেই অ্যাম্বুলেন্স চালাতেন ।
রোগীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে আসানসোলের বুধা গ্রামের বাসিন্দা অ্যাম্বুলেন্স চালক কাঞ্চন বাউরিকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল । রোগীর বাবা সূর্য বাউরি বলেন, "ডায়েরিয়া হয়েছিল আমার ছেলের । সকালে ভর্তি করি । প্রথমে ফেলে রাখা হয়েছিল । পরে শুনলাম বিকেলে আইসিইউতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে । রাতে বলছে মারা গিয়েছে । ওরা চিকিৎসা করতে না পারলে আমাদের বলে দিতে পারত । অন্য কোথাও নিয়ে যেতাম । কিন্তু চিকিৎসা না করে আমার ছেলেকে মেরে ফেলল ওরা ।"
যদিও হাসপাতালের চিকিৎসক একে ঘটক বলেন, "ওই রোগীর প্যানক্রিয়াসের কোনও সমস্যা ছিল । চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি ছিল না । আরও ভালো জায়গায় চিকিৎসা করালেও এই রোগীর মৃত্যু হতে পারত ।"
আরও পড়ুন : Hospital Vandalized: রোগীমৃত্যু ঘিরে ধুন্ধুমার ডায়মন্ড হারবার হাসপাতাল, আক্রান্ত চিকিৎসক
চিকিৎসা চলাকালীন রাতে কাঞ্চন বাউরির মৃত্যু হয় । এই মৃত্যুর খবর পেতেই কাঞ্চন বাউরির পরিবারের লোক এবং প্রতিবেশীরা হাসপাতালে এসে বিক্ষোভ দেখায় । তাঁদের দাবি, সঠিক চিকিৎসা হয়নি । এরপরে বিক্ষোভের মাঝে তাঁরা আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভাঙচুর চালান বলে অভিযোগ । নার্সদের বেশ কয়েকটি গাড়ি এবং হাসপাতালের আউটডোরে থাকা সাইনবোর্ডগুলোতে তাঁরা ভাঙচুর চালান । যদিও তড়িঘড়ি আসানসোল জেলা হাসপাতালে দক্ষিণ থানার পুলিশ গিয়ে পৌঁছায় এবং তারা পরিস্থিতি সামাল দেয় ।
যদিও এই ঘটনায় আতঙ্কিত হাসপাতালে স্বাস্থ্যকর্মীরা এবং নিরাপত্তারক্ষীরা । চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, বিক্ষোভ ও ভাঙচুরের জেরে অন্য ডাক্তারেরাও অন্য ওয়ার্ড যেতে পারছে না । ফলে অনেক রোগীকে দেখা সম্ভব হচ্ছে না । হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প থাকলেও পুলিশ কেন দেরি করে পৌঁছল সেই প্রশ্ন তুলেছেন চিকিৎসকরা । লিখিত কোনও অভিযোগ এখনও করেননি রোগীর পরিবারের সদস্যরা । হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশ জানিয়েছে, সঠিক অভিযোগ পেলে তদন্ত হবে । পাশাপাশি ভাঙচুরের ঘটনায় যাঁরা জড়িত তাঁদেরকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভাবছে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ।