মুর্শিদাবাদ, 17 এপ্রিল: সিবিআইয়ের দীর্ঘ তদন্ত ও তল্লাশি পর্ব যেন ছাপ রেখে গেল মুর্শিদাবাদের বুকে। দীর্ঘ 65 ঘণ্টা চলল সিবিআইয়ের কার্যকলাপ। শুক্রবার দুপুর সাড়ে 12টায় এসেছিল সিবিআইয়ের গাড়ি। রবিবার রাত আড়াইটা নাগাদ আরও 2টি গাড়ি আসে। সেখানে কলকাতা থেকে আসেন তিন জন আধিকারিক। সঙ্গে আসেন 20 জন সিআরপিএফ জাওয়ান। আবারও প্রায় 3 ঘণ্টা চলে আগতদের জিজ্ঞাসাবাদ পর্ব। শেষমেশ গ্রেফতার । নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় 3 হাজার 400 চাকরিপ্রার্থীর নথিপত্র ৷ তাই সমস্ত উত্তরের খোঁজে আজ ভোর 5.30 নাগাদ তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহাকে নিয়ে সিবিআই বেরিয়ে পড়ে নিজাম প্যালেসের দিকে ৷
জীবনকৃষ্ণকে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হবে দুর্গাপুরের সিবিআই ক্যাম্পে। সেই ক্যাম্পে তাঁর স্বাস্থ্যপরীক্ষা হবে। সেখান থেকে জীবনকৃষ্ণকে নিজাম প্যালেসে নিয়ে যাবেন সিবিআই আধিকারিকরা। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে তদন্তে অসহযোগিতা ও তথ্য প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা, মূলত এই দুই অভিযোগে প্রাথমিকভাবে বিধায়ককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে, সিবিআই সূত্রে খবর।
সিবিআই সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, তল্লাশি চলাকালীন তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে তাঁর সুপারিশে হওয়া চাকরিপ্রার্থীদের নথির পাশাপাশি এসএলএসটির পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার ডেটাবেস পাওয়া গিয়েছে। সব মিলিয়ে উদ্ধার হয়েছে প্রায় দুই বস্তা নথি। সিবিআইয়ের একটি সূত্র দাবি করছে, তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে প্রায় 3 হাজার 400 প্রার্থীর তথ্য উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে নাকি রয়েছে নবম এবং দশম শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের নাম এবং রোল নম্বর ৷ বাড়ির একটি ঘরকেই নিয়োগ দুর্নীতির আস্তানা বানিয়ে রেখেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। দু'টো ফেলে দেওয়া ফোনের মধ্যে খুঁজে পাওয়াটি বিধায়কের স্ত্রী টগরী সাহার।
আরও পড়ুন: টানা 65 ঘণ্টার ম্যারাথন তল্লাশির পর গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ, এঁদো ডোবায় পাঁক ঘেঁটে মোবাইলের খোঁজ এবং সামগ্রিক তৎপরতা দেখে বোঝাই যাচ্ছিল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারি সময়ের অপেক্ষা। তদন্ত পর্ব নানা মোড় এসেছিল কিন্তু গ্রেফতার যে তিনি হবেন তা মধ্যরাতের প্রহরা দেখেই বোধহয় আন্দাজ করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ।