তাহেরপুর, 16 সেপ্টেম্বর : পশ্চিমবঙ্গে NRC করা হবে ৷ BJP-র তরফে এই কথা বলার পর থেকেই বারবার তাদের আক্রমণ করেছেন CPI(M) নেতা মহম্মদ সেলিম ৷ আজ ফের BJP-র বিরুদ্ধে সুর চড়ান তিনি ৷ বলেন, "এদেশের কোনও মানুষকে কাঁটাতারের ওপারে পাঠাবে কারও বাপের সাধ্যি নেই ৷" পাশাপাশি মমতার দিল্লি যাওয়া নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, "নিজের চুরি যাতে ধরা না পড়ে, নিজের ও ভাইপোর নামে যাতে FIR না হয়, তাই NRC দেখিয়ে দিল্লি যাচ্ছেন ৷"
শনিবার (7 সেপ্টেম্বর) নদিয়ার তাহেরপুরে বাইক থামিয়ে CPI(M) নেতা বাবুলাল বিশ্বাসকে খুন করে কয়েকজন দুষ্কৃতী ৷ আজ সেই বাবুলাল বিশ্বাসের স্মরণসভার আয়োজন করা হয় CPI(M)-এর তরফে ৷ সেখানে মৃত নেতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন CPI(M) নেতা মহম্মদ সেলিম ৷ তিনি বলেন, "বাবুলালকে যে পরিকল্পনা ও ছক করে হত্যা করা হয়েছে তা গ্রামের মানুষ ও পরিবার বলছে ৷ আমাদের রাজ্যে যে অপশাসন চলছে তাতে এখানে খুনিদেরই রাজত্ব ৷ একদিকে ভয় ও সন্ত্রাসের বাতাবরণ ৷ অন্যদিকে যে মানুষের কথা বলবে ও তাদের দাবি তুলবে তাকে এভাবে হত্যা করে অপসারণের চেষ্টা চলছে ৷ বাবুলালকে তো ব্যক্তিগত কারণে হত্যা করা হয়নি ৷ ও যে আন্দোলন করত, রাজনীতি করত, মানুষকে নিয়ে চলত তাই হত্যা করা হল ৷ আজ বাবুলালের বাবা, মা, ভাই সবার সঙ্গেই কথা হল ৷ তাঁরা, গ্রামবাসীরা সবাই চান অপরাধীদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক ৷ অপরাধীদের যাতে বাঁচানোর চেষ্টা না করা হয় তার জন্য প্রশাসনের উপর চাপ দিচ্ছি ৷ সব অপরাধী যেন ধরা পড়ে ৷"
আগামীকাল দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ বৈঠক করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও ৷ এপ্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে মমতাকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, "নিজের চুরি যাতে ধরা না পড়ে , নিজের ও ভাইপোর নামে যাতে FIR না হয়, তাই NRC দেখিয়ে দিল্লি যাচ্ছেন ৷ NRC-র দাবিতে যখন RSS বলেছিল, আমাদের দেশে 4 কোটি অনুপ্রবেশকারী ঢুকে পড়েছে, তখন আদবানির সঙ্গে পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গেও 2 কোটি আছে ৷ এদের বের করতে হবে ৷ এটা তামাসা তো নয় ৷ এখন চিল চিৎকার করছেন ৷"
NRC নিয়ে BJP-কে আক্রমণ করতে বাদ রাখেননি মহম্মদ সেলিম ৷ বলেন, "অসমে যখন 40 লাখ মানুষ NRC-র বাইরে ছিল তখন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, এরা উইপোকা ৷ এদের মারতে হবে ৷ পরে ফাইনাল লিস্টে দেখা যায়, 19 লাখের নাম নেই ৷ তাহলে বাকি 21 লাখের কাছে BJP -র ক্ষমা চাওয়া উচিত ছিল ৷ এখানে দাঁড়িয়ে দিলীপ ঘোষ বলছে, ওরা বিদেশি ৷ যার নিজের সার্টিফিকেটের ঠিক নেই, সে আমার বাবার সার্টিফিকেট চাইছে ৷ যে প্রধানমন্ত্রী নিজের স্কুলের, পড়াশোনার সার্টিফিকেট দিতে পারেনি সে অন্যের জমির সার্টিফিকেট চাইছে ৷ এ দেশের কোনও মানুষকে কাঁটাতারের ওপারে পাঠানোর কারও বাপের সাধ্যি নেই ৷ ওরা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করছে ৷ দেশে বেকারত্ব বেড়েছে ৷ অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ হয়েছে ৷ মানুষ যাতে কাজ না চায় তার জন্য মোদি-মমতা মিলে একটা ভয়ের বাতাবরণ তৈরি করেছে ৷"