দুর্গাপুর, 26 জানুয়ারি: সরস্বতী পুজো মানেই বাঙালির ভ্যালেল্টাইস দিবস ৷ পাশপাশি এদিনই এদেশীয়দের মধ্যে পালিত হয় সিজানো উৎসব ৷ এটি মূলত মাছের পার্বণ (Asansol fish festival) । তাই অনেকে এই পার্বণ-কে বাঙালির মাছ, ভাত উৎসবও বলে থাকেন । সরস্বতী পুজোর দিন ভাত, সবজির পাশাপাশি মাছের একাধিক পদ রান্না হয় প্রতিটি বাঙালি পরিবারে । পুজোর পরের দিন তা খাওয়া হয় ৷ এই পর্বণে মাছের চাহিদা থাকে তুঙ্গে ।
এবছরও তার কোনও ব্যতিক্রম হয়নি । বৃহস্পতিবার ভোর রাত থেকেই খনি অঞ্চল থেকে শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন মাছের আড়তে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো । স্থানীয়দের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট এলাকার বিভিন্ন মাছ চাষী এদিন ভোররাতে মাছ বিক্রি করতে এসেছিলেন বিভিন্ন আড়তে । মাছ ব্যবসায়ী গোপীনাথ ধীবর জানান, অন্যান্য বছরে তুলনায় এবার মাছের যোগান বেশি রয়েছে । চাহিদার তুলনায় যোগান বেশি থাকায় দাম রয়েছে স্বাভাবিক । বড় ওজনের দেশী কাতলা, রুই, মিড়িক মাছ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি 250 থেকে 350 টাকায় । ছোট চারা পোনা মাছও কেজি প্রতি 200 টাকায় বিকোচ্ছে । আগের বছরের থেকে কিলো প্রতি 50 থেকে 100 টাকা দর কম।
তাছাড়া সরস্বতী পূজোর সময় বিয়ের অনুষ্ঠান রয়েছে । সেই কারণে ও মাছের চাহিদা অন্যান্য বছরের তুলনায় একটু কম রয়েছে বলে জানান তাঁরা জানিয়েছন। মূলত এই দিনটিতে গ্রাম বাংলার বিভিন্ন পরিবার রুই কাতলা মাছের বিভিন্ন পদ রান্না করে । রুই কাতলা মাছের চাহিদা সেই কারণে অন্যান্য বছর অনেক বেশি থাকলেও এবছর অনেকটাই কম । বাজারে মাছের যোগান এবার অনেকটাই বেশি, বলে জানিয়েছেন মৎস্য ব্যবসায়ীরা । সেই কথা উল্লেখ করেই মৎস্য ব্যবসায়ীরা রাজু দাস বলেন, "অন্যান্য বছর এই দিনটিতে আমরা যা মাছ নিয়ে আসি তা বেলা এগারটার মধ্যে বিক্রি হয়ে যায় । এবারেও আমি তিন কুইন্টালের মতো মাছ নিয়ে এসেছি । কিন্তু মাছের প্রচুর যোগান থাকার কারণে পুরোটা বিক্রি করতে পারিনি ?"
আরও পড়ুন: শতবর্ষের পথে রাজ্যের প্রাচীনতম সরস্বতী মন্দির, জানুন বাগদেবী আরাধনার রীতি
আজ দিনটি মাছের উৎসব বলে গ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন পুকুরের মৎস্য চাষীরা এই দিনটির জন্য অপেক্ষা করে থাকেন। কারণ এই দিনে ভালো বাজার থাকবে এবং মৎস্য চাষীরা একটা ভালো টাকা রোজগার করবেন এমন আশাতেই থাকেন । গত কয়েকবছর কোভিডের কারণে মাছের বাজার মন্দা ছিল । তাই চাষীদের আশা ছিল এবার অন্ততপক্ষে লাভের মুখ দেখবেন । কিন্তু এবার মাছের যোগান এতটাই বেশি সেই কারণেই সব মৎস্যচাষীরা খুব একটা লাভের মুখ দেখতে পাবেন না বলেই তাঁরা মনে করছেন ৷