ETV Bharat / state

WBCPCR Visits Kaliachak: কালিয়াচকে দেহ উদ্ধারের 17 দিন পর নাবালিকার বাড়িতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন, উঠছে প্রশ্ন

কালিয়াচকে ধর্ষণের পর দেহ উদ্ধারের 17 দিন পর নাবালিকার বাড়িতে গেল রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন ৷ কলকাতা হাইকোর্টের কঠোর মনোভাবই কি এই পরিদর্শনের কারণ ? উঠছে প্রশ্ন ৷

WBCPCR Visits Kilachak
রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন
author img

By

Published : May 12, 2023, 5:25 PM IST

Updated : May 13, 2023, 9:38 AM IST

কালিয়াচকে মৃতার বাড়িতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন

মালদা, 12 মে: মালদার নাবালিকা ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টের কঠোর মনোভাবেই কি বোধদয় রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের ? কালিয়াচকে ধর্ষণের পর খুনের ঘটনার 17 দিন পর নিহত নাবালিকার বাড়িতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের পা পড়ায় সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে ৷ যদিও কমিশনের চেয়ারপার্সনের সাফাই, তাঁরা সব বুঝেশুনেই পদক্ষেপ করছেন ৷

উল্লেখ্য, কালিয়াগঞ্জে নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগের তদন্ত করে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা করেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন ৷ সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে গতকাল এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশের হাত থেকে কেড়ে নিয়েছে আদালত ৷ ঘটনার তদন্তের জন্য সিবিআইয়ের প্রাক্তন কর্তা উপেন বিশ্বাস, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত এবং দক্ষ আইপিএস অফিসার হিসাবে পরিচিত দময়ন্তী সেনকে নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ৷ আগামী 28 জুন সিটকে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি ৷

21 এপ্রিল কালিয়াগঞ্জে পুকুর থেকে নাবালিকার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্যে ৷ সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে 25 এপ্রিল কালিয়াচক 1 নম্বর ব্লকের আকন্দবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উজিরপুর গ্রামের একটি ঝিঙেখেত থেকে উদ্ধার হয় আরও এক কিশোরীর দেহ ৷ বছর পনেরোর ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের ৷ পরে জানা যায়, ওই নাবালিকা পুরাতন মালদার বাসিন্দা ৷ বাবা আর দাদা সবজি বিক্রেতা ৷ তিন বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয় ৷ স্থানীয় একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত ৷ তবে কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পরেই তৎপর হয়ে ওঠে জেলা পুলিশ ৷ সেই রাতেই গ্রেফতার করা হয় এই ঘটনার মূল অভিযুক্তকে ৷ বিবাহিত ওই যুবক পুলিশি জেরায় স্বীকার করে নেয়, প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই কিশোরীকে ডেকে এনে সে প্রথমে তাকে ধর্ষণ করে ৷ তারপর শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে ৷ সে বর্তমানে সংশোধনাগারে বন্দি ৷

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয়বার উত্তাল হয়ে ওঠে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ ৷ 27 এপ্রিল কিশোরীর বাড়ি যান বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী তনুজা চক্রবর্তী ৷ তিনি দাবি করেন, গণধর্ষণের শিকার ওই নাবালিকা ৷ এই ঘটনায় পুলিশি তদন্ত নিয়েও বিস্তর অভিযোগ তোলেন তিনি ৷ পরদিন অর্থাৎ 28 এপ্রিল নিহত নাবালিকার বাড়ি যান প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী ৷ তিনিও এই মামলায় পুলিশি তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ৷ পুলিশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অবমাননার অভিযোগ তোলেন ৷ প্রয়োজনে এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করতে পারেন বলেও জানান ৷

এই ঘটনার পর নাবালিকার বাড়িতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা গেলেও এতদিন রাজ্য বা জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের পা পড়েনি ৷ শেষ পর্যন্ত দেহ উদ্ধারের 17 দিন পর শুক্রবার নিহত কিশোরীর বাড়িতে যান রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় ৷ তিনি নিহতের মা-সহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ৷

পরে তিনি জানান, “এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে ৷ তদন্ত রিপোর্ট আদালতকেও দেওয়া হয়েছে ৷ তদন্ত এখনও চলছে ৷ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ বাড়ির লোকেদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, তাঁদের কোনও নালিশ রয়েছে কি না ৷ তাঁরা এখনও আমাকে কিছু জানাননি ৷”

কিন্তু ঘটনার এতদিন পর কেন তাঁরা নাবালিকার বাড়িতে এলেন ? এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিরোধীদের ৷ শুনে প্রথমে খানিক বিরক্ত হন সুদেষ্ণা রায় ৷ তারপর বলেন, “আমরা আগেও এই ঘটনা নিয়ে খোঁজ নিয়েছি ৷ কারা কী বলছে তা নিয়ে আমাদের চলবে না ৷ আমি নিজের কাজ নিজের মতো করব ৷ আগামী 9 জুন শিশু অধিকার রক্ষা দিবস অনুষ্ঠিত হবে ৷ তা নিয়ে কথাবার্তা বলতে মালদা এসেছি ৷ অন্য কাজও রয়েছে ৷ এখানে যেহেতু এসেছি, তাই এই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে গেলাম ৷ এই ঘটনায় প্রথমে পুলিশ দুটি মোবাইল নম্বর পেয়েছিল ৷ তাই পুলিশ প্রথমে দু’জনকে আটক করে ৷ পরে দেখা যায়, একজন নিরাপরাধ ৷ তাই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৷ তবে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না ৷”

আরও পড়ুন: কালিয়াগঞ্জ থেকে কালিয়াচক, মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে পুলিশ-প্রশাসন

কালিয়াচকে মৃতার বাড়িতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন

মালদা, 12 মে: মালদার নাবালিকা ধর্ষণ ও খুন কাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টের কঠোর মনোভাবেই কি বোধদয় রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের ? কালিয়াচকে ধর্ষণের পর খুনের ঘটনার 17 দিন পর নিহত নাবালিকার বাড়িতে রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের পা পড়ায় সেই প্রশ্নই উঠতে শুরু করেছে ৷ যদিও কমিশনের চেয়ারপার্সনের সাফাই, তাঁরা সব বুঝেশুনেই পদক্ষেপ করছেন ৷

উল্লেখ্য, কালিয়াগঞ্জে নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং খুনের অভিযোগের তদন্ত করে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা করেছে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন ৷ সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে গতকাল এই ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব পুলিশের হাত থেকে কেড়ে নিয়েছে আদালত ৷ ঘটনার তদন্তের জন্য সিবিআইয়ের প্রাক্তন কর্তা উপেন বিশ্বাস, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের প্রাক্তন আইজি পঙ্কজ দত্ত এবং দক্ষ আইপিএস অফিসার হিসাবে পরিচিত দময়ন্তী সেনকে নিয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করে দিয়েছেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা ৷ আগামী 28 জুন সিটকে প্রাথমিক তদন্ত রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি ৷

21 এপ্রিল কালিয়াগঞ্জে পুকুর থেকে নাবালিকার দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তোলপাড় পড়ে যায় রাজ্যে ৷ সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে 25 এপ্রিল কালিয়াচক 1 নম্বর ব্লকের আকন্দবেড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের উজিরপুর গ্রামের একটি ঝিঙেখেত থেকে উদ্ধার হয় আরও এক কিশোরীর দেহ ৷ বছর পনেরোর ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের ৷ পরে জানা যায়, ওই নাবালিকা পুরাতন মালদার বাসিন্দা ৷ বাবা আর দাদা সবজি বিক্রেতা ৷ তিন বোনের মধ্যে সে দ্বিতীয় ৷ স্থানীয় একটি স্কুলে দশম শ্রেণিতে পড়ত ৷ তবে কিশোরীর দেহ উদ্ধারের পরেই তৎপর হয়ে ওঠে জেলা পুলিশ ৷ সেই রাতেই গ্রেফতার করা হয় এই ঘটনার মূল অভিযুক্তকে ৷ বিবাহিত ওই যুবক পুলিশি জেরায় স্বীকার করে নেয়, প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই কিশোরীকে ডেকে এনে সে প্রথমে তাকে ধর্ষণ করে ৷ তারপর শ্বাসরোধ করে তাকে খুন করে ৷ সে বর্তমানে সংশোধনাগারে বন্দি ৷

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দ্বিতীয়বার উত্তাল হয়ে ওঠে কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ ৷ 27 এপ্রিল কিশোরীর বাড়ি যান বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী তনুজা চক্রবর্তী ৷ তিনি দাবি করেন, গণধর্ষণের শিকার ওই নাবালিকা ৷ এই ঘটনায় পুলিশি তদন্ত নিয়েও বিস্তর অভিযোগ তোলেন তিনি ৷ পরদিন অর্থাৎ 28 এপ্রিল নিহত নাবালিকার বাড়ি যান প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী ৷ তিনিও এই মামলায় পুলিশি তদন্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ৷ পুলিশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অবমাননার অভিযোগ তোলেন ৷ প্রয়োজনে এই ঘটনায় নিরপেক্ষ তদন্তের দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করতে পারেন বলেও জানান ৷

এই ঘটনার পর নাবালিকার বাড়িতে সমস্ত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা গেলেও এতদিন রাজ্য বা জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশনের পা পড়েনি ৷ শেষ পর্যন্ত দেহ উদ্ধারের 17 দিন পর শুক্রবার নিহত কিশোরীর বাড়িতে যান রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় ৷ তিনি নিহতের মা-সহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন ৷

পরে তিনি জানান, “এই ঘটনায় পুলিশ তদন্ত করছে ৷ তদন্ত রিপোর্ট আদালতকেও দেওয়া হয়েছে ৷ তদন্ত এখনও চলছে ৷ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ বাড়ির লোকেদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, তাঁদের কোনও নালিশ রয়েছে কি না ৷ তাঁরা এখনও আমাকে কিছু জানাননি ৷”

কিন্তু ঘটনার এতদিন পর কেন তাঁরা নাবালিকার বাড়িতে এলেন ? এ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বিরোধীদের ৷ শুনে প্রথমে খানিক বিরক্ত হন সুদেষ্ণা রায় ৷ তারপর বলেন, “আমরা আগেও এই ঘটনা নিয়ে খোঁজ নিয়েছি ৷ কারা কী বলছে তা নিয়ে আমাদের চলবে না ৷ আমি নিজের কাজ নিজের মতো করব ৷ আগামী 9 জুন শিশু অধিকার রক্ষা দিবস অনুষ্ঠিত হবে ৷ তা নিয়ে কথাবার্তা বলতে মালদা এসেছি ৷ অন্য কাজও রয়েছে ৷ এখানে যেহেতু এসেছি, তাই এই পরিবারের সঙ্গে দেখা করে গেলাম ৷ এই ঘটনায় প্রথমে পুলিশ দুটি মোবাইল নম্বর পেয়েছিল ৷ তাই পুলিশ প্রথমে দু’জনকে আটক করে ৷ পরে দেখা যায়, একজন নিরাপরাধ ৷ তাই তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ৷ তবে জাতীয় শিশু সুরক্ষা কমিশন নিয়ে আমি কোনও মন্তব্য করব না ৷”

আরও পড়ুন: কালিয়াগঞ্জ থেকে কালিয়াচক, মুখ্যমন্ত্রীর তোপের মুখে পুলিশ-প্রশাসন

Last Updated : May 13, 2023, 9:38 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.