মালদা, 12 মার্চ: নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে ইতিমধ্যে হাইকোর্টের রায়ে চাকরি খুইয়েছেন বহু নেতামন্ত্রীর পরিবার ও আত্মীয়রা । এ বারে একইসঙ্গে চাকরি খোয়ালেন তৃণমূল নেতার দুই মেয়ে ও জামাই (Malda TMC leader)। আদালতের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব । শাসকদলকে পালটা খোঁচা দিয়েছে বিজেপি ।
জানা গিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়ের ভিত্তিতে গ্রুপ সি পদে কর্মরত 842 জনের চাকরি গিয়েছে । হাইকোর্টের নির্দেশের ভিত্তিতে তড়িঘড়ি সেই তালিকা প্রকাশ করে কমিশন । তালিকা সামনে আসতেই দেখা যায় মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর 1 নম্বর ব্লকের কুশিদা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত উত্তর রামপুর গ্রামের বাসিন্দা তথা তৃণমূল নেতা প্রকাশ দাসের দুই মেয়ে মাম্পি দাস, শম্পা দাস এবং জামাই বিপ্লব দাসের নাম রয়েছে ওই তালিকায় । মাম্পি দাস হরিশ্চন্দ্রপুর হাইস্কুল, শম্পা দাস হরিশ্চন্দ্রপুর কিরণবালা বালিকা বিদ্যালয় এবং বিপ্লব দাস কনুয়া ভবানীপুর হাইস্কুলে ক্লার্ক পদে কর্মরত ছিলেন ।
আদালতের এই রায়ে খুশি এলাকার মানুষজন । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কিছু বাসিন্দা জানান, রাজনৈতিক দলে থাকার সুবিধে নিয়ে টাকার বিনিময়ে বহু চাকরি হয়েছে । অথচ উচ্চশিক্ষিত যোগ্য প্রার্থীরা বেকার হয়ে বসে রয়েছে । 24 লক্ষ টাকা দিয়ে এই তিনজন চাকরি পেয়েছিলেন । যদিও ঘটনা প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি প্রকাশ দাস ও তাঁর পরিবারের লোকজন ।
মালদা জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, “বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে । বিচারব্যবস্থা যখন এই সমস্ত নিয়োগকে বেআনি বলে তাঁদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশিকা জারি করেছে, সংশ্লিষ্ট সংস্থা তা করছে । এখানে দলের কিছু বলার নেই । কেউ বেআইনিভাবে কিছু করলে তার দায় দল নেবে না । দল কারও পাশেও থাকবে না ।”
আরও পড়ুন: এসএসসি-র গ্রুপ সি পদে ভুয়ো চাকরি বাতিল মুখ্যমন্ত্রীর ভাইঝির
উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সম্পাদক রুপেশ আগরওয়াল বলেন, রাজ্যের শাসকদলের আমলে প্রতিটি জায়গায় ভুয়ো শব্দের যোগ রয়েছে । ভুয়ো সিভিক ভলান্টিয়ার, ভুয়ো ডাক্তার এমনকী ভুয়ো বিধায়কেরও দেখা মিলেছে । আর শিক্ষক নিয়োগের পুরো প্যানেলটাই দুর্নীতিগ্রস্ত । বিচারক অভজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নিজে বলছেন, ঢাকি সমেত পুরো প্যানেলটাই বিসর্জন দিয়ে দেব । প্রকাশ দাসও চুনোপুটি । তিনি নিজের আত্মীয় স্বজনদের চাকরি করিয়েছিলেন । শাসকদলের যাঁরা এই দুর্নীতির ভাগ পাননি, তাঁরাই শুধু আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছেন । আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে সাধারণ মানুষ এই দলটাকে ডাস্টবিনে ছুড়ে ফেলে দেবে ।