মালদা, 21 জুলাই: জেলা জুড়ে নৌকায় নদী পারাপারের ক্ষেত্রে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে প্রশাসন। কিন্তু সেই নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আবারও মহানন্দায় শুরু হয়েছে ঝুঁকির পারাপার। নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা না-থাকলেও অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই অনেক নৌকা মহানন্দা পারাপার করছে। এই ছবি ধরা পড়েছে চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের চন্দ্রপাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জোতমনি গ্রামের কানাইপুর ঘাটে (Villagers Demand life jacket for Crossing by Boat in Mahananda River)।
কানাইপুর ঘাটের একদিকে মালদার চন্দ্রপাড়া, অন্যদিকে উত্তর দিনাজপুর। মধ্যে দিয়ে বয়ে চলেছে মহানন্দা। প্রতিদিন দুই জেলার অসংখ্য মানুষ নদী পারাপার করেন। জেলায় বর্ষা শুরু না-হলেও উত্তরের জল নদীতে আসতে শুরু করেছে। জলস্তর বাড়ছে। নদীর উপর এখানে কোনও সেতু নেই। ফলে দুই জেলার মানুষের ভরসা শুধু নৌকা। শুধু মানুষ নয়, গবাদি পশু, সাইকেল-মোটরবাইকও নৌকায় নদী পারাপার করে। কিন্তু কোনও নৌকাতেই সুরক্ষার ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই। নেই লাইফ জ্যাকেট। প্রতিটি নৌকাই অতিরিক্ত যাত্রী চাপিয়ে নদী পারাপার করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ আলি জিন্না বলছেন, "প্রশাসন বলছে, কোনও নৌকায় 20 জনের বেশি যাত্রী তোলা যাবে না। এখানে সেই নির্দেশিকা শুধুই কাগজে কলমে। সময় বাঁচাতে মানুষ ঝুঁকি নিয়েই নৌকায় উঠছে। কোনও নৌকায় লাইফ জ্যাকেট কিংবা বয়া নেই। উত্তর দিনাজপুরের বহু মানুষও নানা প্রয়োজনে প্রতিদিন এপারে আসেন। এপারের মানুষ ওপারে যান। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলেই প্রশাসনের টনক নড়ে। তারপর সব চুপচাপ। আমরা এখানে একটা সেতুর দাবি করছি।"
আরও পড়ুন: দীর্ঘদিন সংস্কার হয়নি, জীর্ণ কাঠের সেতু দিয়ে ঝুঁকির পারাপার
এলাকার আরেক বাসিন্দা ওয়াসিম আক্রাম বলেন, "জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আমাদের নদী পারাপার করতে হয়। কোনও নৌকায় সুরক্ষার কোনও ব্যবস্থা নেই। আমরা চাই, প্রশাসন প্রতিটি নৌকায় যাত্রী নিরাপত্তার ব্যবস্থা করুক। বর্ষা আসলে নদী কিন্তু ভয়ঙ্কর রূপ নেবে।"
জেলা পরিষদের সভাধিপতি এটিএম রফিকুল হোসেনের বক্তব্য, "জেলা পরিষদ কিংবা পঞ্চায়েত সমিতির অধীনে থাকা প্রতিটি ঘাটেই যাত্রী নিরাপত্তার স্বার্থে লাইফ জ্যাকেট দেওয়া হয়েছে। কানাইপুর ঘাটে নিরাপত্তার নির্দেশিকা মেনে চলা হচ্ছে কি না তা আমরা দেখব। সামনে বর্ষা চলে আসছে। নদী পারাপারে যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে তার জন্য সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"