মালদা, 19 মে: দারিদ্রতার সঙ্গে লড়াই করে মাধ্যমিকে রাজ্যের মধ্যে দশম স্থান অধিকার করেছে মালদার সাগ্নিক বকসি । তার প্রাপ্ত নম্বর 683 ৷ দারিদ্রতা সঙ্গী হলেও মনোবলের জেরে আগামী দিনেও লড়াই চালিয়ে যেতে চায় অক্রূরমণি করোনেশন ইনস্টিটিউশনের এই পড়ুয়া । সাগ্নিকের উচ্চশিক্ষার জন্য জেলা শিক্ষা দফতর-সহ নানা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে আর্থিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকও ।
সাগ্নিকের কথায়, "আমি মাধ্যমিকে 683 নম্বর পেয়ে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে দশম স্থান অধিকার করেছি । স্বভাবতই খুব ভালো লাগছে । স্কুলের নামও পশ্চিমবঙ্গের মেধা তালিকায় এসেছে । দিনে প্রায় 8-10 ঘণ্টা পড়াশোনা করতাম । স্কুলের শিক্ষকদের উপরেই বেশি ভরসা ছিল । বাবা অজিতকুমার বক্সি অটো চালান । মা মাধবী বক্সি গৃহবধূ । নিজেদের বাড়িও নেই । মালদা শহরের মালঞ্চপল্লিতে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকি । বাবার উপার্জনের বেশিরভাগ সংসার খরচ ও বাড়ি ভাড়াতেই চলে যেত । কোনওরকমে চারজন গৃহশিক্ষকের ব্যবস্থা হয়েছিল । আমার এই সাফল্যের পিছনে স্কুলের পাশাপাশি গৃহশিক্ষকদের অনেক অবদান রয়েছে । শিক্ষকরা অনেক বই দিয়ে সাহায্য করেছিলেন । ভবিষ্যতে আমি ফিজিক্স বা ম্যাথ নিয়ে পড়তে চাই । সেক্ষেত্রে আর্থিকভাবে কিছু বাধা আসবে । সমস্ত কাজেই বাধা আসে । বাধাকে কাটিয়ে এগিয়ে যেতে হবে আমাদের । সরকারি কিছু সাহায্য পেলে উপকৃত হতাম ।"
অক্রূরমণি করোনেশন ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অজয়কৃষ্ণ রায় বলেন, "আমাদের স্কুলের ফল প্রতিবছরই ভালো হয় । যদিও এবার রাজ্যের মেধা তালিকায় আমাদের স্কুলের দুই ছাত্র রয়েছে । 688 নম্বর পেয়ে শুভ্রজিৎ দে পঞ্চম স্থান অধিকার করেছে এবং সাগ্নিক বক্সি 683 নম্বর পেয়ে দশম স্থান অধিকার করেছে । সাগ্নিকের বাবা অর্থনৈতিক দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়া মানুষ । বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যদি তাঁকে আর্থিকভাবে সাহায্য করতে পারে, তবে সাগ্নিকের উচ্চশিক্ষায় অনেকটা সুবিধে হবে । শুভ্রজিৎও মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে । এদের আর্থিক সাহায্য করলে ভবিষ্যতে এরা দেশের সম্পদ হয়ে উঠবে তা নিয়ে আমাদের স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিশ্চিত ।"
আরও পড়ুন: মেধাতালিকায় 21 জন মালদার, জেলা কি এগোচ্ছে ? কী ভাবছেন শিক্ষাবিদরা ?