আসানসোল, 11 অগস্ট : করোনার ফলে লকডাউনে পরিযায়ী শ্রমিকরা বিভিন্ন রাজ্যে ফিরে গিয়েছেন । যার ফলে স্থানীয় কর্মহীন যুবকদের চাকরি হয়েছে । শুধু তাই নয়, প্রশিক্ষণের অভাবে যে সমস্ত কাজে স্থানীয় শ্রমিকরা সুযোগ পেতেন না, তাদের প্রশিক্ষিত করে এখন সেই কাজে তাদের নিয়োগ করা হচ্ছে আসানসোলের বিভিন্ন কলকারখানায় । ফলে করোনা কার্যত আশীর্বাদ হয়েছে স্থানীয় কর্মহীন মানুষদের কাছে ।
গত বছর মার্চ মাসে লকডাউনের পর থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা বাড়ি ফিরতে শুরু করেছিল । একদিকে করোনা, লকডাউন, অন্যদিকে স্কিলড শ্রমিকেরা ফিরে গিয়েছেন । ফলে উৎপাদনে ব্যাপকভাবে প্রভাব পড়েছিল আসানসোলের শিল্পতালুকে । সূত্রে জানা গিয়েছে, বিভিন্ন লৌহ-ইস্পাত কারখানাগুলোতে কাজ করার জন্য মূলত অন্য রাজ্যের প্রশিক্ষিত শ্রমিকরাই আসতেন । তাঁরা চলে যাওয়াতে হঠাৎ উৎপাদন কমে যায় । আর এখান থেকে শুরু নতুন ভাবনার । স্থানীয় শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এবার তাদের স্কিলড শ্রমিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয় ।
আর তাই করোনার দ্বিতীয় ওয়েভে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি শিল্পে । স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর অনেক বেশি সুবিধা বলে জানিয়েছেন শিল্পপতিরা । আসানসোলের বিশিষ্ট শিল্পপতি সুভাষ আগরওয়াল জানিয়েছেন, "স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করালে তাঁদের রাখতে হয় না । তাঁরা বাড়ি চলে যান । বাইরের শ্রমিক নিয়ে এলে তাঁদের রাখতে হয়, খেতে দিতে হয়, অনেক খরচ । সবাই তাই স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করাতে চায় । আমার কারখানায় এখন বেশিরভাগই স্থানীয় যুবক ।"
আরও পড়ুন : Jitendra Tiwari : অসুস্থ বিজেপি নেত্রীকে দেখতে গিয়ে তৃণমূলের বিক্ষোভের মুখে জিতেন্দ্র
সুভাষের দাবি, করোনাকালে তাঁরা স্থানীয় শ্রমিকদেরও বাড়ি ফিরে যেতে দেননি । তিনি বলেন, "এর ফলে আমাদের কারখানায় একটিও সংক্রমণের ঘটনা ঘটেনি । তৃতীয় ওয়েভ, তাই আমাদের কাছে কোনও বিষয় নয় । আমরা ঠিক পার করে নেব ।"
একদিকে যেমন পরিযায়ী শ্রমিকরা চলে গিয়েছেন, তেমনি অন্য রাজ্য থেকে শ্রমিকরা এ রাজ্যে ফিরে এসেছেন । তাঁদেরও কর্মসংস্থান হয়েছে স্থানীয় শিল্প-কলকারখানায় । জামুরিয়া চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সম্পাদক অজয় খৈতান বলেন, "সরকার আমাদের কাছে অনুরোধ করেছিল, তাই বহু কলকারখানায় ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের আমরা কাজ দিয়েছি । 90 শতাংশ পরিযায়ী শ্রমিক কাজ পেয়ে গিয়েছেন ৷ স্থানীয় শ্রমিকরা কাজ করছেন এটা একটা যেমন পজিটিভ দিক, তেমনি সরকারের ইতিবাচক ভূমিকাতেও আমরা খুশি ।" জামুরিয়া অঞ্চলে প্রায় প্রত্যেকটি কলকারখানাতে কোভিড সুরক্ষা বিধি মেনে কাজ হচ্ছে । ফলে সংক্রমণ একেবারেই তলানিতে । তৃতীয় ঢেউয়ে তেমন কোনও প্রভাব পড়বে না শিল্প-কলকারখানায় ।