মালদা, 3 এপ্রিল: দেড় ঘণ্টার সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে উচ্চমাধ্যমিক দিলেন এক ছাত্রী (attends HS Exam with new Born Baby) ৷ ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদার মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুর গ্রামে।
নির্বিঘ্নেই হল উচ্চমাধ্যমিকের প্রথমদিনের পরীক্ষা। কোথাও কোনও প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠেনি। কোথাও নকলের খবরও পাওয়া যায়নি। জেলা শিক্ষা দফতর জানিয়েছে, এবার মালদা জেলায় মোট 40 হাজার 482 জন উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন। এবার ছেলেদের কয়েক মাইল পিছিয়ে দিয়েছেন মেয়েরা। জেলায় এবার 22 হাজার 243 জন ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছেন। ছাত্র পরীক্ষার্থীর সংখ্যা 18 হাজার 239 জন। গোটা জেলায় 265টি পরীক্ষা গ্রহণ কেন্দ্র করা হয়েছে। ভেনুর সংখ্যা 17। প্রথম দিনের বাংলা পরীক্ষায় জেলার কোথাও থেকে কোনও অপ্রীতিকর খবর পাওয়া যায়নি।
জানা গিয়েছে, এদিন রাতে হঠাৎ প্রসব যন্ত্রণা ওঠে আয়েশা সুলতানার। তিনি এবারের উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। আয়েশা রতুয়া 2 নম্বর ব্লকের মহানন্দা হাইস্কুলের ছাত্রী। বাপের বাড়ি পুরাতন মালদার মহিষবাথানি গ্রাম পঞ্চায়েতের বলরামপুর গ্রামে। একই গ্রামে তাঁর শ্বশুরবাড়ি। বাবা বাবলু শেখ কয়েক বছর আগে মারা গিয়েছেন। অভাবের সংসারে মেয়েকে বেশিদিন রাখতে পারেননি মা রুলেখা বেওয়া। নাবালিকা মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেন গ্রামেরই যুবক বাপি শেখের সঙ্গে। বাপি মুম্বইয়ে মাছ বাজারে কাজ করেন। এদিন তীব্র প্রসব যন্ত্রণা ওঠে আয়েশার ৷ এরপর তাঁকে ভর্তি করা হয় পুরাতন মালদার মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ তিনি এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেন। তবে সন্তানের জন্ম দেওয়ার পরেই জানান, তিনি পরীক্ষা দেবেন। তা শুনেই হাসপাতালের চিকিৎসকরা কথা বলেন মালদা থানার পুলিশের সঙ্গে। পুলিশের তরফে যোগাযোগ করা হয় এলাকার সেন্টার ইনচার্জ স্বরাজবন্ধু ঘোষের সঙ্গে। স্বরাজবাবু বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতালেই আয়েশার পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। সদ্যোজাতকে কোলে নিয়ে বাংলা পরীক্ষা দেন তিনি।
আরও পড়ুন : Bagtui HS Students : আতঙ্ক দূরে সরিয়ে উচ্চমাধ্যমিক দিল বগটুইয়ের মেয়েরা
আয়েশার স্বামী বাপি শেখ বলেন, "গতকাল রাতে ওর প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। ভোর চারটে নাগাদ হাসপাতালে ভর্তি করি। সকাল পৌনে ন’টায় ও সন্তান প্রসব করে। বাচ্চা হওয়ার পরও পরীক্ষা দিতে চেয়েছিল ও । এখানকার চিকিৎসক, মালদা থানার পুলিশ কর্মীরা ওকে পরীক্ষা দিতে খুব সাহায্য করেছেন। এর জন্য তাঁদের ধন্যবাদ। আয়েষা খুব ভাল পরীক্ষা দিয়েছে।"
সেন্টার ইনচার্জ স্বরাজবাবু বলেন, "সন্তান প্রসবের পরেও আয়েষা সুলতানা পরীক্ষা দিতে চেয়েছিলেন। তা জানতে পেরে আমি হাসপাতালে তাঁর পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। পুলিশি নিরাপত্তায় তাঁর পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মহানন্দা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষককে গোটা ঘটনা জানানো হয়েছে। তিনি আয়েশার পরীক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ করবেন।"