মালদা, ১৫ জুন : সরকারের আবেদনে তাঁরা অস্ত্র ছেড়ে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে চেয়েছিলেন ৷ কথা ছিল, তাঁদের প্রত্যেককে চাকরি দেওয়া হবে ৷ খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও তাঁদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত চাকরির আশ্বাস দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানের আশ্বাসের পর পেরিয়ে গিয়েছে সাড়ে তিন মাসেরও বেশি সময় ৷ এখনও জোটেনি চাকরি ৷ তাই আজ জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের চাকরির দাবি জানিয়েছেন এই জেলার বেশ কিছু প্রাক্তন KLO জঙ্গি ৷
একসময় উত্তরবঙ্গ ও উত্তরপূর্ব ভারত দাপিয়ে বেড়িয়েছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন, কামতাপুর পিপল্স পার্টি ৷ মালদা জেলার বিভিন্ন এলাকা, বিশেষত বরিন্দ এলাকা থেকে প্রচুর ছেলেমেয়ে সেই সময় ওই জঙ্গি সংগঠনে নাম লেখায়৷ মোটা টাকার প্রলোভন দেখিয়েই তাদের সেই সংগঠনে যোগ দেওয়ানো হত ৷ রাজ্যে ক্ষমতা পরিবর্তনের পর বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনে থাকা পশ্চিমবঙ্গের লোকজনকে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসার আহ্বান জানায় তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকার ৷ সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে অনেক মাওবাদী ও KLO জঙ্গি পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে ৷ এদের অনেককেই চাকরিসহ বিভিন্ন সরকারি সুযোগ সুবিধে দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু এখনও সেসব কিছু জোটেনি হবিবপুর, বামনগোলা কিংবা গাজোলের বেশ কিছু যুবকের ৷ তাঁরাও মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনে সাড়া দিয়েই জঙ্গি সংগঠন ছেড়ে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে এসেছিলেন৷ আত্মসমর্পণ করেছিলেন পুলিশের কাছে ৷
আজ জেলাশাসকের দপ্তরে উপস্থিত তেমনই এক প্রাক্তন KLO জঙ্গি সুকুমার রায় বলেন, “গত 4 মার্চ জেলায় থাকাকালীন মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সঙ্গে দেখা করেন ৷ পুরাতন মালদার মহানন্দা ভবনে তাঁর সঙ্গে আমাদের মুখোমুখি কথা হয় ৷ আমাদের তিনি সরকারি চাকরির আশ্বাস দিয়েছিলেন ৷ পরদিন তিনি আমাদের চাকরির ব্যবস্থা করার জন্য জেলাশাসককে নির্দেশ দেন ৷ তখন আমাদের বলা হয়েছিল, 15-20দিনের মধ্যেই আমাদের চাকরি হয়ে যাবে ৷ এরপর সাড়ে তিনমাসের বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু এখনও আমাদের 31জনের চাকরি হয়নি ৷ তাই আজ আমরা জেলাশাসকের সঙ্গে দেখা করে গোটা বিষয়টি জানতে এসেছি ৷ প্রয়োজনে আমরা কলকাতা গিয়ে আবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব ৷”
যদিও প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আজই জেলাশাসক, পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন ৷