ETV Bharat / state

করোনার বিধিনিষেধে এবারও বন্ধ রামকেলি মেলা

গত বছরের মতো এবছরও করোনা বিধিনিষেধের জেরে বন্ধ হল ইতিহাস প্রসিদ্ধ রামকেলি মেলা ৷ তবে রীতি মেনে সোমবার রামকেলিতে শ্রীচৈতন্যদেবের মূর্তিতে মাল্যদান করে উৎসবের সূচনা করেন ইংরেজবাজারের বিডিও সৌগত চৌধুরী ৷

MALDA
করোনার বিধিনিষেধে এবারও বন্ধ রামকেলি মেলা
author img

By

Published : Jun 15, 2021, 9:42 AM IST

মালদা, ১৫ জুন: জৈষ্ঠ্য মাসের সংক্রান্তি থেকে পরবর্তী সাতদিন ধরে চলে ইতিহাস প্রসিদ্ধ রামকেলি মেলা ৷ প্রতি বছর কয়েক লক্ষ মানুষের সমাবেশে গমগম করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের গৌড়ভূমি ৷ কোনও একসময় এই মেলায় শুধুমাত্র কড়ে আঙুল দেখে জীবনসঙ্গী নির্বাচন করতেন বৈষ্ণব পুরুষরা ৷ সেকারণে রামকেলির আরেক নাম গুপ্ত বৃন্দাবন ৷ রামকেলির ধুলোয় মিশে রয়েছে শ্রীচৈতন্যের ধর্মজাগরণের কাহিনি ৷ গত বছরের মতো এবছরও করোনা বিধিনিষেধের জেরে বন্ধ হল ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই মেলা ৷ তবে রীতি মেনে সোমবার রামকেলিতে শ্রীচৈতন্যদেবের মূর্তিতে মাল্যদান করে উৎসবের সূচনা করা হয় ৷

মালদা-মহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথ ধরে মালদা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে রামকেলি ৷ বাংলার প্রাচীন রাজধানী গৌড়ের মধ্যেই এর অবস্থান ৷ ষোড়শ শতাব্দীতে ধর্মজাগরণের মাধ্যমে সমাজ সংস্কারের কাজ শুরু করেন শ্রীচৈতন্য ৷ সেই কর্মসূচিতে তিনি নবদ্বীপ থেকে পদব্রজে বৃন্দাবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ৷ ১৫১৪ সালের জৈষ্ঠ্য সংক্রান্তির আগের দিন তিনি গৌড়ভূমে উপস্থিত হন ৷ তিনদিন তিনি গৌড়ে অবস্থান করেন ৷ তৎকালীন নবাব হুসেন শাহের মন্ত্রী পরিষদের অন্যতম দুই সদস্য সাকর মল্লিক ও দাবির খাস চৈতন্যদেবের সংস্পর্শে এসে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হন ৷ এরপর থেকে সাকর মল্লিক সনাতন ও দাবির খাস রূপ গোস্বামী নামে পরিচিত হন ৷ পরবর্তীতে তাঁরা সেই তমাল গাছের নীচে একটি মন্দির নির্মাণ করেন ৷ চৈতন্যদেবের গৌড়ে আগমন উপলক্ষ্যে রামকেলিতে মেলা শুরু করেন নিত্যানন্দ গোস্বামী বংশের গোস্বামী অটলবিহারী দেবানন্দ প্রভুপাদ ৷ সেই মেলাই রামকেলি মেলা নামে এখনও চলে আসছে ৷

করোনার বিধিনিষেধে এবারও বন্ধ রামকেলি মেলা

প্রতি বছর কয়েক লক্ষ বৈষ্ণব গোটা দেশ এমনকি বিদেশ থেকে এসে এই মেলায় অংশ নেন ৷ সাত বছর আগে এই মেলার দায়িত্ব নেয় মালদা জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসন ৷ জৈষ্ঠ্য সংক্রান্তি থেকে প্রতিদিন ভোর হলেই শুরু হয় বাউল গানের আসর ৷ চলে হরিনাম সংকীর্তনও ৷ আখড়ায় আখড়ায় নাচে-গানে মেতে ওঠেন বৈষ্ণব-বৈষ্ণবীরা ৷ দিন বাড়ার সঙ্গে মেলায় লোকের সংখ্যাও বাড়তে থাকে ৷ তবে করোনার বিধিনিষেধের কারণে গতবছরের মতো এবছরও বন্ধ রাখা হল রামকেলি মেলা ৷ তবে প্রথা মেনে মন্দিরগুলিতে পুজো করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে ৷

আরও পড়ুন: তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল, নাজিরহাট-1নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ

সোমবার রামকেলিতে চৈতন্যদেবের মূর্তিতে মাল্যদান করে উৎসবের সূচনা করেন ইংরেজবাজারের বিডিও সৌগত চৌধুরী ৷ উপস্থিতি ছিলেন জেলা পরিষদের সচিব দেবজিৎ বোস, কর্মাধক্ষ্য প্রতিভা সিংহ সহ অন্যান্যরা ৷ সৌগতবাবু বলেন, “করোনা বিধিনিষেধে রামকেলি মেলা বন্ধ রাখা হয়েছে ৷ শুধুমাত্র পুজো অর্চনা করা হবে মন্দিরগুলিতে ৷ জেলা পরিষদের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ গতবছরের মত এবছরও সাধারণ মানুষের সমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে ৷” এক ভক্ত বীরেন মণ্ডল বলেন, “জৈষ্ঠ্য সংক্রান্তিতে এটাই আমাদের আখড়া ৷ আমাদের আশ্রম বুলবুলির লক্ষ্মীপুরে ৷ গতবছর ধরে রামকেলি মেলা বন্ধ রয়েছে ৷ গত বছরও আমরা পুজো করে চলে গিয়েছি ৷ এবারও তাই করতে হবে ৷ এর আগে এই মেলা জাঁকজমকপূর্ণ হত ৷ ভক্তদের সমাগমে মাটিতে পা ফেলার জায়গা থাকত না ৷”

মালদা, ১৫ জুন: জৈষ্ঠ্য মাসের সংক্রান্তি থেকে পরবর্তী সাতদিন ধরে চলে ইতিহাস প্রসিদ্ধ রামকেলি মেলা ৷ প্রতি বছর কয়েক লক্ষ মানুষের সমাবেশে গমগম করে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের গৌড়ভূমি ৷ কোনও একসময় এই মেলায় শুধুমাত্র কড়ে আঙুল দেখে জীবনসঙ্গী নির্বাচন করতেন বৈষ্ণব পুরুষরা ৷ সেকারণে রামকেলির আরেক নাম গুপ্ত বৃন্দাবন ৷ রামকেলির ধুলোয় মিশে রয়েছে শ্রীচৈতন্যের ধর্মজাগরণের কাহিনি ৷ গত বছরের মতো এবছরও করোনা বিধিনিষেধের জেরে বন্ধ হল ইতিহাস প্রসিদ্ধ এই মেলা ৷ তবে রীতি মেনে সোমবার রামকেলিতে শ্রীচৈতন্যদেবের মূর্তিতে মাল্যদান করে উৎসবের সূচনা করা হয় ৷

মালদা-মহদিপুর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যপথ ধরে মালদা শহর থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে রামকেলি ৷ বাংলার প্রাচীন রাজধানী গৌড়ের মধ্যেই এর অবস্থান ৷ ষোড়শ শতাব্দীতে ধর্মজাগরণের মাধ্যমে সমাজ সংস্কারের কাজ শুরু করেন শ্রীচৈতন্য ৷ সেই কর্মসূচিতে তিনি নবদ্বীপ থেকে পদব্রজে বৃন্দাবনের উদ্দেশ্যে রওনা দেন ৷ ১৫১৪ সালের জৈষ্ঠ্য সংক্রান্তির আগের দিন তিনি গৌড়ভূমে উপস্থিত হন ৷ তিনদিন তিনি গৌড়ে অবস্থান করেন ৷ তৎকালীন নবাব হুসেন শাহের মন্ত্রী পরিষদের অন্যতম দুই সদস্য সাকর মল্লিক ও দাবির খাস চৈতন্যদেবের সংস্পর্শে এসে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষিত হন ৷ এরপর থেকে সাকর মল্লিক সনাতন ও দাবির খাস রূপ গোস্বামী নামে পরিচিত হন ৷ পরবর্তীতে তাঁরা সেই তমাল গাছের নীচে একটি মন্দির নির্মাণ করেন ৷ চৈতন্যদেবের গৌড়ে আগমন উপলক্ষ্যে রামকেলিতে মেলা শুরু করেন নিত্যানন্দ গোস্বামী বংশের গোস্বামী অটলবিহারী দেবানন্দ প্রভুপাদ ৷ সেই মেলাই রামকেলি মেলা নামে এখনও চলে আসছে ৷

করোনার বিধিনিষেধে এবারও বন্ধ রামকেলি মেলা

প্রতি বছর কয়েক লক্ষ বৈষ্ণব গোটা দেশ এমনকি বিদেশ থেকে এসে এই মেলায় অংশ নেন ৷ সাত বছর আগে এই মেলার দায়িত্ব নেয় মালদা জেলা পরিষদ ও জেলা প্রশাসন ৷ জৈষ্ঠ্য সংক্রান্তি থেকে প্রতিদিন ভোর হলেই শুরু হয় বাউল গানের আসর ৷ চলে হরিনাম সংকীর্তনও ৷ আখড়ায় আখড়ায় নাচে-গানে মেতে ওঠেন বৈষ্ণব-বৈষ্ণবীরা ৷ দিন বাড়ার সঙ্গে মেলায় লোকের সংখ্যাও বাড়তে থাকে ৷ তবে করোনার বিধিনিষেধের কারণে গতবছরের মতো এবছরও বন্ধ রাখা হল রামকেলি মেলা ৷ তবে প্রথা মেনে মন্দিরগুলিতে পুজো করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে ৷

আরও পড়ুন: তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল, নাজিরহাট-1নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশ

সোমবার রামকেলিতে চৈতন্যদেবের মূর্তিতে মাল্যদান করে উৎসবের সূচনা করেন ইংরেজবাজারের বিডিও সৌগত চৌধুরী ৷ উপস্থিতি ছিলেন জেলা পরিষদের সচিব দেবজিৎ বোস, কর্মাধক্ষ্য প্রতিভা সিংহ সহ অন্যান্যরা ৷ সৌগতবাবু বলেন, “করোনা বিধিনিষেধে রামকেলি মেলা বন্ধ রাখা হয়েছে ৷ শুধুমাত্র পুজো অর্চনা করা হবে মন্দিরগুলিতে ৷ জেলা পরিষদের কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ গতবছরের মত এবছরও সাধারণ মানুষের সমাগমে নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে ৷” এক ভক্ত বীরেন মণ্ডল বলেন, “জৈষ্ঠ্য সংক্রান্তিতে এটাই আমাদের আখড়া ৷ আমাদের আশ্রম বুলবুলির লক্ষ্মীপুরে ৷ গতবছর ধরে রামকেলি মেলা বন্ধ রয়েছে ৷ গত বছরও আমরা পুজো করে চলে গিয়েছি ৷ এবারও তাই করতে হবে ৷ এর আগে এই মেলা জাঁকজমকপূর্ণ হত ৷ ভক্তদের সমাগমে মাটিতে পা ফেলার জায়গা থাকত না ৷”

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.