শান্তিপুর, 26 জুলাই : এক ঘণ্টার ভাঙনে তলিয়ে গেল প্রায় বিঘা দশেক পাটের জমি । সর্বস্বান্ত চাষিরা । নদিয়ার শান্তিপুর থানা এলাকার ঘটনা ।
জানা গেছে, শান্তিপুর পৌরসভার 16 নম্বর ওয়ার্ডের চরসরাগর এলাকায় প্রায় 10 বিঘা চাষের জমি তলিয়ে গেছে । ওই এলাকার বাসিন্দা কাঞ্চন বিশ্বাস বলেন, “এই প্রথম নয় প্রতিবছর বর্ষা এলে গঙ্গায় ভাঙন শুরু হয় । প্রশাসন কিংবা প্রতিটি দলের প্রতিনিধিরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থান পরিদর্শন করে যায়, কিন্তু কোন কাজ করে না । একদিকে কোরোনার কারনে লকডাউন চলছে। কাজ হারিয়ে পেটে খিদে নিয়ে দিন কাটাচ্ছি । তার উপর এইভাবে গঙ্গা ভাঙলে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে কিভাবে বসবাস করব । আমরা পশু পাখির থেকেও খারাপ অবস্থায় রয়েছি । সরকারের কাছে আবেদন, স্থায়ীভাবে গঙ্গার ভাঙন রোধ করা হোক, না হলে আমাদের অন্য কোথাও থাকার জায়গা প্রশাসন করুক।”
স্থানীয় পাট চাষি আকুল বিশ্বাস বলেন, “এর আগে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে গঙ্গা ছিল। প্রতিবছর ভাঙতে ভাঙতে এখানে এসে ঠেকেছে। নেতা মন্ত্রী বিধায়ক কেউ এসে খোঁজ নেন না। আমার ফসল শুদ্ধ জমি সবাই তলিয়ে গেল। বসবাসের যেটুকু জায়গা সেটাও তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাহলে কি নিয়ে আমরা বসবাস করব।”
এ বিষয়ে এলাকার প্রাক্তন কাউন্সিলর বৃন্দাবন প্রামাণিক বলেন, “বাসিন্দারা যে দাবি তুলেছে তাতে আমি সহমত । কয়েক বছর আগে একটু কাজ হয়েছিল বটে কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে গঙ্গা ভাঙন রোধ করার জন্য কোন কাজ হয়নি । আমরা এর আগে একাধিকবার সেচ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি । চেষ্টা করছি আগামী দিনে যেন গঙ্গা ভাঙ্গন রোধ করার উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় ।”
প্রতিবছরই বর্ষার শুরুতেই গঙ্গায় ভাঙন বেড়ে যায় । শান্তিপুর থানা এলাকার হরিপুর গ্রাম পঞ্চায়েত, নৃশিংহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত, বেলঘড়িয়া 1 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এবং 2 নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অতিমাত্রায় ভাঙন হয় । শুধু চাষ জমি নয়, একের পর এক বাড়িঘর প্রতি বছর গঙ্গায় তলিয়ে যায় । প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থান পরিদর্শন করে আশ্বাস দিয়ে যান । অথচ কাজের কাজ কিছুই হয় না ।