আসানসোল, 26 ফেব্রুয়ারি : 2008 সালে অলিম্পিকে শুটিংয়ের ব্যক্তিগত ইভেন্টে দেশের জন্য সোনা জিতেছিলেন অভিনব বিন্দ্রা । কাকতালীয়ভাবে সেই বছরই জন্ম । তাই বাবা-মা নাম রেখেছিলেন অভিনব । কিন্তু কে জানত বিন্দ্রার মতো শুটিংকে নিজের চলার পথের দিশারী বানাবে আসানসোলের অভিনব ৷ কিশোর বয়সেই শুটিংয়ে সারা দেশের নজর কেড়েছে অভিনব সাউ। দশ বছর বয়স থেকেই ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে সোনা জিতে সব চেয়ে কমবয়সী শুটার হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিত লাভ করেছে অভিনব। আগামী দিনে তার লক্ষ্য জাতীয় দলের হয়ে অলিম্পিকে সোনা জেতা ।
আসানসোলের এডিডিএ কলোনির বাসিন্দা অভিনব সাউ । বয়স মাত্র 12 বছর । একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র । অভিনবের বাবা রূপেশ সাউ পেশায় গৃহশিক্ষক । কিন্ত তাঁর নেশা ছিল শুটার হওয়া । অভিনব বিন্দ্রা ছিলেন স্বপ্নের নায়ক । কাকতালীয়ভাবে যে বছর অভিনব বিন্দ্রা অলিম্পিকে সোনা জেতেন সেই বছরেই রূপেশবাবুর প্রথম সন্তান হয় । আর নিজের স্বপ্নের নায়কের নামেই সন্তানের নাম অভিনব রাখেন ।
মনে মনে চেয়েছিলেন ছেলে শুটার হয়ে উঠুক । সেইমতো আসানসোল রাইফেল ক্লাবে ছেলেকে ভর্তি করেন । 2018 সালে মাত্র দশ বছর বয়সেই ন্যাশনাল মিটে সোনা জিতে চমকে দেয় অভিনব । দেশের কনিষ্ঠ সোনাজয়ী শুটার হিসেবে পরিচয় ছড়িয়ে পড়ে তার । এরপর 2019-এ খেলো ইন্ডিয়াতে ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়ন ও স্কলারশিপ অর্জন করে অভিনব । মুম্বইয়ে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করে আসানসোলের অভিনব ।
2020 সালে কোভিডের কারণে কোনও ন্যাশনাল মিট হয়নি । সম্প্রতি রাজ্যের স্টেট মিট আসানসোলে হয় । সেখানেও অভিনব চারটি সোনার মেডেল জিতেছে । স্কোর করেছে 400 এর মধ্যে 399 । দুরন্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে অভিনব । ছোটো অভিনবের স্বপ্ন দেশের হয়ে অলিম্পিকে সোনা জেতা ৷ আর সেই লক্ষ্যে প্রতিদিন চলছে অনুশীলন ।
আরও পড়ুন : টুম্পার আবেদনের পর ব্রিগেড চলো-র মুষ্টিবদ্ধ আহ্বান বামেদের
অভিনবের মা প্রিয়াঙ্কা সাউ ছেলের স্বপ্নকে সত্যি করতে বছরের বেশিরভাগ সময় বাড়ি ছেড়ে মুম্বইয়ে থাকেন ৷ বাবা রূপেশ সাউ বলেন, ‘‘ব্যয় বহুল এই ক্রীড়া । অনুশীলনের জন্য যে বন্দুক কেন হয়, তার দামই সাড়ে 4 থেকে 5 লাখ টাকা। খেলো ইন্ডিয়ার স্কলারশিপ পেয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছে অভিনব । কিন্তু ডায়েট, অনান্য সামগ্রীর আরও নানা খরচ আছে । তবে এখনও রাজ্য সরকারের তরফে কোনও সহায়তা মেলেনি।" তবে রূপেশবাবু আশাবাদী আগামী দিনে রাজ্যও অভিনবের পাশে থাকবে ৷