ETV Bharat / state

Asansol Oldage Home: রিমা-রিয়াকে খড়কুটো করে বাঁচছেন 'অনাথ' বৃদ্ধ-বৃদ্ধারা, চর্চায় আসানসোলে বোনেদের তৈরি বৃদ্ধাশ্রম - Oldage home create at asansol by 2 sister

অভিজাত পরিবারের সন্তান হয়েও পারিবারিক ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে সেবা ধর্মে মেতেছে দুই বোন ৷ পরিবারের তৈরি বিয়েবাড়িকে নিজের চেষ্টায় তাঁরা বানিয়ে তুলেছে বৃদ্ধাশ্রম ৷ এই কাজে পাশে পেয়েছে পরিবারকেও ৷ দুই বোনের ধ্যানজ্ঞান এখন এই বৃদ্ধাশ্রম(Asansol Oldage Home)৷

Etv Bharat
আশ্রয়হীনের ত্রাতা রিমা ও রিয়া
author img

By

Published : Dec 6, 2022, 10:54 PM IST

আসানসোল, 6 ডিসেম্বর: আসানসোলের প্রান্তিক এলাকা সাঁকতোড়িয়া, ডিসেরগড়ের দুই বোন রিমা ও রিয়া আচার্য । আত্মকেন্দ্রিকতার ইঁদুর দৌড় থেকে নিজেদের সরিয়ে জনসেবায় মেতেছেন তাঁরা । আশ্রয়হীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য গড়ে তুলেছেন একটি বৃদ্ধাশ্রম (Oldage Home Create at Asansol by 2 Sister)। বর্তমানে যার আবাসিক সংখ্যা প্রায় 25 ।

করোনার আগে থেকেই সমাজ সেবা করত দুই বোন ৷ তবে কোভিডকালে অভুক্তদের খাবার দেওয়া থেকে শুরু করে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে প্রান্তিক এলাকায় কোভিড আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি তা সরবরাহের কাজও করেন তারা ৷ যার ফলে করোনা আক্রান্ত হতে হয়েছিল তাঁদেরকেও ৷ কিন্তু তারপরেও কাজ থামেনি ৷ দুঃস্থ ও করোনায় কাজহারাদের জন্য নিয়মিত খাদ্যদ্রব্য ও রেশন, গ্রামের মহিলাদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি কাজে প্রতিদিন ব্যস্ত হয়ে পড়েন রিমা-রিয়া ৷

কুলটির সাঁকতোড়িয়া এলাকার অভিজাত আচার্য পরিবারের মেয়ে রিমা ও রিয়া । সমাজ সেবা করতে করতে পারিবারিক ব্যবসা থেকেও ক্রমে সরে আসতে থাকেন তাঁরা । এরই মাঝে করোনাকালে আশ্রয়হীনদের অসহায় অবস্থার কথা ভেবে কাতর হয়ে ওঠেন দুই বোন । ঠিক করেন, নিজেদের যে ম্যারেজ হল ছিল, সেখানেই তাঁদের আশ্রয় দেওয়া হবে । এরপর চালু ম্যারেজ হলটিকে শেষ পর্যন্ত বন্ধ করে তার লাইসেন্স জমা দিয়ে ব্যবসা থেকে সরে আসে তাঁরা । সেই ম্যারেজ হল ও পুরোনো একটি বাড়ি ঘিরে ধীরে-ধীরে গড়ে ওঠে আশ্রয়হীন, নিঃসন্তান ও অসহায় বৃদ্ধবৃদ্ধাদের আশ্রয়স্থল ৷ নাম দেওয়া হয় আদ্যাশক্তি বৃদ্ধাশ্রম(Oldage Home at Asansol)।

আরও পড়ুন : বৃদ্ধাশ্রম,অনাথ আশ্রম গড়ে মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চান ঐন্দ্রিলার মা

করোনাকাল চলে গিয়েছে । স্বাভাবিক হয়েছে সমাজ ৷ তবে রিমা-রিয়া এই সমাজসেবার নেশা ছাড়তে পারেনি । পারিবারিক ব্যবসা থেকে সরে এসে এখন তাঁরা সম্পূর্ণভাবে সমাজসেবায় নিমজ্জিত ।

Asansol
বৃদ্ধাশ্রমে এক আবাসিকের সঙ্গে রিমা ও রিয়া

কিন্তু কীভাবে চলে এই বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের যাবতীয় খরচ ?

এই বিষয়ে রিয়া এবং রিমা আচার্য জানান, বেশ কয়েকজন আশ্রয়হীন অসহায় মানুষজনেরা যেমন বিনামূল্যে আছেন ওই বৃদ্ধাশ্রমে, তেমনই যাঁদের সামর্থ আছে তাঁরা অর্থ প্রদান করেন । এছাড়া শুভানুধ্যায়ী ও অন্যান্য সমাজকর্মীরা নিয়মিত চাল, ডাল ও বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে যান । বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও অনেকে দান করেন । এইভাবেই চলে যায় ৷

দুই বোনের তৈরি আসানসোলের বৃদ্ধাশ্রম

বাবা সমীর আচার্যও মেয়েদের এই কাজে ভীষণ খুশি ৷ তাঁর কথায়, "রিমা-রিয়ার মতো মেয়ে যেন প্রতি ঘরে ঘরে জন্মায় ৷" তবে আবাসিকদের চিকিৎসা নিয়ে প্রায়ই সমস্যায় পড়েন দুই বোন । আসানসোল শহর থেকে অনেকটাই দূরে এই আদ্যাশক্তি বৃদ্ধাশ্রম । তাই হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সরকারি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেকটাই সময় চলে যায় । কিন্তু পাশেই সাঁকতোড়িয়ায় ইসিএলের সদর হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও সেখানে নিয়মের জটিলতায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের চিকিৎসা করানো যায় না । রিমা এবং রিয়া জানিয়েছেন, যদি ইসিএল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে মানবিকতার খাতিরে বিবেচনা করেন, তবে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের চিকিৎসার সুযোগটুকু পাওয়া যায় ।

আরও পড়ুন : পুজো উপহার নিয়ে নবনীড়-এ মুখ্যমন্ত্রী, গানে গল্পে সময় কাটালেন আবাসিকদের সঙ্গে

আসানসোল, 6 ডিসেম্বর: আসানসোলের প্রান্তিক এলাকা সাঁকতোড়িয়া, ডিসেরগড়ের দুই বোন রিমা ও রিয়া আচার্য । আত্মকেন্দ্রিকতার ইঁদুর দৌড় থেকে নিজেদের সরিয়ে জনসেবায় মেতেছেন তাঁরা । আশ্রয়হীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য গড়ে তুলেছেন একটি বৃদ্ধাশ্রম (Oldage Home Create at Asansol by 2 Sister)। বর্তমানে যার আবাসিক সংখ্যা প্রায় 25 ।

করোনার আগে থেকেই সমাজ সেবা করত দুই বোন ৷ তবে কোভিডকালে অভুক্তদের খাবার দেওয়া থেকে শুরু করে অক্সিজেন সিলিন্ডার কিনে প্রান্তিক এলাকায় কোভিড আক্রান্তদের বাড়ি বাড়ি তা সরবরাহের কাজও করেন তারা ৷ যার ফলে করোনা আক্রান্ত হতে হয়েছিল তাঁদেরকেও ৷ কিন্তু তারপরেও কাজ থামেনি ৷ দুঃস্থ ও করোনায় কাজহারাদের জন্য নিয়মিত খাদ্যদ্রব্য ও রেশন, গ্রামের মহিলাদের জন্য স্যানিটারি ন্যাপকিনের ব্যবস্থা করা ইত্যাদি কাজে প্রতিদিন ব্যস্ত হয়ে পড়েন রিমা-রিয়া ৷

কুলটির সাঁকতোড়িয়া এলাকার অভিজাত আচার্য পরিবারের মেয়ে রিমা ও রিয়া । সমাজ সেবা করতে করতে পারিবারিক ব্যবসা থেকেও ক্রমে সরে আসতে থাকেন তাঁরা । এরই মাঝে করোনাকালে আশ্রয়হীনদের অসহায় অবস্থার কথা ভেবে কাতর হয়ে ওঠেন দুই বোন । ঠিক করেন, নিজেদের যে ম্যারেজ হল ছিল, সেখানেই তাঁদের আশ্রয় দেওয়া হবে । এরপর চালু ম্যারেজ হলটিকে শেষ পর্যন্ত বন্ধ করে তার লাইসেন্স জমা দিয়ে ব্যবসা থেকে সরে আসে তাঁরা । সেই ম্যারেজ হল ও পুরোনো একটি বাড়ি ঘিরে ধীরে-ধীরে গড়ে ওঠে আশ্রয়হীন, নিঃসন্তান ও অসহায় বৃদ্ধবৃদ্ধাদের আশ্রয়স্থল ৷ নাম দেওয়া হয় আদ্যাশক্তি বৃদ্ধাশ্রম(Oldage Home at Asansol)।

আরও পড়ুন : বৃদ্ধাশ্রম,অনাথ আশ্রম গড়ে মেয়ের স্বপ্ন পূরণ করতে চান ঐন্দ্রিলার মা

করোনাকাল চলে গিয়েছে । স্বাভাবিক হয়েছে সমাজ ৷ তবে রিমা-রিয়া এই সমাজসেবার নেশা ছাড়তে পারেনি । পারিবারিক ব্যবসা থেকে সরে এসে এখন তাঁরা সম্পূর্ণভাবে সমাজসেবায় নিমজ্জিত ।

Asansol
বৃদ্ধাশ্রমে এক আবাসিকের সঙ্গে রিমা ও রিয়া

কিন্তু কীভাবে চলে এই বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের যাবতীয় খরচ ?

এই বিষয়ে রিয়া এবং রিমা আচার্য জানান, বেশ কয়েকজন আশ্রয়হীন অসহায় মানুষজনেরা যেমন বিনামূল্যে আছেন ওই বৃদ্ধাশ্রমে, তেমনই যাঁদের সামর্থ আছে তাঁরা অর্থ প্রদান করেন । এছাড়া শুভানুধ্যায়ী ও অন্যান্য সমাজকর্মীরা নিয়মিত চাল, ডাল ও বিভিন্ন সামগ্রী দিয়ে যান । বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রও অনেকে দান করেন । এইভাবেই চলে যায় ৷

দুই বোনের তৈরি আসানসোলের বৃদ্ধাশ্রম

বাবা সমীর আচার্যও মেয়েদের এই কাজে ভীষণ খুশি ৷ তাঁর কথায়, "রিমা-রিয়ার মতো মেয়ে যেন প্রতি ঘরে ঘরে জন্মায় ৷" তবে আবাসিকদের চিকিৎসা নিয়ে প্রায়ই সমস্যায় পড়েন দুই বোন । আসানসোল শহর থেকে অনেকটাই দূরে এই আদ্যাশক্তি বৃদ্ধাশ্রম । তাই হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সরকারি জেলা হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেকটাই সময় চলে যায় । কিন্তু পাশেই সাঁকতোড়িয়ায় ইসিএলের সদর হাসপাতাল থাকা সত্ত্বেও সেখানে নিয়মের জটিলতায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের চিকিৎসা করানো যায় না । রিমা এবং রিয়া জানিয়েছেন, যদি ইসিএল কর্তৃপক্ষ বিষয়টিকে মানবিকতার খাতিরে বিবেচনা করেন, তবে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের চিকিৎসার সুযোগটুকু পাওয়া যায় ।

আরও পড়ুন : পুজো উপহার নিয়ে নবনীড়-এ মুখ্যমন্ত্রী, গানে গল্পে সময় কাটালেন আবাসিকদের সঙ্গে

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.