মালদা, 11 মে : চাহিদা অনুযায়ী তোলা না দেওয়ায় দলেরই পঞ্চায়েত সদস্যাকে মারধর ও তাঁর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠল এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে । ঘটনাটি চাঁচল 1 ব্লকের অলিহণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের রাজনগর গ্রামের । চাঁচল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই সদস্যা । অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ । তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল নেতা ।
অভিযোগ, চাহিদা অনুযায়ী তোলা না দেওয়ায় চাঁচল-1 ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেসের কার্যকরী সভাপতি ইনতাজ হোসেন ও তাঁর দলের লোকজন ওই পঞ্চায়েত সদস্যার শ্লীলতাহানি করেন ও তাঁকে মারধর করেন । ওই সদস্যা বলেন, "কিছুদিন আগে আমার এলাকায় একটি সাবমার্সিবল পাম্প বসানোর অনুমোদন মেলে । এই কাজের জন্য বরাদ্দ হয় প্রায় দেড় লাখ টাকা । এরপর চাঁচল 1 ব্লকের তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি ও তাঁর দলবল আমার কাছে 25 হাজার টাকা দাবি করে । আমি সেই টাকা দিতে অস্বীকার করি । আজ সকাল সাড়ে 11 টা নাগাদ তারা ফের আমার কাছে আসে । টাকা না দেওয়ায় তারা আমাকে মারধর করে । আমাকে লোহার রড দিয়ে মারা হয় । আমার মাথায় ও বুকে আঘাত লাগে । আমি চাঁচল থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি । "
তৃণমূলের রাজনগর অঞ্চল সভাপতি শেখ আফসার আলি বলেন, "এলাকার কয়েকজন লোক ওই পঞ্চায়েত সদস্যার কাছে কমিশন আদায় করতে যায় । কমিশন না পেয়ে তারা সাবমার্সিবল পাম্পহাউসে ভাঙচুর চালায় । পঞ্চায়েত সদস্যাকে বেধড়ক মারধর করে । তাঁকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করে । খবরটা আমার কাছে এসেছে । এই ঘটনায় পরবর্তী পদক্ষেপ পঞ্চায়েত থেকেই গ্রহণ করা হবে ।"
চাঁচল 1 ব্লকের জেলাপরিষদ সদস্য সামিউল ইসলাম বলেন, "অলিহণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মনোয়ারা বিবি ফোন করে আমাকে ঘটনাটি জানিয়েছেন । নির্যাতিতা সদস্যা আমার কাছে এসে সব ঘটনা বলেছেন । শুধু এই দু'জনই নয়, সেখানকার অনেক তৃণমূল কর্মীও এই ঘটনা নিয়ে পার্টি অফিসে আসে । এসবের একটাই কারণ । বিভিন্ন কাজের কমিশনের টাকা আদায় । ইনতাজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সঠিক । ইনতাজ ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি । একটা কথা বলতে পারি, তিনি দলে থেকে দলের ক্ষতি করছেন । এটা পুরোপুরি বাস্তব ।"
ফোনে যোগাযোগ করা হলে ইনতাজ হোসেন বলেন, "ওই সদস্যার সঙ্গে আমার কথাবার্তা কিংবা বচসা, কিছুই হয়নি । যে জায়গায় সাবমার্সিবল পাম্পটা বসানো হচ্ছে তার জায়গা আমিই ঠিক করে দিয়েছি । ওই জায়গাটি বাবলু দাসের । সেই কাজের ফাইলটাও আমি ইন্সপেকশন করেছি । ওই কাজটি নিম্নমানের হচ্ছে । আজ সেখানে ঠিকাদার কিংবা শ্রমিক-মিস্ত্রি যায়নি । ওখানে কোনও তোলাবাজির গল্পও নেই । ওরা 10 অথবা 18 শতাংশ পাচ্ছে বলেই খারাপ কাজকে সমর্থন করছে । আমি এলাকার 20 বছরের প্রতিনিধি । আমি কখনও খারাপ কাজকে সমর্থন করিনি । সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে, ভিত্তিহীন ।"
চাঁচল থানার পুলিশ জানিয়েছে, অলিহণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা আজ ইনতাজ হোসেন ছাড়াও জয়নাল আবেদিন, মুসলিমুদ্দিন, ঘেসরুদ্দিন ও সইদুলের বিরুদ্ধে তাঁকে মারধর, শ্লীলতাহানি ও খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন । তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ।