মুর্শিদাবাদ, 24 ডিসেম্বর: ফের মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে করোনা সংক্রমণ (COVID cases rising) ৷ কেন্দ্র ও রাজ্যের তরফে ইতিমধ্যে সতর্ক হতে বলা হয়েছে ৷ আর এতেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মুর্শিদাবাদের পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা । ফের যদি লকডাউন হয় তাহলে কীভাবে সংসার চলবে সেই চিন্তাতেই ঘুম ছুটেছে তাঁদের (Murshidabad Businessman in tension)।
পর্যটন ব্যবসায়ীদের দাবি, দু'বছর লকডাউনের পর এবার মুর্শিদাবাদের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থানগুলি পর্যকদের টানতে শুরু করেছিল । শীতকাল তার ওপর বড়দিন ও নতুন বছরের ছুটির মরশুমে পর্যটকদের ঢল নামার আশায় বুক বাঁধতে শুরু করেছিল তাঁরা । ব্যবসাও জমে উঠেছিল। কিন্তু ফের ঘারের উপর নিঃশ্বাস ফেলছে করোনা।
লালবাগ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি স্বপন ভট্টাচার্য বলেন, "পর্যটন শিল্প নবাবের শহরের বহু মানুষের মুখে অন্ন তুলে দিয়ে আসছে । হোটেল, টাঙ্গা থেকে শুরু করে গাইড ব্যবসায়ী মিলিয়ে প্রায় 21 হাজার মানুষ জড়িত পর্যটন শিল্পের সঙ্গে। লকডাউন শুরু হলে ওরা বিপাকে পড়বে সংসার চালাতে ।" তিনি আরও বলেন, "নবারের শহরের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে ছিঁটিয়ে রয়েছে ইতিহাস । মাটি খুঁড়লেই স্থাপত্য শহরে উঠে আসবে ইতিহাসের গন্ধ । প্রাচীন স্থাপত্য হাজারদুয়ারি (Hazarduari), কাটরা মসজিদ, ফুটি মসজিদ, হীরাঝিল, মতিঝিলের টানে প্রতি বছর দেশ বিদেশের প্রায় 18 লক্ষ পর্যটকের পা পরে মুর্শিদাবাদে ।"
গত দু'বছর করোনার কারণে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল মুর্শিদাবাদের দিক থেকে । এবার নভেম্বর মাস থেকেই ব্যাপক পর্যটকের আনাগোনা শুরু হয়েছে । ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসজুড়ে পর্যটক আর বনভোজন দলে রমরম করে হাজারদুয়ারি চত্ত্বর । আর সেই আশায় কার্যত জল ঢালতে চলেছে করোনার দাপট ।
আরও পড়ুন: হাজারদুয়ারি প্যালেস খুলতেই শুরু টিকিটের কালোবাজারি
ইতিমধ্যে চিনে (China) ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে । কঠিন পরিস্থিতির মোকাবিলায় তৈরি হতে শুরু করেছে বাংলা ও দিল্লির সরকার । আর তাতেই কার্যত চোখে 'পানি' এনে দিয়েছে পর্যটন ব্যবসায়ীদের । লালবাগের টাঙ্গা চালক কুতুবুদ্দিন শেখ বলেন, "করোনাকালে সংসার আর ঘোড়ার খাবার জোটাতে গিয়ে লোকের কাছে পাত পাততে হয়েছিল । এবার কী হবে জানি না ।" হোটেল মালিক আসিফ ইকবাল বলেন, "শুরুতে বুকিংয়ের যে উচ্ছাস ছিল তাতে ভাঁটা পড়েছে ।" হাজারদুয়ারি প্যালেস লাগোয়া ব্যবসায়ী সুতপা সরকার বলেন, "পর্যটক না থাকলে আমাদের সংসার ভেসে যাবে । আয়ের বিকল্প পথ খোলা নেই । জানি না ভবিষ্যৎ কী বলবে ।"