মালদা, 8 মে: এলাকায় কাজ মিলছে না ৷ তাই ঈদের পর গত 28 এপ্রিল দিল্লির গুরগাঁওয়ে টাওয়ারের কাজে গিয়েছিলেন মালদার বেশ কিছু শ্রমিক ৷ রবিবার বিকেলেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা ৷ নির্মীয়মাণ টাওয়ার থেকে পড়ে মৃত্যু হয়েছে জেলার দুই শ্রমিকের ৷ গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও একজন ৷ সেই খবর পৌঁছতেই শোকের ছায়া নেমে এসেছে তাঁদের পরিবারে ৷ অর্থের অভাবে কীভাবে ভিনরাজ্য থেকে ছেলের দেহ ঘরে ফিরিয়ে আনবেন, এখন সেই দুশ্চিন্তায় পরিবারের মানুষজন ৷ যদিও দেহ ফিরিয়ে আনতে সমস্ত ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মালতিপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বকসি ৷
দুর্ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার বিকেলে ৷ মৃতদের নাম আমিরুল মিঞা ও রহিম শেখ ৷ 27 বছরের আমিরুলের বাড়ি রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের বৈকণ্ঠপুর গ্রামে ৷ বাড়িতে রয়েছেন স্ত্রী শিবাণী বিবি আর ছোট দুটি বাচ্চা মেয়ে ৷ বড়টির বয়স আড়াই বছর, ছোটটি কয়েক মাসের ৷ মৃত আরেক শ্রমিক 29 বছর বয়সি রহিমের বাড়ি ইংরেজবাজার ব্লকের নরহাট্টা গ্রাম পঞ্চায়েতের সাতঘরিয়া গ্রামে ৷ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন বাহারাল গ্রাম পঞ্চায়েতের সাহাপুর গ্রামের 25 বছরের হুমায়ুন শেখও ৷ বর্তমানে গুরগাঁওয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি ৷
মৃত আমিরুলের এক নিকটাত্মীয় তাঞ্জুর মিঞা বলেন, "গত মাসের 28 তারিখ আমিরুল আরও অনেকের সঙ্গে দিল্লির গুরগাঁওয়ে টাওয়ারের কাজ করতে গিয়েছিল ৷ গতকাল সন্ধ্যেতে গুরগাঁও থেকে আমাদের কাছে ফোন আসে ৷ জানানো হয়, টাওয়ার থেকে পড়ে আমিরুলের মৃত্যু হয় ৷ তাঁর সঙ্গে সাতঘরিয়া গ্রামের আরেকজনেরও মৃত্যু হয়েছে ৷ আহত হয়েছে স্থানীয় সাহাপুর গ্রামের হুমায়ুন শেখ ৷ আমরা গরিব মানুষ ৷ কীভাবে দেহ ফিরিয়ে নিয়ে আসব বুঝতে পারছি না ৷ এক্ষেত্রে সরকারি সহযোগিতার আবেদন জানাচ্ছি ৷"
বৈকণ্ঠপুর গ্রামের বাসিন্দা মকবুল শেখ জানান, ঈদ শেষ করে শ্রমিক দু'জন গত 28 এপ্রিল গুরগাঁওয়ে টাওয়ারের কাজ করতে গিয়েছিলেন ৷ রবিবার সন্ধ্যেতে খবর পান তারা যে আমিরুল-সহ তিনজন টাওয়ারের উপর থেকে পড়ে গিয়েছেন ৷ এতে আমিরুল আর ইংরেজবাজারের রহিম শেখের মৃত্যু হয়েছে ৷ আর সাহাপুরের হুমায়ুন মারাত্মক আহত হয়েছেন ৷ আমিরুলদের দেহের ময়নাতদন্ত এখনও হয়নি ৷
যদিও দেহ ফিরিয়ে আনতে দুই পরিবারেরই পাশে দাঁড়িয়েছেন মালতিপুরের বিধায়ক আবদুর রহিম বকসি ৷ তিনি বলেন,"আজ সকালেই এই খবর পেয়েছি ৷ খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ওই কোম্পানির সঙ্গে কথা বলেছি ৷ দেহ ঘরে ফিরিয়ে আনার সঙ্গে দুই নিহতের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতাও করবে তারা ৷ দুই নিহতের পরিবারকে সরকারের তরফেও সবরকম আর্থিক সহায়তা করা হবে ৷ তবে এলাকায় যে কাজ নেই, সেকথা ঠিক ৷ কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছে ৷ এর জন্য আমাদের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলন শুরু করা প্রয়োজন ৷ মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের শ্রমিকদের রাজ্যে কাজ দেওয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন ৷ কিন্তু তাঁর ক্ষমতা সীমিত ৷"
আরও পড়ুন: মৃত পরিযায়ী শ্রমিকের বাড়িতে এসে বিরোধীদের তোপের মুখে বিধায়ক