মালদা, 9 জানুয়ারি : দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে দিয়ে প্রশাসনিক কর্তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ করলেন শাসকদল পরিচালিত পৌরসভার প্রশাসক । ক্যামেরার সামনে একই অভিযোগ তুলে সরব হলেন তৃণমূলের একটি সংগঠনের জেলা সভাপতিও । পৌর নির্বাচনের মুখে এমন ঘটনায় হতবাক সভায় উপস্থিত সবাই । শনিবার পুরাতন মালদার মঙ্গলবাড়ি জিকে হাইস্কুলে তৃণমূল উদ্বাস্তু সেল আয়োজিত এক সভায় এই ঘটনা ঘটে (allegation of corruption in land lease in Malda)।
বাংলাদেশ থেকে দীর্ঘদিন আগে এদেশে এলেও নিজেদের নামে দলিল করাতে পারছেন না উদ্বাস্তু মানুষজন । সরকারি জমির পাট্টা থেকেও ব্রাত্য থাকছেন তাঁরা । এইসব উদ্বাস্তুদের মধ্যে মতুয়া সম্প্রদায়ের লোকজনই বেশি । এই সমস্যা নিয়েই তৃণমূল উদ্বাস্তু সেল জিকে হাইস্কুলে এক সভার আয়োজন করে । সভায় উপস্থিত ছিলেন পুরাতন মালদা পৌরসভার প্রশাসক বশিষ্ঠ ত্রিবেদী, রতুয়ার বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায়-সহ আরও অনেকে।
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বশিষ্ঠবাবু চাঁচাছোলা ভাষায় ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরকে আক্রমণ করেন । তিনি বলেন, “সরকারি জমির পাট্টা বিলির ক্ষেত্রে প্রচণ্ড দুর্নীতি হচ্ছে । পাট্টা বিলিতে দালালচক্র ঢুকে পড়েছে । সেকথা আমি জেলাশাসককেও জানিয়েছি । নিজেদের জমির দলিল কিংবা সরকারি জমির পাট্টা না পেয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ সম্প্রতি মমতাবালা ঠাকুরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন । তিনি এনিয়ে আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন । আমি তাঁকেও জানিয়ে দিই, এই জেলার জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিকও পাট্টা বিলি দুর্নীতিতে জড়িত । ওই দফতর সহ আরও কিছু লোক কাঠা পিছু 20 থেকে 40 হাজার টাকার বিনিময়ে নদীর ধারের জমির পাট্টা দিচ্ছে । অথচ নদীর ধারের জায়গা সেই দফতরের নয় । তবু গরিব মানুষের স্বার্থে আমি সেভাবে প্রতিবাদ করিনি । এই বিষয়টিও আমি জেলাশাসককে জানিয়েছি । তাঁকে সাফ জানিয়ে দিয়েছি, সরকারিভাবে তিনি নথি পাঠালে তবেই আমি তাতে স্বাক্ষর করব । তিনি বিষয়টি তদন্ত করে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন ।”
আরও পড়ুন: বালি মাফিয়া-তৃণমূল জেলা সভাপতির আঁতাতের অভিযোগ, হইচই আলিপুরদুয়ারে
সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিধায়ক সমর মুখোপাধ্যায় বলেন, “এই জেলায় গাজোল, বামনগোলা, হবিবপুর, পুরাতন মালদা, ইংরেজবাজার এবং বৈষ্ণবনগর ব্লকে মতুয়াদের বসবাস বেশি । বিধায়ক হিসাবে আমারও তাঁদের সমস্যা মেটানোর দায়িত্ব রয়েছে । আজ আমি মতুয়া নেতৃত্বকে নিজেদের সমস্যার কথা ব্লক ধরে জানাতে বলেছি । কোন ব্লকে কটা উদ্বাস্তু কলোনি রয়েছে তাও জানাতে বলেছি । এই দফতরের মন্ত্রী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁকে আমরা মতুয়াদের সমস্যার কথা জানাব । আমি শুনেছি, একজন সরকারি আধিকারিক জমির পাট্টা দেওয়ার জন্য উপভোক্তাদের কাছে কাঠা পিছু 50 হাজার টাকা করে দাবি করে । এনিয়ে আমি কলকাতাতেও অভিযোগ করেছি ।”