মুর্শিদাবাদ, 17 এপ্রিল: অবেশেষে উদ্ধার হল নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার ফেলে দেওয়া দ্বিতীয় মোবাইল। শুক্রবার বিকেল 4টে থেকে পুকুরের জল ছেঁচে বের করে শুরু হয় তল্লাশি ৷ 72 ঘণ্টা পর শেষমেশ পাওয়া গেল মোবাইলটি। গতকাল প্রথমটি উদ্ধারের পর সিবিআই নাছোড়বান্দা ছিল দ্বিতীয় মোবাইল ফোনটির জন্য। অবশেষে পাওয়া গেল সেটি। সোমবার বেলা সাড়ে 12টা নাগাদ পুকুর পাড়ে খেজুর গাছের নীচ থেকে মিলল ফোনটি। যেটি নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত জীবনকৃষ্ণের ডেটাবেসের অন্যতম ভাণ্ডার বলে মনে করা হচ্ছে ৷ উদ্ধারকারীরা সেটি পেয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন। মোবাইলটি একেবারে অক্ষত অবস্থায় রয়েছে বলেই জানা গিয়েছে ৷
উদ্ধার হওয়ার সময় সেটি সাদা প্যাকেটে মোড়া ছিল। যার অর্থ, ছুড়ে ফেলে দেওয়ার আগে এই মোবাইলটি বাজেয়াপ্ত করেছিল সিবিআই। পুকুরের জল ছেঁচে তোলার পর রবিবার দুপুরে পাঁক থেকে জীবনকৃষ্ণের প্রথম মোবাইলটি উদ্ধার হয়। এরপর দ্বিতীয় ফোনের খোঁজে চলতে থাকে তল্লাশি ৷ এমনকী সোমবার ভোরে তাঁকে গ্রেফতারের পরও দ্বিতীয় মোবাইলের তল্লাশি অভিযানে অনড় থাকেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা ৷
উল্লেখ্য, সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, তল্লাশি চলাকালীন তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে তাঁর সুপারিশে হওয়া চাকরিপ্রার্থীদের নথির পাশাপাশি এসএলএসটির পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার ডেটাবেস পাওয়া গিয়েছে। সবমিলিয়ে উদ্ধার হয়েছে প্রায় দুই বস্তা নথি। সিবিআইয়ের একটি সূত্র দাবি করছে, তৃণমূল বিধায়কের বাড়ি থেকে প্রায় 3,400 প্রার্থীর তথ্য উদ্ধার হয়েছে। যার মধ্যে নাকি রয়েছে নবম এবং দশম শ্রেণির চাকরিপ্রার্থীদের নাম এবং রোল নম্বর ৷ বাড়ির একটি ঘরকেই নিয়োগ দুর্নীতির আস্তানা বানিয়ে রেখেছিলেন জীবনকৃষ্ণ। দু'টো ফেলে দেওয়া ফোনের মধ্যে প্রথমটি বিধায়কের স্ত্রী টগরী সাহার।
আরও পড়ুন: জীবনকৃষ্ণের ঠিকানা নিজাম প্যালেস, 'জীবনের' জিয়নকাঠির সংকেত কী!
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ, এঁদো ডোবায় পাঁক ঘেঁটে মোবাইলের খোঁজ এবং সামগ্রিক তৎপরতা দেখে বোঝাই যাচ্ছিল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার গ্রেফতারি কেবল সময়ের অপেক্ষা। তদন্ত পর্বে এসেছিল নানা মোড় ৷ কিন্তু গ্রেফতার যে তিনি হবেন তা মধ্যরাতের প্রহরা দেখেই বোধহয় আন্দাজ করেছিলেন জীবনকৃষ্ণ।