মালদা, 28 মার্চ : মাস ছ'য়েক আগে এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে অপহরণ করে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল এলাকারই কিছু যুবকের বিরুদ্ধে ৷ তাদের মধ্যে একজন কুখ্যাত দুষ্কৃতীও ছিল বলে অভিযোগ ৷ এই ঘটনায় নির্যাতিতার অভিযোগের ভিত্তিতে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ অভিযোগ এরপর থেকেই অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য় নির্যাতিতা এবং তার পরিবারকে চাপ দিতে থাকে অভিযুক্তরা ৷ এমনকি নির্যাতিতার বাড়ি লক্ষ্য় করে বোমা-গুলি ছোড়ারও অভিযোগ উঠেছে ৷ গোটা ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ উঠেছে (Miscreants Attacked on Rape Victim) ৷ সবমিলিয়ে চাঞ্চল্য মালদার ভূতনি থানা এলাকায় ৷
ধর্ষণের পরই থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল ওই কিশোরী ৷ অভিযোগের উপর ভিত্তি করে অভিযুক্তদের আটক করে পুলিশ ৷ তবে মূল অভিযুক্ত ঝাড়খণ্ডে আশ্রয় নেয় বলে খবর ৷ নির্যাতিতার অভিযোগ, ক্রমাগত ফোন করে সে তাকে অভিযোগ প্রত্যাহার করার জন্য় চাপ দিতে থাকে ৷ তাতে ওই কিশোরী রাজি না-হওয়ায় কয়েকজন দুষ্কৃতী তাদের বাড়িতে আচমকা হামলা চালায় বলে দাবি করেছে ওই কিশোরী ৷ এমনকি নির্যাতিতার বাড়ি লক্ষ্য় করে গুলি চালানোর অভিযোগও উঠেছে ৷ তাতেও কাজ না-হওয়ায় রবিবার রাতে দুষ্কৃতীরা কিশোরীর বাড়িতে বোমাবাজি করে বলেও অভিযোগ ৷ গোটা ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছেন কিশোরীর বাবা ৷ যদিও পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় মূল অভিযুক্তের খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে ৷
প্রসঙ্গত, ঘটনাটি ভূতনি থানা এলাকার ৷ নির্যাতিতা কিশোরীর বাবা বলেন, "গত সেপ্টেম্বরে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়েকে এলাকা থেকে তুলে নিয়ে যায় কয়েকজন যুবক ৷ আশপাশের এলাকাতেই তাদের বাড়ি ৷ মেয়েকে তারা দু'দিন কোনও গোপন জায়গায় রেখে দিয়েছিল ৷" নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগ, দু'দিন তাদের মেয়েকে একাধিকবার ধর্ষণ করেছে অভিযুক্তরা ৷ শেষ পর্যন্ত তৃতীয় দিন তার মেয়েকে আধমরা অবস্থায় গ্রামে ফেলে পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা ৷ তাদের মধ্যে রয়েছে এলাকার কুখ্যাত দুষ্কৃতী বলে পরিচিত দীপক মণ্ডলও ৷
অন্য়দিকে মেয়ে নিখোঁজ হওয়ার পরদিনই ভূতনি থানায় অভিযোগ দায়ের করে নির্যাতিতার পরিবারের লোকেরা ৷ নির্যাতিতা নিজেও এই ঘটনায় অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করে থানায় ৷ নির্যাতিতার বাবার আরও অভিযোগ, থানায় অভিযোগ দায়ের হওয়ার পরও পুলিশ তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি ৷ পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে দীপক বারবার অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য আমাদের চাপ দিচ্ছে ৷ কখনও ফোনে, কখনও বা দলবল নিয়ে বাড়িতে এসে তারা হুমকি দিয়ে যাচ্ছে ৷ ওরা আমার বাড়ি লক্ষ্য করে গুলিও চালায় ৷ সেই ঘটনা নিয়েও থানায় অভিযোগ করেছি ৷ সমস্ত কাগজপত্র নিয়ে পুলিশ সুপারের কাছে গিয়েছি ৷ কিন্তু পুলিশ কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ৷ দীপক শাসিয়ে যাচ্ছে, অভিযোগ না-তুললে সে আমাদের খুন করে জেলে যাবে ৷"
আরও পড়ুন: শুভেন্দুর আর্জি খারিজ, পঞ্চায়েত নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট
দীপক মণ্ডল এলাকায় কুখ্যাত দুষ্কৃতী হিসাবে পরিচিত ৷ শুধু মালদাই নয়, বিহার ও ঝাড়খণ্ডেও একাধিক মামলায় অভিযুক্ত সে ৷ ভূতনিতে সরকারি আধিকারীকের গাড়িতেও বোমাবাজি করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে ৷ কিন্তু এখনও সে পুলিশের অধরা ৷ এনিয়ে পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদবকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “ধর্ষণের অভিযোগের ভিত্তিতে দীপক মণ্ডল ছাড়া বাকিদের গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ দীপক সম্ভবত ঝাড়খণ্ডে গা-ঢাকা দিয়ে আছে ৷ তার খোঁজে সবরকম তল্লাশি চালানো হচ্ছে ৷ রবিবারের বোমাবাজির ঘটনাতেও পৃথক মামলা রুজু হয়েছে ৷ আশা করছি, খুব দ্রুত দীপক ধরা পড়বে ৷”