মালদা, 29 ডিসেম্বর: মালদার দুই প্রজাতির বেগুনের জিআই ট্যাগ বা ভৌগোলিক পরিচিতির জন্য আবেদন জানাল রাজ্য সরকার ৷ ইতিমধ্যে রাজ্যের তরফে কেন্দ্রকে সেই আবেদন জানানো হয়েছে ৷ চাঁচলের আশাপুরের বেগুন ও নবাবগঞ্জের বেগুনের জিআই ট্যাগ পেলে জেলার কৃষিক্ষেত্রে নতুন দিশা দেখবে বলে মনে করছে সবাই ৷ কেন্দ্রের সংশ্লিষ্ট বিভাগের তরফে দ্রুত আবেদনে সাড়া দেওয়া হবে বলেই আশা করছে জেলা প্রশাসন ৷
মালদা জেলার চাঁচল 1 ও 2 নম্বর ব্লকে আশাপুর প্রজাতির বেগুন উৎপাদিত হয় ৷ উত্তর দিনাজপুরের বিঘোরের বেগুনের সঙ্গে এই প্রজাতির যথেষ্ট মিল রয়েছে ৷ তবে, নবাবগঞ্জের বেগুন শুধুমাত্র মালদার একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অবস্থান ছাড়া অন্য কোথাও এর উৎপাদন হয় না ৷ এই প্রজাতির প্রতিটি বেগুনের ওজন হয় এক থেকে দু’কিলো ৷ কোনও কোনও বেগুনের ওজন দু’কিলোর বেশিও হয় ৷ মূলত রতুয়া 2 নম্বর ব্লকে এই প্রজাতির বেগুনের চাষ বেশি হয়ে থাকে ৷ তবে, পুরাতন মালদা ও গাজোলের কিছু অংশেও অল্পবিস্তর এর চাষ করা হয় ৷
এবার এই বেগুনের চাষ আরও ছড়িয়ে দিতে উদ্যোগ নিয়েছে জেলা উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতর ৷ তাদের অনুমান, জিআই ট্যাগ পেলে নবাবগঞ্জের বেগুনকে শুধু দেশীয় বাজারেই নয়, বিদেশেও পৌঁছে দেওয়া সুবিধেজনক হবে ৷ এতে চাষিরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনই উন্নত হবে জেলার অর্থনীতি ৷
মালদা জেলা উদ্যানপালন ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর সামন্ত লায়েক জানাচ্ছেন, “আমরা ইতিমধ্যে এই জেলার তিন প্রজাতির আমের জিআই ট্যাগ পেয়েছি ৷ বছরখানেক হল আমরা আশাপুর ও নবাবগঞ্জ বেগুনের জিআই ট্যাগের জন্য আবেদন জানিয়েছি ৷ এই দুই প্রজাতির বেগুন শুধুমাত্র মালদা জেলাতেই উৎপাদিত হয় ৷ দুই প্রজাতির বেগুনেরই বিশেষ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে ৷ পরিসংখ্যান, ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য, উৎপাদনের এলাকা-সহ সমস্ত তথ্য দিয়েই আমরা জিআই ট্যাগের আবেদন জানিয়েছি ৷ জিআই ট্যাগ পেলে আমরা এই দুই প্রজাতির বেগুনের পেটেন্ট পাব ৷ এতে দেশের পাশাপাশি বিদেশেও দুই প্রজাতির বেগুন পরিচিতি পাবে ৷ এতে বাণিজ্যিকভাবে আমরা বেগুনের দাম বেশি পেতে পারি ৷ এতে কৃষকরা আরও বেশি লাভবান হবেন ৷ রাজ্য সরকারও এই দুই প্রজাতির বেগুনের জিআই ট্যাগ পেতে চাইছে ৷”
এ প্রসঙ্গে মালদা কোল্ড স্টোরেজ ইন্ডাস্ট্রিজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি উজ্জ্বল সাহার বক্তব্য, “নবাবগঞ্জের বেগুন ইতিমধ্যে পুরো দেশে সমাদৃত ৷ এই বেগুনকে আমরা বিদেশেও ছড়িয়ে দিতে চাই ৷ আমরা তার জিআই ট্যাগের জন্য আবেদন করেছি ৷ রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে সেই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ৷ তবে শুধু বেগুন নয়, জেলার আরও কয়েকটি প্রজাতির আম ও রসকদম্বের জিআই ট্যাগের জন্যও আবেদন করা হয়েছে ৷ আমরা আশাবাদী, জেলার এই বিশেষ প্রজাতির বেগুনও খুব তাড়াতাড়ি জিআই ট্যাগ পাবে ৷ তাতে আমরা গোটা দেশ-সহ বিদেশেও বাজারজাত করতে পারব ৷ তাতে জেলার অর্থনীতিও মজবুত হবে ৷”
আরও পড়ুন: