মালদা, 2জুন : ভিন রাজ্য থেকে ফেরা শ্রমিকেরমৃত্যু ৷ গতকাল রাতে মালদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয় পীযূষ দাস নামে এককিশোরের৷ জানা গিয়েছে, মৃতকিশোরের বয়স 15বছর ৷বাড়ি হরিশচন্দ্রপুরের 2 ব্লকেরসুলতাননগর গ্রাম পঞ্চায়েতের মনোহরপুর গ্রামে৷
মুম্বইয়েপাইপ লাইনের কাজ করত ওই কিশোর৷ লকডাউনের ফলে কর্মহীন হয়ে পড়ায় গত রবিবার শ্রমিকস্পেশালে মালদায় আসে৷ এরপরেই সরকারি নির্দেশ মেনে স্থানীয় বারোদুয়ারি হাইস্কুলেরকোয়ারানটাইনে থাকে৷ রবিবার রাতে সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়ায় স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্র ভরতি করা হয়৷ পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায তাঁকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ওহাসপাতালে ভরতি করা হয়৷ সেখানেই মৃ্ত্যু হয় তাঁর৷ হাসপাতাল সূত্রের খবর, মৃতের লালারস সংগ্রহ করা হয়েছে৷
অপরদিকেপরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, শ্রমিকস্পেশালে ঠিকমতো খাবার না পেয়েই পীযূষের মৃত্যু হয়েছে৷ পীযূষের বাবা প্রদীপ দাসও ভিনরাজ্যেরশ্রমিক৷ তিনি এখন দিল্লিতে৷ এখনও বাড়ি ফিরতে পারেননি৷ বাড়িতে রয়েছেন মা পিংকি দাসও দুই বোন৷ তাঁর কাকা বচ্চন দাস বলেন, “সংসারের হাল ধরতে ছোট বয়সেই ভাইপো ভিনরাজ্যে কাজ করতে গিয়েছিল৷ সে মুম্বইয়ে পাইপ লাইন বসানোর কাজ করত৷ লকডাউন শুরু হলেতাঁর কাজ বন্ধ হয়ে যায়৷ বাড়ি ফেরার চেষ্টা করেও ব্যবস্থা করতে পারেনি৷ শেষ পর্যন্তশ্রমিক স্পেশাল ট্রেন ধরে সে রবিবার এলাকায় ফিরে আসে৷ সে জানিয়েছিল, ট্রেনে তাঁর খাবার জোটেনি৷ পাউরুটি, কেক আর চানাচুর, সঙ্গে জল খেয়ে সে তিনদিন ট্রেনেকাটিয়েছে৷ রবিবার রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়ে৷ প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়েযাওয়া হয়৷ সেখান থেকে তাঁকে রেফার করা হয় মালদা মেডিকেলে৷ গতকাল রাতে সে মারা যায়৷শুনেছি, মালদামেডিকেলে তাঁর লালারস নেওয়া হয়েছে৷ তাঁর মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হচ্ছে৷ তবেলালারসের রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি৷ আমরা চাই, তাঁর মৃতদেহ আমাদের হাতে তুলে দেওয়াহোক৷ আমরাই তাঁর শেষকৃত্য করব৷”
এপ্রসঙ্গে জেলা পরিষদের শিশু, নারী, জনকল্যাণ ও ত্রাণ কর্মাধ্যক্ষ মর্জিনাখাতুন বলেন, “এরআগেও ট্রেনে হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ব্লকের এক পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল৷ এবারহরিশ্চন্দ্রপুর ২ ব্লকের আরও এক কিশোর পরিযায়ী শ্রমিকের মৃত্যু হল৷ এই কিশোরেরঅকালমৃত্যু সত্যিই দুঃখজনক৷ কেন্দ্রীয় সরকার শ্রমিক স্পেশালে যে পরিযায়ী শ্রমিকদেরঘরে ফেরাচ্ছে, তাঁদেরখাবারের ব্যবস্থাও যদি করা হয়, তবে এমন ঘটনা ঘটে না ৷