কলকাতা, 16 জুন: নদিয়ায় এক জমি অধিগ্রহণের ঘটনায় সিবিআই অনুসন্ধানের নির্দেশ দিল হাইকোর্ট । শুক্রবার এই নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বিবেক চৌধুরী । জমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে নদিয়া জেলা পরিষদের সরকারি আধিকারিকরা আর্থিক দুর্নীতি করে থাকতে পারে । এমনকি সেই টাকা বিদেশে পাচারও হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিচারপতি চৌধুরী । বিচারপতির মন্তব্য, এটায় বড় ধরনের দুর্নীতি হতে পারে । সিবিআই প্রাথমিক অনুসন্ধান করবে । প্রয়োজনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফআইআরও করতে পারবে ।
2016 সালে রাজ্যের একটি আইন মারফত সিদ্ধান্ত হয় সরকারি দফতরের জন্য জমি নিলে স্ট্যাম্প ডিউটি এবং রেজিস্ট্রেশন ফি লাগবে না বা সরাসরি জমি কেনার ক্ষেত্রে কিছুটা ছাড় দিয়েছিল রাজ্য সরকার । মামলাকারী ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষের (80 ডেসিমেল) প্রায় আড়াই বিঘে জমি অধিগ্রহণ করে রাজ্য সরকারের জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর । 2009 সালে জল সরবরাহের জন্য নদিয়ার ওই জমি চিহ্নিত করে জমি অধিগ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় । জমি অধিগ্রহণ করা হলেও কোনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি ।
অভিযোগের পর জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ওই জমির দাম ঠিক করে দেওয়া হয় 36 লক্ষ 47 হাজার 631 টাকা । জেলা পরিষদ জানায় 2023 সালের এপ্রিলে বর্তমান মূল্য অনুযায়ী ওই দাম ধার্য করা হয়েছে । এরপরই হাইকোর্টে মামলা করেন ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষ । মূল অভিযোগ জমির দামের সঠিক মূল্যায়ন করেনি নদিয়া জেলা পরিষদ ।
মামলাকারীর আইনজীবী তুলসীদাস রায় বলেন, "ওই জমির এক মাইল দূরে অন্য একটা প্রায় অর্ধেক কৃষি জমির মূল্য 5 কোটির উপরে ধার্য করেছে সরকার । প্রতি শতকে 15 লক্ষ টাকা বেশি ধার্য করা হয়েছে । অথচ ধীরেন্দ্রনাথবাবুর জমি বাণিজ্যিক জমি । সেক্ষেত্রে জমির দাম এত কম কেন ?"
এরপরেই বিচারপতি বিবেক চৌধুরী রায় উল্লেখ করেন এটি বিভ্রান্তিকর সিদ্ধান্ত । অথবা কোনও দুর্নীতির অঙ্গ । কোনওভাবেই ব্যাবসায়িক জমির দাম কম হতে পারে না । নদিয়া জেলা পরিষদের অসৎ উদ্দেশ্য থাকতে পারে । টাকা বিদেশে পাচার করা হতে পারে । সিবিআই অনুসন্ধান করে দেখবে । প্রয়োজনে অভিযুক্ত নদিয়া জেলা পরিষদের কর্মীদের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । একইসঙ্গে ধীরেন্দ্রনাথ ঘোষকে 60 দিনের মধ্যে সুদ-সহ প্রয়োজনীয় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট ।
আরও পড়ুন : নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে কৃষ্ণনগর ও শান্তিপুর পৌরসভায় সিবিআই হানা