ETV Bharat / state

Sand Smuggling: সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বালি উত্তোলন, ক্ষোভে ফুঁসছে আমজনতা

author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Sep 4, 2023, 3:31 PM IST

সরকারি নির্দেশিকাকে অমান্য করে বালি মাফিয়াদের রাজত্ব চলছে দুর্গাপুর মহকুমার বিভিন্ন ব্লকে ৷ এমনটাই অভিযোগ গ্রামবাসীদের ৷ এর জেরে রাস্তার বেহাল দশা ৷ ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন এলাকাবাসীরা ৷

Sand Smuggling
বেআইনিভাবে বালি উত্তোলন

সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বালি উত্তোলন

দুর্গাপুর, 4 সেপ্টেম্বর: দুর্গাপুর মহকুমার বিভিন্ন ব্লক জুড়ে সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছে বেআইনিভাবে বালি কারবারীদের শাসন ৷ রাতের অন্ধকারে পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর- ফরিদপুর,কাঁকসা ও অন্ডাল ব্লকে নদী তোলা হচ্ছে বালি । আর রাতের অন্ধকারেই সেই বালি ট্রলি বোঝাই করে পাচার করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় ৷ যার জেরে গ্রামের রাস্তার দশা হয়েছে বেহাল ৷ সেখান থেকে চলাফেরা করা দায় হয়ে পড়েছে গ্রামবাসীদের । অভিযোগ উঠছে, শাসকদলের প্রত্যক্ষ মদতেই চলছে বেআইনি বালিকারবারের রমরমা ।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর থেকে বেআইনি বালি কারবার বন্ধ করার জন্য বহু প্রচেষ্টা চালিয়েছেন । কখনও সেচ দফতরের হাতে তো কখনও আবার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের হাতে বালি কারবারের দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি ৷ তবে ওইটুকু প্রচেষ্টাই সার । কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর সমস্ত কড়া নির্দেশিকাকে অমান্য করে দুর্গাপুর মহকুমার বিভিন্ন ব্লক হয়ে উঠেছে বালি মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্য । তার মধ্যে একটি হল কাঁকসার বনকাটির সাতকাহানিয়া এলাকা ৷

অজয় নদ থেকে বালি উত্তোলন করে মজুত করে রাখা হচ্ছে এখানে । তারপর সেই বালি ওভারলোড ট্রাক্টরের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে । অহরহ ওভারলোড ট্রাক্টরের এবং ট্রাকের যাতায়াতের ফলে বেহাল এলাকার রাস্তা । মানুষকে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে দিবারাত্রি । রবিবারও বালির ট্রাক্টর আটকে আন্দোলনে নেমেছিল স্থানীয় ডাঙালপাড়ার মহিলারা । স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত বন্ধ হোক অবৈধভাবে বালির কারবার । দ্রুত করা হোক রাস্তার সংস্কার ।

আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের আগে অস্বস্তিতে দল, বালি পাচারে নাম জড়ালো তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির

মাফিয়াদের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করেও বালি বোঝায় ট্রলিগুলিকে আটকে দেয় ডাঙ্গাল পাড়ার মহিলারা । বনকাটি ডাঙালপাড়ার বাসিন্দা বিনু সমাদ্দারের অভিযোগ, "এলাকার কিছু ছেলে দিনরাত নদী থেকে বালি তুলছে । ওরা ওদের পেটের খিদে বোঝে । কিন্তু দিনরাত রাস্তায় বালির সঙ্গে সঙ্গে জল পড়ছে । রাস্তার অবস্থা আপনারা নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছেন । ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দিচ্ছে । কিছু বলতে গেলেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে আমাদেরকে । প্রশাসন সব জেনেও চুপ করে আছে ।"

স্থানীয় বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য পাপিয়া দাসের কথায়, "সরকারি নিয়মকে অমান্য করে অবাধে চলছে বেআইনির বালির কারবার । সবার চোখের সামনে বেআইনি বালির কারবার চললেও সকলে চুপ । আমরা অসহায়ের মতো কেবল তা দেখছি । " তবে কড়া ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন বনকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং কাঁকসা ব্লক প্রশাসন । কাঁকসার বনকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তাবাসুম খাতুন বলেন, "রাস্তা খারাপের অন্যতম কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত বৃষ্টি । বেআইনি বালি কারবারের কথা এখনও আমি শুনিনি । আমার কাছে অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেব । ধারাবাহিকভাবে নজরদারি চালাব ।"

অন্যদিকে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের বক্তব্য, কোথায় কোথায় বেআইনি বালি কারবার চলছে তা তাঁকে জানানো হোক ৷ তাহলে তিনি এক ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন ৷ এমনটাই আশ্বাস দিয়েছেন । তিনি বলেন, "আমাদের সরকার কোন বেআইনি কাজে মদত দেবে না । আমি বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট দফতরে কথা বলব ।"

আরও পড়ুন: কুয়ো নদীতে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন, প্রশাসনের দিকে অভিযোগের তির বিজেপির

জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত নদী থেকে বালি তোলা যাবে না বলে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে । কিন্তু তারপরেও নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে অবাধে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম চলছে দুর্গাপুর জুড়ে বলে অভিযোগ ।

সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে বালি উত্তোলন

দুর্গাপুর, 4 সেপ্টেম্বর: দুর্গাপুর মহকুমার বিভিন্ন ব্লক জুড়ে সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলছে বেআইনিভাবে বালি কারবারীদের শাসন ৷ রাতের অন্ধকারে পাণ্ডবেশ্বর, দুর্গাপুর- ফরিদপুর,কাঁকসা ও অন্ডাল ব্লকে নদী তোলা হচ্ছে বালি । আর রাতের অন্ধকারেই সেই বালি ট্রলি বোঝাই করে পাচার করা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায় ৷ যার জেরে গ্রামের রাস্তার দশা হয়েছে বেহাল ৷ সেখান থেকে চলাফেরা করা দায় হয়ে পড়েছে গ্রামবাসীদের । অভিযোগ উঠছে, শাসকদলের প্রত্যক্ষ মদতেই চলছে বেআইনি বালিকারবারের রমরমা ।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর থেকে বেআইনি বালি কারবার বন্ধ করার জন্য বহু প্রচেষ্টা চালিয়েছেন । কখনও সেচ দফতরের হাতে তো কখনও আবার ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের হাতে বালি কারবারের দায়িত্ব দিয়েছেন তিনি ৷ তবে ওইটুকু প্রচেষ্টাই সার । কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর সমস্ত কড়া নির্দেশিকাকে অমান্য করে দুর্গাপুর মহকুমার বিভিন্ন ব্লক হয়ে উঠেছে বালি মাফিয়াদের স্বর্গরাজ্য । তার মধ্যে একটি হল কাঁকসার বনকাটির সাতকাহানিয়া এলাকা ৷

অজয় নদ থেকে বালি উত্তোলন করে মজুত করে রাখা হচ্ছে এখানে । তারপর সেই বালি ওভারলোড ট্রাক্টরের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে । অহরহ ওভারলোড ট্রাক্টরের এবং ট্রাকের যাতায়াতের ফলে বেহাল এলাকার রাস্তা । মানুষকে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হচ্ছে দিবারাত্রি । রবিবারও বালির ট্রাক্টর আটকে আন্দোলনে নেমেছিল স্থানীয় ডাঙালপাড়ার মহিলারা । স্থানীয়দের দাবি, দ্রুত বন্ধ হোক অবৈধভাবে বালির কারবার । দ্রুত করা হোক রাস্তার সংস্কার ।

আরও পড়ুন: পঞ্চায়েত ভোটের আগে অস্বস্তিতে দল, বালি পাচারে নাম জড়ালো তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির

মাফিয়াদের রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করেও বালি বোঝায় ট্রলিগুলিকে আটকে দেয় ডাঙ্গাল পাড়ার মহিলারা । বনকাটি ডাঙালপাড়ার বাসিন্দা বিনু সমাদ্দারের অভিযোগ, "এলাকার কিছু ছেলে দিনরাত নদী থেকে বালি তুলছে । ওরা ওদের পেটের খিদে বোঝে । কিন্তু দিনরাত রাস্তায় বালির সঙ্গে সঙ্গে জল পড়ছে । রাস্তার অবস্থা আপনারা নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছেন । ঘরবাড়িতে ফাটল দেখা দিচ্ছে । কিছু বলতে গেলেই হুমকি দেওয়া হচ্ছে আমাদেরকে । প্রশাসন সব জেনেও চুপ করে আছে ।"

স্থানীয় বিজেপির পঞ্চায়েত সদস্য পাপিয়া দাসের কথায়, "সরকারি নিয়মকে অমান্য করে অবাধে চলছে বেআইনির বালির কারবার । সবার চোখের সামনে বেআইনি বালির কারবার চললেও সকলে চুপ । আমরা অসহায়ের মতো কেবল তা দেখছি । " তবে কড়া ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন বনকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান এবং কাঁকসা ব্লক প্রশাসন । কাঁকসার বনকাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তাবাসুম খাতুন বলেন, "রাস্তা খারাপের অন্যতম কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত বৃষ্টি । বেআইনি বালি কারবারের কথা এখনও আমি শুনিনি । আমার কাছে অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেব । ধারাবাহিকভাবে নজরদারি চালাব ।"

অন্যদিকে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের বক্তব্য, কোথায় কোথায় বেআইনি বালি কারবার চলছে তা তাঁকে জানানো হোক ৷ তাহলে তিনি এক ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন ৷ এমনটাই আশ্বাস দিয়েছেন । তিনি বলেন, "আমাদের সরকার কোন বেআইনি কাজে মদত দেবে না । আমি বিষয়টি নিয়ে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট দফতরে কথা বলব ।"

আরও পড়ুন: কুয়ো নদীতে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন, প্রশাসনের দিকে অভিযোগের তির বিজেপির

জুন থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত নদী থেকে বালি তোলা যাবে না বলে সরকারি নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে । কিন্তু তারপরেও নিষেধাজ্ঞাকে উপেক্ষা করে অবাধে বালি মাফিয়াদের দৌরাত্ম চলছে দুর্গাপুর জুড়ে বলে অভিযোগ ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.