আসানসোল, 22 মার্চ: একদিকে জিতেন্দ্র তেওয়ারির গ্রেফতারি । বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ রাজনৈতিক চক্রান্ত করেই গ্রেফতার করা হয়েছে জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে । অন্যদিকে জিতেন্দ্র তেওয়ারির গ্রেফতারির 72 ঘণ্টার মধ্যেই রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটককে কাকতালীয় ভাবে নোটিশ পাঠিয়েছে ইডি (ED Summon for Moloy Ghatak) । শাসক দলের নেতৃত্বের অভিযোগ, প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপি । কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করা হচ্ছে ।
গত 18 মার্চ দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয় বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে । কম্বল কাণ্ডে পদপিষ্ট হয়ে তিনজনের মৃত্যুর ঘটনায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে । 20 মার্চ সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের শুনানি ছিল । তার আগেই দিল্লি থেকে জিতেন্দ্রকে গ্রেফতার করে এ রাজ্যে নিয়ে আসার পদ্ধতি নিয়ে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতারা ।
বিজেপির (BJP) আসানসোল জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এই রাজ্যে যখন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপস্থিতিতে পানিহাটিতে দইচিড়ের অনুষ্ঠানে পদপিষ্ট হয়ে সাতজন লোকের মৃত্যু হয়, তখন পুলিশ-প্রশাসন চুপ করে বসে থাকে । একই ঘটনা যখন আসানসোলে ঘটে তখন দেখা যায়, জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে । অথচ জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের কিছু হয় না । এটাই প্রতিহিংসা ।"
পালটা দাবি করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসও (Trinamool Congress) । তাদের দাবি, সাতমাস আগে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটককে ইডি তলব করেছিল । সিবিআই তাঁর বাড়িতে এসে তল্লাশি চালিয়ে কিছু পায়নি । যেই আইনের পথে গিয়ে জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে গ্রেফতার করা হল, তখনই 72 ঘণ্টা পেরোতে না পেরোতেই ইডি নোটিশ পাঠাল মলয় ঘটককে । এটা প্রতিহিংসা বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের ।
আসানসোল পৌরনিগমের (Asansol Municipal Corporation) মেয়র পারিষদ তথা মলয় ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "শুনছি আমাদের মন্ত্রীকে ইডি ডেকেছে । কিছু কাউন্সিলরেরও নাম আছে শুনছি। আমাদের মতো কাউন্সিলরদের যদি ডাকে, তবে আমরা দিল্লি যাওয়ার ভাড়া চাইব । কারণ, আমরা বাবার তৈরি করা বাড়িতে থাকি, মেঝেতে শুই । জীবনে কোনোদিন দুর্নীতির সঙ্গে ছিলাম না, থাকব না ।"
জিতেন্দ্র তেওয়ারির গ্রেফতারি প্রসঙ্গে গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "আইন আইনের পথে চলবে । ওঁকে যখন নোটিশ পাঠানো হল, উনি আত্মসমর্পণ করতে পারতেন । ওঁর সঙ্গীরা যারা গ্রেফতার হয়েছিল, তারা জামিনে ছাড়াও পেয়ে গিয়েছেন ।"
প্রতিহিংসার রাজনীতি প্রসঙ্গে গুরুদাসের বক্তব্য, "প্রতিহিংসা আমরা করি না, ওরা করে । এর আগেও মন্ত্রীর বাড়িতে সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে । মন্ত্রীর স্ত্রীর সঙ্গেও তাঁরা ভালো ব্যবহার করেছিলেন । মন্ত্রীর বাড়ি দেখেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির আধিকারিকদের বিস্ময় প্রকাশ করেছিলেন । শুধু তাই নয় তাঁরা ক্লিনচিট দিয়ে গিয়েছিলেন ।"
জিতেন্দ্র তেওয়ারির গ্রেফতারের পরেই মলয় ঘটককে ইডি নোটিশ নিয়ে প্রতিহিংসার রাজনীতি প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য কমিটির নেতা কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, "ওঁকে তো বহুবার নোটিশ পাঠানো হয়েছে । বারবার উনি ইডির হাজিরা এড়িয়েছেন । এই রাজ্য সরকার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত দুর্নীতিতে নিমজ্জিত । জিতেন্দ্র তেওয়ারির সঙ্গে এই ঘটনাকে মেলানো শুধু লোক হাসানো । ইডি অনেক আগে থেকেই ওঁকে ডেকে পাঠাচ্ছে । জিতেন্দ্র তেওয়ারির গ্রেফতারির ঘটনা তো হালের ঘটনা ।"
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্টের রায়কে হাতিয়ার করে ফের জামিনের আবেদন জিতেন্দ্রর