মালদা, 29 মার্চ: দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ উঠছিল, দালালরাজ চলছে মালদা মেডিক্যালে (Malda Medical) ৷ টাকা ছাড়া এখানে কোনও কাজ হয় না ৷ মানুষের সেই অভিযোগের প্রমাণ মিলেছে ৷ রোগীকে এক ওয়ার্ড থেকে অন্য ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে পরিবারের কাছে টাকা দাবি করার অভিযোগ উঠেছিল মেডিক্যালের এক অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে ৷ অভিযোগ পেয়েই বিষয়টি খতিয়ে দেখে মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ ৷ অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় ওই অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যক্ষ তথা হাসপাতাল সুপার ৷ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে ওই কর্মীকে গ্রেফতার করেছে ইংরেজবাজার থানার পুলিশ (Medical Worker Arrested for Demanding money from patient family) ৷
মেডিক্যাল সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মেডিক্যালের মাতৃমা বিভাগে এক শিশুকে ভরতি করা হয়েছিল ৷ সেখানেই দু’দিন চিকিৎসা চলছিল বাচ্চাটির ৷ কিন্তু তার শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তাকে পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে স্থানান্তরিত করে দেন চিকিৎসকরা ৷ মাতৃমা বিভাগ থেকে পিকু ইউনিটের দূরত্ব মেরেকেটে তিনশো মিটার ৷ বাচ্চাটিকে ট্রলিতে চাপিয়ে পিকু ইউনিটে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার পরিবারের কাছে 200 টাকা দাবি করেন এক অস্থায়ী কর্মী আনন্দ ঘোষ ৷ কিন্তু বাচ্চাটির পরিবার আনন্দকে সেই টাকা দিতে রাজি হননি ৷
আনন্দ তাঁদের সাফ জানিয়ে দেন, টাকা না-দিলে তিনি রোগীকে অন্য ওয়ার্ডে নিয়ে যেতে পারবেন না ৷ এ বিষয়ে বেশ কিছুক্ষণ দু’পক্ষের মধ্যে বচসা চলে ৷ শেষ পর্যন্ত টাকা পাওয়ার পরই পিকু ইউনিটে শিশুটিকে নিয়ে যান আনন্দ ৷ তার কিছুক্ষণ পরেই বাচ্চাটি মারা যায় ৷ গোটা বিষয়টি নিয়ে মৃত শিশুর পরিবারের সদস্যরা মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করেন ৷ সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় এমএসভিপি ইংরেজবাজার থানায় ওই কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন ৷ তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে আনন্দকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ আজ তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়েছে ৷
এমএসভিপি পুরঞ্জয় সাহা বলেন, "মেডিক্যালের অস্থায়ী কর্মীর বিরুদ্ধে এক রোগীর পরিবার বেআইনিভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ দায়ের করেছিল ৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করি ৷ পুলিশ ওই কর্মীকে গ্রেফতার করেছে ৷ অবশ্য এর আগেও এমন অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে ৷ সেসব ক্ষেত্রেও আমরা পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলাম ৷ মেডিক্যালের কোনও কর্মীর বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে সাসপেন্ড করা হয় ৷"
আরও পড়ুন: ভুয়ো নিয়োগপত্র নিয়ে মেডিক্যালে যোগদানের চেষ্টা, গ্রেফতার 1