মালদা, 24 সেপ্টেম্বর : অবশেষে জেলা তৃণমূল কমিটি ঘোষিত হল মালদায় ৷ এবার এই কমিটিতে জায়গা দেওয়া হয়েছে 76 জনকে ৷ কমিটিতে নামী-অনামি অনেকে জায়গা পেলেও উল্লেখযোগ্যভাবে নাম নেই প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরির ৷ এনিয়ে দলের একাংশের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে ৷ যদিও এবিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব ৷ আজ প্রয়াত দাদার শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে ব্যস্ত থাকায় প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি কৃষ্ণেন্দুবাবুরও ৷
এক বছরেরও বেশি সময় পর আজ শাসকদলের জেলা কমিটি ঘোষিত হল ৷ আজ জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর, চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন সহ অন্যদের উপস্থিতিতে এই কমিটি ঘোষিত হয় ৷ একইসঙ্গে আজ ঘোষণা করা হয়েছে জেলার 15টি ব্লক ও দুটি শহর কমিটিও ৷ এর আগে 60 জনের জেলা কমিটি থাকলেও এবার তাতে জায়গা দেওয়া হয়েছে 76 জনকে ৷
জেলার রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের রাশ ধরতেই এবার এতজনকে কমিটিতে নিয়ে আসা হয়েছে ৷ ব্লক কমিটিগুলিতে হাতে গোনা কয়েকজন করেই রাখা হয়েছে ৷ তবে আগামীতে এর বহর আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন দলের জেলা সভানেত্রী ৷
কমিটি ঘোষণার পর মৌসম বলেন, “দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুমোদন করা জেলা, ব্লক ও শহর কমিটি আজ ঘোষণা করা হল ৷ আপাতত ব্লক কমিটিগুলি ছোটো আকারে গঠন করা হয়েছে ৷ আগামীতে ওই কমিটিগুলি আরও বড় হবে ৷ আমরা লক্ষ্য করছি, সম্প্রতি দলের কিছু নেতা-কর্মী বিভিন্ন কারণে সংবাদমাধ্যম ও সোশাল মিডিয়ায় দলবিরোধী মন্তব্য করছেন ৷ এতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে ৷ আমি আজ সাফ জানিয়ে দিচ্ছি, দলীয় কোনও নেতা কিংবা কর্মী সংবাদমাধ্যম কিংবা সোশাল মিডিয়ায় এমন কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না, যাতে দলের সুনাম ক্ষুণ্ণ হয় ৷ সেক্ষেত্রে ওই দলীয় নেতা কিংবা কর্মীর বিরুদ্ধে দলবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ কাজ করতে গেলে কোনও সমস্যা দেখা দিতেই পারে ৷ সেই সমস্যা মেটানোর জন্য কোর কমিটি রয়েছে ৷ প্রয়োজনে সেই কমিটির কাছে যে কেউ নিজের অভিযোগ জানাতে পারেন ৷ কমিটি সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করবে ৷"
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে এই জেলায় শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব যে আরও একবার সমস্যায় ফেলতে পারে, তা নিশ্চিতভাবে বুঝতে পেরেছে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ তাই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানতে জেলা কমিটিতে এত সংখ্যক নেতানেত্রীকে জায়গা দেওয়া হয়েছে ৷ তবে কমিটিতে প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী ঠাঁই পাননি ৷ তাঁর নাম কমিটিতে না থাকা নিয়ে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব মন্তব্য করতে নারাজ ৷
তবে আড়ালে কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, কৃষ্ণেন্দুবাবু দলের রাজ্য সম্পাদক ৷ তাই জেলা কমিটিতে তাঁর নাম নেই ৷ কিন্তু রাজ্য কমিটির সম্পাদক পদে রয়েছেন ইংরেজবাজারের বিধায়ক নীহাররঞ্জন ঘোষও ৷ সেক্ষেত্রে নীহারবাবুর নাম কেন জেলা কমিটিতে রয়েছে, সেই প্রশ্নের জবাব মেলেনি কারও কাছ থেকেই ৷ সব দেখেশুনে নতুন কমিটির কয়েকজন বলেই ফেলেছেন, এত কিছু করেও কি গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানা যাবে? উত্তর পেতে খুব বেশিদিন সময় লাগবে না বলেই মনে করছেন তাঁরা ৷