ভগবানগোলা, 19 এপ্রিল : ইচ্ছাশক্তি আর কঠিন পরিশ্রম এনে দিল জয় ৷ আন্তর্জাতিক ওপেন তাইকোন্ডো চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জ পদক পেল মুর্শিদাবাদের ভগবানগোলার অন্তর্গত দিয়ার জালিবাগিচা গ্রামের শামসুন নাহার (Murshidabad daughter wins Bronze) ৷ দিনকয়েক আগে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বসেছিল প্রতিযোগিতার আসর। নেপাল-বাংলাদেশের প্রতিযোগীদের হারিয়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করে ব্রোঞ্জ ছিনিয়ে নেয় শামসুন ৷ তবে সোনা জয়ের খিদে রয়েই গেল তার।
ভগবানগোলা বালিকা বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী শামসুন নাহার । ছোটবেলা থেকেই খেলার নেশা তার। অত্যন্ত অভাবের মধ্য দিয়ে বড় হয়ে উঠেছে শামসুন। পাঁচ বছর বয়স থেকেই ক্যারাটের প্রশিক্ষণ শুরু। প্রথমটা হাতেখড়ি ক্যারাটে দিয়ে হলেও পরে পছন্দ হিসাবে সে তাইকোন্ডোকে বেছে নেয় ৷
মাঝে তার এই খেলোয়াড় হওয়ার স্বপ্নতে চিড় ধরেছিল ৷ আট বছর আগে শামসুনের বাবা মারা যান ৷ বাবার মৃত্যুর পর আর্থিক অনটনে ছেদ পরে প্রশিক্ষণে। আর্থিক সমস্যার কারণে সে খেলাধূলা আর চালিয়ে নিয়ে যেতে পারছিল না। সেইসময় পাশে দাঁড়ান প্রতিবেশী শিক্ষক জুয়েল হাসান। তাঁর প্রচেষ্টাতেই এই সাফল্য পায় শামসুন ৷ তিনি কলকাতায় নিয়ে গিয়ে কোচিংয়ের ভর্তি করে দেন। শুরু হয় প্রশিক্ষণ ৷
আরও পড়ুন : Malda 100 Days Scam : 100 দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে
স্বপ্নপূরণের চ্যালেঞ্জ তার কঠিন পরিশ্রমে শক্তি জুগিয়েছে তাকে ৷ রাজ্যস্তরের বহু পদক রয়েছে তার ঝুলিতে। পদক জয়ের খিদে, অদম্য ইচ্ছাশক্তি শামসুনকে আন্তর্জাতিক খ্যাতির দরজায় পৌঁছে দিয়েছে, ব্রোঞ্জ অর্জন করেছে সে। তবে সোনার পদক না জেতায় কিছুটা মন খারাপ হলেও পরবর্তীতে সে আরও ভাল করে অনুশীলন করবে বলে জানিয়েছে। এর পরে তার লক্ষ্য সোনা জয় ৷
ব্রোঞ্জজয়ী শামসুন নাহার আর্জি জানিয়েছে, এমন বহু দুঃস্থ খেলোয়াড় আছে যারা আর্থিক কারণে খেলা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে না ৷ অনেকের মধ্যে প্রতিভা থাকলেও তারা অর্থনৈতিক দুর্বলতার কারণে পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়। তাই তাদের যেন সরকারের তরফে সহায়তা করা হয় এবং প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। ঘরের মেয়ের পদক জয়ে খুশি প্রতিবেশী থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা।