নদিয়া, 15 মে: রাজ্য সরকার বিভিন্ন জায়গায় মা ক্যান্টিন চালু করলেও সরকারি হাসপাতালে রোগীদের কপালে জুটছে না ভাত ৷ হাসপাতালেও ভাত চুরির অভিযোগ রোগীদের । চাকরি চুরি, কয়লা চুরি ,বালি চুরি, পাথর চুরির পর এবার নতুন সংযোজন রোগীর ভাত চুরি । ঘটনা অবাস্তব মনে হলেও বাস্তবে একেবারে সত্যি ঘটনা বলেই দাবি করছেন রোগীর আত্মীয়রা । ঘটনাস্থল নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের গ্রামীণ হাসপাতাল । দীর্ঘ 14 দিন ধরে রোগীরা ভাত পাচ্ছেন না ।
শুধু ভাত নয় জল খাবারটাও চুরি হয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন স্বয়ং রোগীর পরিবার । বেশ কিছুদিন যাবৎ কারেন্ট চলে গেলে অন্ধকারে থাকে কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতাল ৷ এইসব নিয়েই নিজেদের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন রোগীর পরিবার । তাঁদের অভিযোগ, দু'দিনের মধ্যে একটা ডাক্তারও দেখতে যাননি রোগীকে । জ্বর কমে গেলেও ছুটি দেওয়ার কথা বললেও চিকিৎসক জানান ছুটি হবে না । এই অবস্থায় হাসপাতাল থেকে চলে যাওয়ার কথা বললে চিকিৎসক জানান, হাসপাতাল থেকে যেতে গেলে লিখিত দিয়ে যেতে হবে যে স্ব-ইচ্ছায় চলে যাচ্ছে । পাশাপাশি হাসপাতালের কোনও কাগজ দেওয়া হবে না । এরপর রোগী যখন বলেন, কাগজ না দিলে সইও করব না । তখন হাসপাতাল থেকে চলে গেলে থানায় অভিযোগ জানানো হবে রোগীর নামে, এমনটাও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ৷
এই ঘটনার কথা জানতে বারবার ফোন করা হয় কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ সাথি কুন্ডুকে । তিনি ফোন তোলেননি । মাজদিয়ার আদিত্যপুরের এক রোগীর পরিবারের অভিযোগ শিশুর চিকিৎসার জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসককে চিকিৎসার জন্য বলা হলে শিশুর পরিবারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন । বিএমওএইচকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে । তবে আজ পর্যন্ত কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি ।
এই ব্যাপারে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার বিধায়ক আশিস কুমার বিশ্বাস বলেন,"এখানকার রোগীরা খাবার পাচ্ছে না আর হাঁসখালির বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালে খাবার দেওয়া হচ্ছে নিয়ম মেনে । ওই হাসপাতালে চিকিৎসা পরিকাঠামো অনেক ভালো ।" কৃষ্ণগঞ্জের বিডিও কামালউদ্দিন আহমেদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, এ ব্যাপারে তিনি কিছু বলবেন না ।
এমনিতেই হাসপাতালে গেলে দেখা যায় কুকুর-বিড়ালে কামড়ালে ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্চ কিনে এনে দিতে হয় বাইরে থেকে রোগীর পরিবারকে । এবার হাসপাতালে অসুস্থ রোগীরা খাবার থেকে বঞ্চিত । এ ব্যাপারে কৃষ্ণগঞ্জ তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অশোক হালদার জানান, তিনি নাকি এই ঘটনা জানতেন না । আজ দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলবেন এই বিষয়ে । কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালের রোগীদের যেভাবে খাবার বন্ধ করে রাখা হয়েছে তার তিনি নিন্দা করেন ৷ এর আসল কারণ কী সেটা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে বলেও জানান ।
আরও পড়ুন : 3 দিন ধরে হাসপাতালে নেই অ্যানাস্থেটিস্ট ! সমস্যায় প্রসূতিরা