শান্তিপুর, 16 এপ্রিল: কোরোনা ভাইরাস সম্পর্কে মানুষকে আরও সচেতন করার প্রয়োজন । মূলত সেই লক্ষ্য নিয়েই নিজের শরীরে সচেতনতার বাণী সম্বলিত পিচবোর্ডের কাঠামো চাপিয়ে বিভিন্ন বাজার এবং গ্রামের রাস্তায় ঘুরতে দেখা গেল এক ব্যক্তিকে । শান্তিপুরের ফুলিয়া এলাকায় একাই উদ্যোগ নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে বেরিয়ে পড়েছেন তিনি ।
কোরোনা সংক্রমণ যাতে না ছড়িয়ে পড়ে তাই 21 দিন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল । পরে সেই মেয়াদ বাড়ানো হয় । সরকারের তরফে বারবার মানুষকে সচেতনতা মেনে চলতে বলা হচ্ছে । ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে । জমায়েত না করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । কিন্তু অনেক জায়গাতেই দেখা যাচ্ছে প্রশাসনের সেই নির্দেশিকা মানছেন না অনেকে । এমনকী ন্যূনতম সচেতনাটুকুও নিতে দেখা যাচ্ছে না অনেককে । এই পরিস্থিতিতে মানুষকে সচেতনতার পাঠ দিতে কাউকে কাউকে উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে আগেই । কিছুদিন আগেই জলপাইগুড়িতে এক যুবককে কোরোনা সংক্রমণ রোধে বাড়ি বাড়ি গিয়ে জীবাণুনাশক স্প্রে করতে দেখা যায় । নিজের উদ্যোগেই তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছিলেন । এছাড়াও মানুষকে সচেতনতার পাঠ দিতে অনেকেই এগিয়ে আসছেন নিজের থেকে । এবার এগিয়ে এলেন শান্তিপুরের ফুলিয়ার বাসিন্দা অরবিন্দ প্রামাণিক ।
কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না কোরোনা সংক্রমণ । দিনে দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েই চলেছে সংক্রণের হার। ব্যতিক্রম নয় রাজ্যও । কিছু কিছু ক্ষেত্রে লকডাউন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ কি মানুষ যথাযথভাবে মানছেন এই লকডাউন? বিভিন্ন হাট এবং বাজারের চিত্রটা দেখলে এই প্রশ্নই উঠছে । সকাল থেকেই অধিকাংশ বাজারে দেখা যাচ্ছে প্রচুর মানুষের ভিড় । মানা হচ্ছে না নিয়ম। মূলত সেই চিত্র দেখেই মানুষকে আরও সচেতন করার ভাবনা মাথার আসে অরবিন্দ প্রামাণিকের । সেই ভাবনা থেকেই বাঁশ এবং পিচবোর্ড দিয়ে একটি বাক্স তৈরি করেন । তার উপর বিভিন্ন সচেতনতামূলক বাণী লেখা রয়েছে । তারপর সেই বাক্স নিজের শরীরে চাপিয়ে ও মাথার মধ্যে একটি হাঁড়ি লাগিয়ে বিভিন্ন রাস্তায় এবং বাজারে বেরিয়ে পড়েন । মানুষকে ঈশারা করে বোঝাচ্ছেন, যাতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বাজার করা হয় ।
প্রায় 15 বছর ধরে পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য ছিলেন অরবিন্দবাবু । পাঁচ বছর গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন । তাঁর ভাবনা, কোরোনা থেকে রক্ষা পেতে গেলে একমাত্র উপায় মানুষকে সচেতন হতে হবে । বলেন, "আমি গত দুই তিনদিন রাস্তায় বের হয়েছি । যেখানেই ভিড় দেখছি সেখানে গিয়ে মানুষকে দূরে থাকার কথা বলছি । পুলিশ প্রশাসনও আমার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে । আমাকে যথেষ্ট সাহায্য করছে । এই উদ্যোগ মানুষের মধ্যে সাড়া ফেলবে বলে আশা ।"