ETV Bharat / state

Malda Flood Situation: ফুলহরের জলে ডুবেছে একাধিক গ্রাম, ক্ষুব্ধ দুর্গত মানুষ - Several Villagers Drowned in Water of Fulhar

ফুলহরের জলের নীচে চলে গিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের একাধিক গ্রাম (Several Villagers Drowned in Water of Fulhar) ৷ দেখা দিয়েছে পানীয় জলের আকাল ৷ উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের ৷

Malda Flood
ফুলহরের জলে ডুবেছে একাধিক গ্রাম
author img

By

Published : Sep 6, 2022, 2:17 PM IST

মালদা, ৬ সেপ্টেম্বর: ভাদ্র যত গড়াচ্ছে, বন্যা আর ভাঙনের আতঙ্ক তত ছড়াচ্ছে জেলায় ৷ মানিকচক, কালিয়াচক 3, রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের পর এবার সেই আতঙ্কের স্রোত বইছে হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের একাধিক গ্রামে (Several Villagers Drowned in Water of Fulhar) ৷ ইতিমধ্যে এই ব্লকের দক্ষিণ প্রান্তে থাকা উত্তর ও দক্ষিণ ভাকুরিয়া এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ ফুলহরের জলের নীচে চলে গিয়েছে ৷

কয়েকশো বিঘা পাট আর ধানখেতের উপর দিয়ে বইছে নদীর জল ৷ জলের চাপে ভাকুরিয়ায় ফুলহর নদীর রিং বাঁধের কয়েকটি জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে ৷ সেই ফাটলগুলি দিয়েই এখন জল ঢুকতে শুরু করেছে গ্রামগুলিতে ৷ দেখা দিয়েছে পানীয় জলের আকাল ৷ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে একাধিক গ্রামে ৷ এমনকী সেখানে থাকা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের ৷ তাঁরা আরও বলছেন, এই পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেন কিংবা সাংসদ খগেন মুর্মুর দেখা মেলেনি ৷ দেখতে পাওয়া যায়নি প্রশাসনিক কর্তাদেরও ৷

ফুলহরের জলে ডুবেছে একাধিক গ্রাম

আরও পড়ুন: চরম বিপদসীমা পেরলো গঙ্গা-ফুলহর, মালদায় বানভাসি 25 গ্রাম

উত্তর ভাকুরিয়ার বাসিন্দা বিভীষণ মণ্ডল জানান, ফুলহরের জলে হাজারো বিঘা জমির ফসল ডুবে গিয়েছে ৷ আমরা একটা দ্বীপের মধ্যে বাস করছি ৷ প্রশাসনের তরফে একটা নৌকারও ব্যবস্থা করা হয়নি ৷ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছি ৷ এখনও পর্যন্ত বিধায়ক তথা মন্ত্রী, সাংসদ কিংবা প্রশাসনের কেউ আসেননি ৷ জনপ্রতিনিধিদের শুধু ভোটের সময় দেখা যায় ৷ আমরা বিপদে পড়লে তাঁদের দেখা মেলে না ৷ মানুষ এখন না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে ৷ আমাদের বাঁচাতে বিডিও দু’বার ব্যবস্থা নেবেন বলেছিলেন কিন্তু কিছুই করেননি ৷

একই বক্তব্য আরেক গ্রামবাসী রূপবতী মণ্ডলের ৷ তাঁর অভিযোগ, গ্রামে 15 হাজার মানুষের বাস ৷ ফুলহরের জল গ্রামে ঢুকে গিয়েছে ৷ নদী মানুষের ঘরও গিলে নিচ্ছে ৷ অথচ প্রশাসনের তরফে কিছু করা হচ্ছে না ৷ গ্রামে একটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা পাওয়া যায় না ৷ সেখান থেকে একটা ওষুধও পাওয়া যায় না ৷ এভাবে কি বেঁচে থাকা যায়!

আরও পড়ুন: ডায়মন্ড হারবারে হুগলি নদীতে ধস, নদী গর্ভে বিলীন 100 মিটার রাস্তা

সাংসদ খগেন মুর্মু অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি দুই ভাকুরিয়ার মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন ৷ তাঁর কথায়, তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা নিজেদের পকেট ভরার সুযোগ না থাকলে কোথাও যান না ৷ ওই দলটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ৷ বন্যা হলেই এখানে সেচ দফতর সক্রিয় হয় ৷ তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরাও সক্রিয় হয়ে ওঠেন ৷ 2 দিন আগে বন্যা আর ভাঙন নিয়ে আমি জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি ৷ তাঁকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার কথা বলেছি ৷ দিশা কমিটির বৈঠক করতে বলেছি ৷ দিশা থেকেই কোনও বড় প্রকল্পে হাতে নেওয়া যায় ৷ তিনি চলতি মাসের শেষের দিকে সেই বৈঠক ডাকবেন বলেছেন ৷

বিধায়ক তথা মন্ত্রী তাজমুল হোসেনকে না পাওয়া গেলেও হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তাবারক হোসেনকে বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রথমে জানান, সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই তিনি বিষয়টি জানতে পেরেছেন ৷ অবশ্য মুহূর্তের মধ্যে নিজেকে শুধরে নিয়ে তিনি জানান, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা ওই বন্যাদুর্গত এলাকায় যাবেন ৷ কিন্তু বিজেপির সাংসদ ভাঙন রোধের কাজ কিছুতেই করতে পারবেন না ৷ তিনি তো পরিযায়ী পাখির মতো ৷ এই কাজ শুধুমাত্র আমাদের মন্ত্রীরাই করতে পারবেন ৷ এই খবর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছলেই ওই এলাকায় উন্নয়ন পৌঁছে যাবে ৷ আমি নিজেও দুই ভাকুরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাব ৷

মালদা, ৬ সেপ্টেম্বর: ভাদ্র যত গড়াচ্ছে, বন্যা আর ভাঙনের আতঙ্ক তত ছড়াচ্ছে জেলায় ৷ মানিকচক, কালিয়াচক 3, রতুয়া 1 নম্বর ব্লকের পর এবার সেই আতঙ্কের স্রোত বইছে হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লকের একাধিক গ্রামে (Several Villagers Drowned in Water of Fulhar) ৷ ইতিমধ্যে এই ব্লকের দক্ষিণ প্রান্তে থাকা উত্তর ও দক্ষিণ ভাকুরিয়া এলাকার বিস্তীর্ণ অংশ ফুলহরের জলের নীচে চলে গিয়েছে ৷

কয়েকশো বিঘা পাট আর ধানখেতের উপর দিয়ে বইছে নদীর জল ৷ জলের চাপে ভাকুরিয়ায় ফুলহর নদীর রিং বাঁধের কয়েকটি জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে ৷ সেই ফাটলগুলি দিয়েই এখন জল ঢুকতে শুরু করেছে গ্রামগুলিতে ৷ দেখা দিয়েছে পানীয় জলের আকাল ৷ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে একাধিক গ্রামে ৷ এমনকী সেখানে থাকা উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে চিকিৎসক কিংবা স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা মিলছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের ৷ তাঁরা আরও বলছেন, এই পরিস্থিতিতে এখনও পর্যন্ত স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী তাজমুল হোসেন কিংবা সাংসদ খগেন মুর্মুর দেখা মেলেনি ৷ দেখতে পাওয়া যায়নি প্রশাসনিক কর্তাদেরও ৷

ফুলহরের জলে ডুবেছে একাধিক গ্রাম

আরও পড়ুন: চরম বিপদসীমা পেরলো গঙ্গা-ফুলহর, মালদায় বানভাসি 25 গ্রাম

উত্তর ভাকুরিয়ার বাসিন্দা বিভীষণ মণ্ডল জানান, ফুলহরের জলে হাজারো বিঘা জমির ফসল ডুবে গিয়েছে ৷ আমরা একটা দ্বীপের মধ্যে বাস করছি ৷ প্রশাসনের তরফে একটা নৌকারও ব্যবস্থা করা হয়নি ৷ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছি ৷ এখনও পর্যন্ত বিধায়ক তথা মন্ত্রী, সাংসদ কিংবা প্রশাসনের কেউ আসেননি ৷ জনপ্রতিনিধিদের শুধু ভোটের সময় দেখা যায় ৷ আমরা বিপদে পড়লে তাঁদের দেখা মেলে না ৷ মানুষ এখন না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে ৷ আমাদের বাঁচাতে বিডিও দু’বার ব্যবস্থা নেবেন বলেছিলেন কিন্তু কিছুই করেননি ৷

একই বক্তব্য আরেক গ্রামবাসী রূপবতী মণ্ডলের ৷ তাঁর অভিযোগ, গ্রামে 15 হাজার মানুষের বাস ৷ ফুলহরের জল গ্রামে ঢুকে গিয়েছে ৷ নদী মানুষের ঘরও গিলে নিচ্ছে ৷ অথচ প্রশাসনের তরফে কিছু করা হচ্ছে না ৷ গ্রামে একটি উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা পাওয়া যায় না ৷ সেখান থেকে একটা ওষুধও পাওয়া যায় না ৷ এভাবে কি বেঁচে থাকা যায়!

আরও পড়ুন: ডায়মন্ড হারবারে হুগলি নদীতে ধস, নদী গর্ভে বিলীন 100 মিটার রাস্তা

সাংসদ খগেন মুর্মু অবশ্য দাবি করেছেন, তিনি দুই ভাকুরিয়ার মানুষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন ৷ তাঁর কথায়, তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা নিজেদের পকেট ভরার সুযোগ না থাকলে কোথাও যান না ৷ ওই দলটির রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি ৷ বন্যা হলেই এখানে সেচ দফতর সক্রিয় হয় ৷ তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরাও সক্রিয় হয়ে ওঠেন ৷ 2 দিন আগে বন্যা আর ভাঙন নিয়ে আমি জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছি ৷ তাঁকে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার কথা বলেছি ৷ দিশা কমিটির বৈঠক করতে বলেছি ৷ দিশা থেকেই কোনও বড় প্রকল্পে হাতে নেওয়া যায় ৷ তিনি চলতি মাসের শেষের দিকে সেই বৈঠক ডাকবেন বলেছেন ৷

বিধায়ক তথা মন্ত্রী তাজমুল হোসেনকে না পাওয়া গেলেও হরিশ্চন্দ্রপুর 2 নম্বর ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তাবারক হোসেনকে বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি প্রথমে জানান, সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকেই তিনি বিষয়টি জানতে পেরেছেন ৷ অবশ্য মুহূর্তের মধ্যে নিজেকে শুধরে নিয়ে তিনি জানান, জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ ও মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা ওই বন্যাদুর্গত এলাকায় যাবেন ৷ কিন্তু বিজেপির সাংসদ ভাঙন রোধের কাজ কিছুতেই করতে পারবেন না ৷ তিনি তো পরিযায়ী পাখির মতো ৷ এই কাজ শুধুমাত্র আমাদের মন্ত্রীরাই করতে পারবেন ৷ এই খবর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পৌঁছলেই ওই এলাকায় উন্নয়ন পৌঁছে যাবে ৷ আমি নিজেও দুই ভাকুরিয়ায় বন্যা পরিস্থিতি দেখতে যাব ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.