মালদা, 25 মে : যশের প্রভাবে জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি ৷ এই বৃষ্টিতেই ভাঙছে নদীবাঁধ ৷ এখনই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে যশ আছড়ে পড়ার পর কী হবে তা ভেবে পাচ্ছেন না সাধারণ মানুষ ৷ ঘূর্ণিঝড় থেকে বাঁচাতে ইতিমধ্যেই নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দশ লাখেরও বেশি মানুষকে ৷ আলিপুর আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গঙ্গার এ পাড়ে যশের তেমন প্রভাব পড়বে না ৷
রাজ্যের সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী মালদার সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন, যশের প্রভাবে জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে ৷ এদিকে মালদা সংলগ্ন পতিরামের মাঝিয়ান আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক সুমন সূত্রধর পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, গৌড়বঙ্গের তিন জেলার মধ্যে যশের সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে মালদায় ৷ এখানে 52 থেকে 61 কিলোমিটার বেগে ঝড় হবে ৷ সঙ্গে থাকবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি ৷ এতে মালদা জেলায় ভালো ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে ৷
এদিকে যশের প্রভাবে আজ ভোর থেকেই জেলা জুড়ে বইছে ঝোড়ো হাওয়া, সঙ্গে দফায় দফায় বৃষ্টি ৷ গ্রামাঞ্চলের থেকেও যশ নিয়ে বেশি আতঙ্কে মালদা শহরের বাসিন্দারা ৷ যেখানে অল্প বৃষ্টিতেই শহর ভাসে, সেখানে টানা দু’তিনদিন ভারী বৃষ্টি হলে শহরের জলছবিটা ঠিক কী হবে, তা ভেবে পাচ্ছেন না কেউ ৷
এ বিষয়ে ইংরেজবাজার পৌরসভার বিদায়ী উপপুরপ্রধান ও পৌর প্রশাসকমণ্ডলীর প্রাক্তন সদস্য দুলাল সরকার আজ ইটিভি ভারতকে বলেন, “ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন 26 ও 27 মে যশের প্রভাব এই রাজ্যে ভয়ানক হবে ৷ মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলাতেও যশের বড়সড় প্রভাব পড়বে ৷ ইংরেজবাজার পৌর এলাকায় জল নিকাশের কোনও ব্যবস্থা নেই ৷ আমরা অনেক চেষ্টা করেও সেই সমস্যার সমাধান করতে পারিনি ৷ সামান্য বৃষ্টি হলে দু’তিনদিন জল দাঁড়িয়ে থাকে রাস্তায় ৷ তাই যশের প্রভাবে এই শহরের অবস্থা খুব খারাপ হবে ৷
আরও পড়ুন : যশ সামলাতে আজ রাতে নবান্নেই থাকছেন মুখ্যমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, বিদায়ী পৌরপ্রধান ও প্রশাসক নীহাররঞ্জন ঘোষ বিধানসভা নির্বাচনে চাঁচল কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ইস্তফা দিয়েছিলেন ৷ আমরা কয়েকজন শাসকমণ্ডলীর সদস্য ছিলাম ৷ নীহারবাবুর ইস্তফার পর প্রশাসকের পদে ছিলেন এগজিকিউটিভ অফিসার ৷ পরে তাঁকে সরিয়ে সদর মহকুমাশাসককে ওই পদে বসানো হলেও এখনও পর্যন্ত তিনি আমাদের সঙ্গে কোনরকম যোগাযোগ করেননি ৷ তবু শহরবাসীর স্বার্থে যশের প্রভাব কোন কোন ওয়ার্ডে পড়তে চলেছে, তা আমরা তাঁকে জানিয়েছি ৷ এর আগে জেলাশাসকের মাধ্যমে পাম্প ব্যবহার করে শহরের জমা জল বের করা হয়েছে ৷ কিন্তু এবার পাম্প করেও জমা জল বের করা যাবে না ৷ ফলে যশ চলে যাওয়ার পরেও শহরবাসীকে অন্তত চার-পাঁচদিন জলবন্দি থাকতে হবে ৷ এই অবস্থায় এই কেন্দ্রের বিজেপি বিধায়কেরও দেখা নেই ৷ তবু আমরা শহর সামাল দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করছি ৷”