শান্তিপুর, 23 এপ্রিল : তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর পেটে লাথি মেরে গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির এক সদস্যের বিরুদ্ধে । ঘটনাটি ঘটেছে নদিয়ার শান্তিপুর থানার গয়েশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের টেংরি ডাঙ্গা এলাকায় । অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার নাম আনোয়ার হোসেন মণ্ডল (allegation against TMC leader of attacking a pregnant lady and beaten up her) । নির্যাতিতার পরিবারের তরফে এবিষয়ে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে । থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর নিগৃহীতার পরিবারের সদস্যদের পঞ্চায়েত সমিতির ওই তৃণমূল সদস্য প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠছে ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আনোয়ার হোসেন মণ্ডল স্থানীয় একটি ইটভাটার মালিক । তৃণমূলের হয়ে তিনি পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নির্বাচিত হন (TMC Panchayat Samiti member)। গয়েশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মেদিয়ায় বাড়ি আনোয়ার হোসেন মণ্ডলের । সাত বছর আগে এই গ্রামে বিয়ে হয়ে এসেছেন টেংরি ডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মান্নান শেখের মেয়ে সুলেখা খাতুন । কর্মসূত্রে তাঁর স্বামী বাইরে থাকেন । সেই কারণে সুলেখা মাঝেমধ্যেই পাশের গ্রামে তাঁর বাপেরবাড়িতে যান । অভিযোগ, আত্মীয় না হয়েও আনোয়ার হোসেন মণ্ডল ওই গৃহবধূর উপর ফতেয়া জারি করেছেন, তিনি আর বাপের বাড়ি যেতে পারবেন না । কিন্তু অন্যায্য সেই নির্দেশ মানতে চাননি সুলেখা খাতুন নামে ওই মহিলা ।
আরও পড়ুন : কাঁকসায় নাবালিকাকে ধর্ষণের পরে হুমকির অভিযোগ, গ্রেফতার অভিযুক্ত
অভিযোগ, গত 17 এপ্রিল গভীর রাতে আনোয়ার হোসেন মণ্ডল লোকজন নিয়ে ওই গৃহবধূর বাপের বাড়িতে চড়াও হন । সুলেখা খাতুনের দাদা বাদশা শেখ বলেছেন, "আমরাও তৃণমূল কংগ্রেস করি । কিন্তু আনোয়ার হোসেন মণ্ডল তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর জন্য গত 17 এপ্রিল রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে চড়াও হয় । বাড়িতে আমার মা এবং বোন ছিল । তাদের উপর অত্যাচার করা হয় । আমার অন্তঃসত্ত্বা বোনের পেটে লাথি মারা হয় । তিনদিন হাসপাতালে ভর্তি থাকার পর তাঁর গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়ে যায় । সেই বিষয়ে আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলাম । শুক্রবার অভিযোগ দায়ের করার পর, ওইদিন রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ আনোয়ার হোসেন মণ্ডল তার দলবল নিয়ে বোমা, পিস্তল-সহ আমাদের বাড়িতে এসে ব্যাপক ভাঙচুর চালায় । গেট ভেঙে ভিতরে ঢুকে যায় । আমরা কোনওরকমে প্রাণে বেঁচে যাই । আমরা ফের আনোয়ারের নামে অভিযোগ দায়ের করছি।" পাশাপাশি দলীয় কর্মীদের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে আনোয়ারের বিরুদ্ধে ।
অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পেটে লাথি মেরে তাঁর গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার এই ঘটনাকে চরম পাশবিক বলে আখ্যা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত গয়েশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী আমিরুল ইসলাম মণ্ডল । তাঁর বক্তব্য, "এই ধরনের ঘটনা মানা যায় না । আবার সেই ঘটনার অভিযোগ দায়ের করার পর শুক্রবার রাতে তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে । এই পরিবারটি চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে । তবে আইনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে । আইন আইনের পথে চলবে ।" যদিও এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন মণ্ডলের সঙ্গে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি ।