মালদা, 11 মে : জেলায় কোরোনা রোগীদের চিকিৎসায় যুক্ত প্রথম টিমের সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের পাঠানো হয়েছে 14 দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারানটিনে ৷ তাঁদের থাকার জন্য মালদা শহরের বিবেকানন্দ যুব আবাসে সমস্ত ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন ৷ শুধু থাকার নয়, খাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে । কোয়ারনটিনে থাকা এই দলটির মধ্যে সাতজন মুসলিম ধর্মের মানুষ রয়েছেন, তাঁদের জন্য রোজা ও ইফতারের ব্যবস্থাও করেছে প্রশাসন ।
এই মুহূর্তে সেখানে দু’জন চিকিৎক ও পাঁচজন নার্স কোয়ারানটিনে রয়েছেন ৷ একই ভবনে থাকছেন লালারস সংগ্রহকারী অন্য স্বাস্থ্যকর্মী, লালারস পরীক্ষায় যুক্ত টেকনিশিয়ানরাও ৷ তাঁদের সংখ্যা 42 ৷ এই স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখাশোনার জন্য বিবেকানন্দ যুব আবাসে নিয়োগ করা হয়েছে প্রায় 20জন কর্মীকে ৷ এঁদের মধ্যে জেলা প্রশাসনের একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট থেকে শুরু করে সাফাইকর্মীরাও রয়েছেন ৷
বর্তমানে জেলার কোরোনা সংক্রমিতদের চিকিৎসা চলছে পুরাতন মালদার নারায়ণপুরে কোরোনা হাসপাতালে ৷ এই মুহূর্তে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন 11 জন ৷ ওই হাসপাতালেই এতদিন SARI চিকিৎসার ব্যবস্থা ছিল ৷ কিন্তু জেলায় কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকায় গতকাল সেখান থেকে SARI চিকিৎসার ব্যবস্থা ফের মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷ আজ এমনই জানান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী ৷ তিনি বলেন, "প্রবল শ্বাসকষ্টে ভোগা রোগীরা যাতে কোরোনায় সংক্রমিত না হয়ে পড়ে, সেই কারণেই কোরোনা হাসপাতাল থেকে SARI চিকিৎসার ব্যবস্থা ফের মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ৷"
এদিকে কোরোনা সংক্রমিতদের চিকিৎসার জন্য তৈরি রাখা হয়েছে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের চারটি টিম ৷ প্রতিটি টিম সাতদিন করে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার পর বাধ্যতামূলক 14 দিনের কোয়ারানটিনে যাবে ৷ পরের টিম সেই সময় চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে ৷ ইতিমধ্যে প্রথম টিমের কাজ শেষ হওয়ার পর ওই টিমে থাকা দুই চিকিৎসক ও পাঁচ নার্সকে কোয়ারানটিনে পাঠানো হয়েছে ৷ মালদা শহরের বিবেকানন্দ যুব আবাসে তাঁদের কোয়ারানটিন সেন্টার তৈরি করা হয়েছে ৷ প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সাতজন দু’দিন আগেই কোয়ারানটিনে এসেছেন ৷ তাঁরা কেউ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না ৷ ঘরের সামনে চেয়ারে তাঁদের খাবার-সহ যাবতীয় সামগ্রী দিয়ে আসা হচ্ছে ৷ তাঁরা সেখান থেকে সেই সব সামগ্রী নিয়ে ফের ঘরে ঢুকে পড়ছেন ৷ শুধু তাঁরাই নন, যাঁরা সোয়াব সংগ্রহ করছেন কিংবা সেই সোয়াব পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত, এমন 42 জনকেও সেই আবাসেই রাখা হয়েছে ৷ তাঁদের মধ্যে সাতজন মুসলিম ধর্মের ৷ প্রত্যেকে রোজা পালন করছেন ৷ তাই রোজা পালনের যাবতীয় ব্যবস্থাও করেছে প্রশাসন ৷ এই আবাসে থাকা সবার দেখাশোনায় একজন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে ৷ তাঁর অধীনে রয়েছেন প্রায় 20 জন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মী ৷
আজ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী বলেন, "জেলায় কোরোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত করা হয়েছে ৷ কোরোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন প্রত্যেক রোগীই আপাতত ভালো রয়েছে ৷ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্যও আমরা সব ধরনের বন্দোবস্ত করেছি ৷ বিবেকানন্দ যুব আবাসে তাঁদের সমস্ত ব্যবস্থা হয়েছে ৷ সেখানে কোরোনা চিকিৎসায় যুক্ত প্রথম টিমের সদস্যরা আপাতত কোয়ারানটিনে রয়েছেন ৷ 9 মে থেকে দ্বিতীয় টিম কাজ শুরু করেছে ৷ প্রতিটি টিম সাতদিন কাজ করার পর 14 দিনের কোয়ারানটিনে থাকবে ৷ কোরোনা চিকিৎসায় যুক্ত স্বাস্থ্যকর্মীরাও একই আবাসে থেকে কাজ করছেন ৷"