মালদা, 5 ডিসেম্বর: আমবাগানের মধ্যে থেকে অজ্ঞাতপরিচয় যুবতির দগ্ধ দেহ উদ্ধার । ঘটনায় স্তম্ভিত ইংরেজবাজারের কোতওয়ালি গ্রাম পঞ্চায়েতের ধানতলা এলাকার বাসিন্দারা৷ আজ সকালে ধানতলা ও গণিপুর গ্রামের মধ্যবর্তী এলাকায় ওই যুবতির দগ্ধ দেহ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা ৷ খবর দেওয়া হয় ইংরেজবাজার থানায় ৷ ঘটনাস্থানে আসেন খোদ পুলিশ সুপার ৷ ঘটনাস্থান থেকে একাধিক নমুনা সংগ্রহ করেছে পুলিশ৷
হায়দরাবাদে পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণ করে পুড়িয়ে খুনের ঘটনা সাড়া ফেলেছে গোটা দেশে ৷ সেই ঘটনার ক্ষত এখনও দগদগে ৷ গোটা দেশ ধর্ষকদের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার৷ এমন কী মালদাতেও সেই দাবি উঠেছে৷ তার মধ্যেই আজ মালদার ধানতলা এলাকায় আমবাগানের মধ্যে থেকে অজ্ঞাতপরিচয় যুবতির দগ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে । গ্রামবাসীদের অভিযোগ, হায়দরাবাদের মতোই এই যুবতিকেও ধর্ষণের পর পুড়িয়ে খুন করা হয়েছে ৷ মৃতদেহের একাধিক জায়গায় ক্ষতচিহ্ন দেখতে পেয়েছে তারা ৷ পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একাধিক ক্ষতচিহ্ন রয়েছে যুবতির গোপনাঙ্গেও ৷ তবে যে স্থানে যুবতির দেহ দেখতে পাওয়া গেছে, সেখানে তাঁকে খুন করা হয়নি বলেই ধারণা স্থানীয়দের ৷ কারণ, ঘটনাস্থানে রক্তের কোনও চিহ্ন দেখা যায়নি৷
তাদের বক্তব্য, অন্য কোথাও ধর্ষণ করে খুন করার পর যুবতিকে আমবাগানে নিয়ে এসে পুড়িয়ে দেওয়া হয়৷ এলাকার বাসিন্দা অনিমেষ দাস বলেন, "আজ সকাল সাড়ে 9 টা নাগাদ পাশের গ্রামের এক বাসিন্দা এখানে কাজ করতে এসেছিল৷ সে দেখতে পায়, এক যুবতির অর্ধনগ্ন দেহ এখানে পড়ে রয়েছে৷ খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থানে এসে দেখি, এখানে এক যুবতিকে পুড়িয়ে মারা হয়েছে৷ আমরা সঙ্গে সঙ্গে থানায় খবর দিই ৷ পুলিশ আসে৷ এই যুবতির পরিচয় পেতে আমরা আশপাশের সমস্ত গ্রামে খবর দিয়েছি৷ মহিলা কিংবা শিশুদের নিরাপত্তা এখানে নেই ৷ গত 5 বছর ধরে আমরা নিরাপত্তার জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন জানাচ্ছি৷ কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি৷ তারই জেরে এই ঘটনা ঘটেছে৷ আমাদের মনে হচ্ছে, হায়দরাবাদের মতোই এই ঘটনা ঘটেছে ৷ এই যুবতিকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছে৷"
গ্রামের আরেক বাসিন্দা স্বরূপ দাস বলেন, "কী করে যুবতির মৃত্যু হয়েছে তা পুলিশ বলবে৷ তবে আমাদের দৃঢ় ধারণা, এই যুবতিকে ধর্ষণ করে পুড়িয়ে মারা হয়েছে৷ যুবতির সর্বাঙ্গ পুড়ে গেছে৷ তবে তাঁর পরিচয় এখনও জানা যায়নি৷ আমার অনুমান, এখানেই যুবতিকে খুন করে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আমরা দোষীদের ফাঁসি কিংবা গুলি করে মারা দেখতে চাই৷"
পুলিশের অনুমান,, যুবতির বয়স 25 থেকে 30 বছরের মধ্যে৷ তাঁর আঙুলে একটি আংটি পাওয়া গেলেও কোনও শাঁখা বা চুড়ি পাওয়া যায়নি৷ সর্বাঙ্গে ধারালো কিছু দিয়ে আঘাত করা হয়েছে৷ তাঁর যৌনাঙ্গেও একাধিক আঘাতের চিহ্ন ধরা পড়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে৷ ঘটনাস্থান থেকে বেশ কিছু নমুনা পাওয়া গেছে৷ তাতে বোঝা যাচ্ছে, গতকাল রাতে এখানে একাধিক লোক মজুত ছিল৷ যদিও ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর সঠিক কারণ বোঝা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়ার৷ তিনি বলেন, "আজ আমরা এক যুবতির দগ্ধ দেহ উদ্ধার করেছি৷ এখনও পর্যন্ত যুবতির পরিচয় জানা যায়নি৷ আমরা ঘটনাস্থান থেকে কিছু নমুনাও সংগ্রহ করেছি৷ যুবতির পরিচয় জানতে জেলার প্রতিটি থানায় জানানো হয়েছে৷ ইতিমধ্যে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে৷ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলেই মৃত্যুর কারণ ও বিবরণ আমরা জানতে পারব৷"