ETV Bharat / state

বাংলাদেশিকে পাচার আসানসোলের যৌনপল্লিতে, স্ত্রীকে ফিরে পেতে দেশ পেরিয়ে এলেন স্বামী

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 19, 2023, 5:40 PM IST

Women Trafficking: বাংলাদেশি এক মহিলাকে নিয়ে এসে আসানসোলের যৌনপল্লিতে পাচার করার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল এক মহিলা দালালকে ৷ স্ত্রীকে ফিরে পেতে এপার বাংলায় এসেছেন পাচার হওয়া মহিলার স্বামী ৷

Women Trafficking
বাংলাদেশিকে আসানসোলের যৌনপল্লিতে পাচার

আসানসোল, 19 ডিসেম্বর: এক বাংলাদেশি মহিলাকে ফুঁসলিয়ে এ দেশে নিয়ে এসে আসানসোলের কুলটির লছিপুর যৌনপল্লিতে পাচার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মহিলা দালালের বিরুদ্ধে । স্ত্রীকে ফিরে পেতে বাংলাদেশ থেকে আসানসোলে পৌঁছলেন ওই মহিলার স্বামী । স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ওই মহিলাকে । গ্রেফতার করা হয়েছে মহিলা দালালকে । যদিও উদ্ধার হওয়া মহিলার কাছে এ দেশে আসার নির্দিষ্ট নথি না থাকায়, তাঁকে সংশোধনাগারে পাঠিয়েছেন আসানসোল আদালতের বিচারক । শ্রীঘরে মহিলা দালালও ।

জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে বাড়ি ছিল শবনম বেগমের (নাম পরিবর্তিত)। স্বামী মহম্মদ জাভেদ (নাম পরিবর্তিত) বিদেশে চাকরি করেন । গত 7 ডিসেম্বর ছুটিতে বাড়ি ফিরে আসেন জাভেদ । কিন্তু বাড়িতে এসে নিজের স্ত্রীকে খুঁজে পাননি । ফোনও বন্ধ পান ।

জাভেদ জানিয়েছেন, "এর পর বিভিন্ন সূত্রে আমি জানতে পারি বাংলাদেশের জনৈক মহিলা দালালের খপ্পরে পড়েছেন আমার স্ত্রী । তাঁকে কানাডা নিয়ে যাওয়ার নাম করে আসানসোলের নিয়ামতপুরে লছিপুর যৌনপল্লিতে পাচার করা হয়েছে ।"

সেই খবর জানতে পেরে মরিয়া হয়ে ওঠেন জাভেদ । স্ত্রীকে ফিরে পেতে বাংলাদেশ থেকে ভারত চলে আসেন । সোজা চলে যান আসানসোলে । কুলটির নিয়ামতপুরে লছিপুর যৌনপল্লিতে বিভিন্ন দালালের মারফত তিনি নিশ্চিত হন যে, তাঁর স্ত্রী শবনম লছিপুর যৌনপল্লিতেই আছেন । এরপরে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে শুরু করে কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি । পুলিশ ওই ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে লছিপুর যৌনপল্লি থেকে ওই বাংলাদেশি মহিলাকে উদ্ধার করে । পাশাপাশি অভিযুক্ত মহিলা দালালকেও গ্রেফতার করা হয় ।

গতকাল তাঁদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে যেহেতু বাংলাদেশের মহিলার কাছে এ দেশে আসার কোনও নথি ছিল না, সেই কারণে তাঁকে আসানসোল সংশোধনাগারে পাঠানো হয় । পাশাপাশি মহিলা দালালকেও শ্রীঘরে পাঠান বিচারক । বর্তমানে ওই মহিলার স্বামী পুলিশের দফতর ও আসানসোল সংশোধনাগার এলাকায় স্ত্রীর সমস্ত নথি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন । উদ্দেশ্য, স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া ।

মহিলার স্বামী জানিয়েছেন, "আমার ভরসা আছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এবং আইন ব্যবস্থার উপরে । আমি সমস্ত নথি দেখিয়ে আমার স্ত্রীকে পুনরায় বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারব খুব দ্রুত । যতদিন না পর্যন্ত আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পাচ্ছি, ততদিন আমি এই দেশে আইনে লড়াই লড়ব ।"

অন্যদিকে, আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ জানিয়েছে, "বাংলাদেশি ওই ব্যক্তি এসে অভিযোগ করেছিলেন, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্ত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে । যদিও মহিলা উলটো কথা বলেছেন পুলিশকে । মহিলা জানিয়েছেন, তিনি তাঁর নিজের ইচ্ছেতেই এ দেশে এসেছেন এবং স্বামী তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতেন বলেই তিনি আর স্বামীর সঙ্গে ফিরতে চান না ।"

আরও পড়ুন:

  1. চাকরি দেওয়ার নামে দুবাই-ওমানে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার, শহরে ফিরেও আতঙ্কিত তরুণী
  2. বিয়ের ফাঁদে যৌনপল্লিতে বিক্রি কিশোরী, ধৃত নাবালক-সহ 3
  3. জোরহাটে নারীপাচার রুখে দিল পুলিশ, রাতের বাস থেকে উদ্ধার 7 কিশোরী

আসানসোল, 19 ডিসেম্বর: এক বাংলাদেশি মহিলাকে ফুঁসলিয়ে এ দেশে নিয়ে এসে আসানসোলের কুলটির লছিপুর যৌনপল্লিতে পাচার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল এক মহিলা দালালের বিরুদ্ধে । স্ত্রীকে ফিরে পেতে বাংলাদেশ থেকে আসানসোলে পৌঁছলেন ওই মহিলার স্বামী । স্বামীর অভিযোগের ভিত্তিতে যৌনপল্লি থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ওই মহিলাকে । গ্রেফতার করা হয়েছে মহিলা দালালকে । যদিও উদ্ধার হওয়া মহিলার কাছে এ দেশে আসার নির্দিষ্ট নথি না থাকায়, তাঁকে সংশোধনাগারে পাঠিয়েছেন আসানসোল আদালতের বিচারক । শ্রীঘরে মহিলা দালালও ।

জানা গিয়েছে, বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জে বাড়ি ছিল শবনম বেগমের (নাম পরিবর্তিত)। স্বামী মহম্মদ জাভেদ (নাম পরিবর্তিত) বিদেশে চাকরি করেন । গত 7 ডিসেম্বর ছুটিতে বাড়ি ফিরে আসেন জাভেদ । কিন্তু বাড়িতে এসে নিজের স্ত্রীকে খুঁজে পাননি । ফোনও বন্ধ পান ।

জাভেদ জানিয়েছেন, "এর পর বিভিন্ন সূত্রে আমি জানতে পারি বাংলাদেশের জনৈক মহিলা দালালের খপ্পরে পড়েছেন আমার স্ত্রী । তাঁকে কানাডা নিয়ে যাওয়ার নাম করে আসানসোলের নিয়ামতপুরে লছিপুর যৌনপল্লিতে পাচার করা হয়েছে ।"

সেই খবর জানতে পেরে মরিয়া হয়ে ওঠেন জাভেদ । স্ত্রীকে ফিরে পেতে বাংলাদেশ থেকে ভারত চলে আসেন । সোজা চলে যান আসানসোলে । কুলটির নিয়ামতপুরে লছিপুর যৌনপল্লিতে বিভিন্ন দালালের মারফত তিনি নিশ্চিত হন যে, তাঁর স্ত্রী শবনম লছিপুর যৌনপল্লিতেই আছেন । এরপরে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের স্পেশাল ব্রাঞ্চ থেকে শুরু করে কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি । পুলিশ ওই ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে লছিপুর যৌনপল্লি থেকে ওই বাংলাদেশি মহিলাকে উদ্ধার করে । পাশাপাশি অভিযুক্ত মহিলা দালালকেও গ্রেফতার করা হয় ।

গতকাল তাঁদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে যেহেতু বাংলাদেশের মহিলার কাছে এ দেশে আসার কোনও নথি ছিল না, সেই কারণে তাঁকে আসানসোল সংশোধনাগারে পাঠানো হয় । পাশাপাশি মহিলা দালালকেও শ্রীঘরে পাঠান বিচারক । বর্তমানে ওই মহিলার স্বামী পুলিশের দফতর ও আসানসোল সংশোধনাগার এলাকায় স্ত্রীর সমস্ত নথি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন । উদ্দেশ্য, স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া ।

মহিলার স্বামী জানিয়েছেন, "আমার ভরসা আছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এবং আইন ব্যবস্থার উপরে । আমি সমস্ত নথি দেখিয়ে আমার স্ত্রীকে পুনরায় বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে পারব খুব দ্রুত । যতদিন না পর্যন্ত আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পাচ্ছি, ততদিন আমি এই দেশে আইনে লড়াই লড়ব ।"

অন্যদিকে, আসানসোলের কুলটি থানার নিয়ামতপুর ফাঁড়ির পুলিশ জানিয়েছে, "বাংলাদেশি ওই ব্যক্তি এসে অভিযোগ করেছিলেন, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্ত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে । যদিও মহিলা উলটো কথা বলেছেন পুলিশকে । মহিলা জানিয়েছেন, তিনি তাঁর নিজের ইচ্ছেতেই এ দেশে এসেছেন এবং স্বামী তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করতেন বলেই তিনি আর স্বামীর সঙ্গে ফিরতে চান না ।"

আরও পড়ুন:

  1. চাকরি দেওয়ার নামে দুবাই-ওমানে নিয়ে গিয়ে অত্যাচার, শহরে ফিরেও আতঙ্কিত তরুণী
  2. বিয়ের ফাঁদে যৌনপল্লিতে বিক্রি কিশোরী, ধৃত নাবালক-সহ 3
  3. জোরহাটে নারীপাচার রুখে দিল পুলিশ, রাতের বাস থেকে উদ্ধার 7 কিশোরী
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.