মালদা, 8 নভেম্বর : উৎসব মরশুম শেষে প্রশাসনিক দফতরগুলি খুলতেই নিয়োগের দাবিতে আবারও আন্দোলনে নামলেন ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ নট ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা। শুধু মালদা জেলা নয়, সোমবার মালদার সঙ্গে দুই দিনাজপুর, মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূমের কিছু চাকরিপ্রার্থীও নিজেদের দাবিতে মালদা শহরের রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল এবং জেলাশাসকের কাছে ডেপুটেশন প্রদান কর্মসূচি পালন করেন।
মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সম্প্রতি ২০০৯ সালে প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের জট কেটেছে। আদালতের নির্দেশে সেই নিয়োগ করতে শুরু করেছে রাজ্য শিক্ষা দফতর। কিন্তু এখনও ২০১৪ সালের নন ইনক্লুডেড প্রাথমিক চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণার পরেও এই চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগ নিয়ে গরিমসি করছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। এনিয়ে চাকরিপ্রার্থীরা একাধিকবার প্রশাসনের বিভিন্ন মহলে আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু কোথাও থেকে কোনও আশ্বাসবার্তা পাননি। তাই আজ ২০১৪ প্রাইমারি টেট কোয়ালিফায়েড ট্রেন্ড নট ইনক্লুডেড একতা মঞ্চের ডাকে সংগঠনের মালদা ডিভিশন বিক্ষোভ মিছিল ও ডেপুটেশন কর্মসূচি পালন করেন।
জাটু হালদার নামে এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, “দ্রুত নিয়োগের দাবিতে ২০১৪ সাল থেকে আমরা আন্দোলন করছি। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, পুজোর আগে কিছু নট ইনক্লুডেড টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিয়োগ করা হবে। তারপর ধাপে ধাপে সবাইকেই নিয়োগ করা হবে। কিন্তু পুজো পেরিয়ে গেলেও সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়নি। আমরা ভীষণ বেকারত্বের জ্বালায় ভুগছি। অনেক টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীর বয়সও পেরিয়ে গিয়েছে। দিদির কাছে আমাদের আবেদন, তিনি আমাদের এই বেকারত্বের জ্বালা থেকে মুক্তি দিন। আজ গোটা রাজ্য জুড়েই আমাদের এই কর্মসূচি চলছে।”
চাকরিপ্রার্থী ঝুমা শর্মা বলেন, “আমরা শিক্ষিত বেকার। ২০১৪ সালে প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ নট ইনক্লু়ডেড চাকরিপ্রার্থী। প্রাথমিক শিক্ষকের জন্য যে শিক্ষাগত যোগ্যতা প্রয়োজন, তা আমাদের রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী রীতিমতো সাংবাদিক সম্মেলন করে ঘোষণা করেছিলেন, আমাদের ধাপে ধাপে চাকরিতে নিয়োগ করা হবে। দীর্ঘদিন অপেক্ষা করে আমরা ক্লান্ত। বেকারত্বের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আজ আমরা পথে নামতে বাধ্য হয়েছি।
আরও পড়ুন : ডিওয়াইএফআইয়ের পার্টি অফিসে ভাঙচুর, অভিযুক্ত তৃণমূল
আজকের কর্মসূচিতে যোগ দিতে মুর্শিদাবাদের রানিনগর থেকে এসেছিলেন রুমা খাতুন। তাঁর বক্তব্য, “দিদি আমাদের চাকরিতে নিয়োগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি এখনও রক্ষিত হয়নি। বেকারত্বের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে অনেক প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থী ভিনরাজ্যে শ্রমিকের কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। তাই দিদির কাছে আমার অনুরোধ, তিনি যেন তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন। তিনি নিজে থেকেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, রাজ্যে ২০ হাজার প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণদের প্রত্যেককে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। তিনি যেন আমাদের দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করেন।”