ETV Bharat / state

বেতনের বন্দোবস্ত নেই, মালদা মেডিক্যালে ছাঁটাইয়ের মুখে শতাধিক অস্থায়ী কর্মী

রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে আর বেতন দেওয়া সম্ভব নয় ৷ তাই দীর্ঘদিনের অস্থায়ী কর্মীদের কার্যত ছাঁটাইয়ের নির্দেশকা জারি করল মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷ প্রতিবাদে বিক্ষোভে বসেছেন কর্মহীন হতে চলা অস্থায়ী কর্মীরা ৷ তাঁদের নিয়োগই নাকি বেআইনি ছিল ৷ বলছে, মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ ৷

Malda Medical College and Hospital order to sack contractual staffs
বেতনের বন্দোবস্ত নেই, মালদা মেডিক্যালে ছাঁটাইয়ের মুখে শতাধিক অস্থায়ী কর্মী
author img

By

Published : Jul 16, 2021, 6:10 PM IST

মালদা, 16 জুলাই : সরকারি নিয়ম না মেনেই মালদা মেডিক্যালে নিয়োগ করা হয়েছিল অস্থায়ী কর্মী ৷ তাঁদের মাসিক বেতনও দেওয়া হত নিয়মবিধি তোয়াক্কা না করেই ৷ প্রায় 20 বছর ধরে এমনটাই চলে আসছিল ৷ কিন্তু যে তহবিল থেকে এই কর্মীদের এতদিন বেতন দেওয়া হয়েছে, প্রতি মাসে প্রায় 12 লাখ টাকা গুনতে গুনতে সেই ভাঁড়ার এখন ফাঁকা ৷ তাই মালদা মেডিক্যালের 177 জন অস্থায়ী কর্মীকে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী অগস্ট মাস থেকে তাঁদের আর প্রয়োজন নেই ৷ ফলে কাজ হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন ওই কর্মীরা ৷ কাজে বহাল রাখার দাবিতে শুক্রবার তাঁরা মালদা মেডিক্য়ালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হন ৷ যদিও কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, এই কর্মীদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে স্বাস্থ্য ভবনের সিদ্ধান্তের উপর ৷

আরও পড়ুন : 30 জন অস্থায়ী কর্মীকে ছাঁটাই কালিয়াগঞ্জ পৌরবোর্ডের

অস্থায়ী কর্মীরা জানাচ্ছেন, তাঁদের কেউ 10 বছর, কেউ 15 বছর আবার কেউ 20 বছর ধরে এই হাসপাতালে কাজ করে আসছেন ৷ হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগেই তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে ৷ বৃহস্পতিবার হঠাৎই তাঁদের নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, অগস্ট মাস থেকে তাঁদের আর প্রয়োজন নেই ৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁদের ভবিষ্যৎ যেমন অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়েছে, তেমনই হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবাতেও ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে ৷

কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায় বিক্ষোভে সামিল অস্থায়ী কর্মীরা ৷

অনিমেষ রায় নামে এক অস্থায়ী কর্মী বলেন, “আমরা মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছি ৷ আমরা চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে কাজ করি ৷ অনেকে 20বছর ধরেও কাজ করছেন ৷ তখন মেডিকেল কলেজ তৈরি হয়নি ৷ অথচ গতকাল একটি নোটিস জারি করে বলা হয়েছে, 1 অগস্ট থেকে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের দিয়ে আর কাজ করানো যাবে না ৷ কর্তৃপক্ষ এর পিছনে একটাই কারণ দেখিয়েছে ৷ সেটা হল, আমাদের বেতন দেওয়ার মতো কোনও ফান্ড নেই ৷ এর আগে যে ফান্ড থেকে আমাদের বেতন হত, সেখানে আর অর্থ নেই ৷ আমাদের কাজে বহাল রাখার জন্য আমরা একাধিকবার কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছি ৷ বিক্ষোভ দেখিয়েছি ৷ কর্তৃপক্ষ আমাদের বিষয়টি দেখেছে ৷ 2019 সালে আমাদের স্থায়ীকরণের জন্য স্বাস্থ্য ভবনে ই-ফাইল পাঠানো হয়েছে ৷ কিন্তু সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি ৷’’

আরও এক বিক্ষোভকারী প্রিয়া সিং বলেন, “গতকাল নোটিস দিয়ে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সামনের মাস থেকে আমাদের আর বেতন দেওয়া যাবে না ৷ এতদিন আমাদের রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে বেতন দেওয়া হচ্ছিল ৷ সেখান থেকে আর বেতন হবে না ৷ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, জেলাশাসক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে নোটিসে জানানো হয়েছে ৷ অথচ নিরাপত্তাকর্মীদের ছাঁটাই করা হচ্ছে না ৷ তাঁদের অন্য পদে রেখে কাজ করানো হচ্ছে ৷ সেই নিরাপত্তাকর্মীদের সংখ্যা 153 জনেরও বেশি ৷ তাঁদের এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছে ৷ আমরা মেডিক্যালের সহকারী অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল সুপারের অনুমোদনে কাজ পেয়েছি ৷ এমএসভিপি বলছেন, জেলাশাসকের নির্দেশে আমাদের আর কাজে বহাল রাখা যাবে না ৷ আর যতক্ষণ না স্বাস্থ্য ভবন থেকে আমাদের ই-ফাইল অনুমোদিত হয়ে আসছে, ততক্ষণ আমাদের দিয়ে কাজ করানো যাবে না ৷ আমরা সম কাজে সম বেতন পাই না ৷ ছুটিও পাই না। কাজে আসতে দেরি হলে শো-কজ করা হয় ৷ তবু কাজ করে যাই ৷ আমাদের বলে দেওয়া হয়েছে, সামনে মাস থেকে আমাদের আর প্রয়োজন নেই ৷ আমরা কাজের স্থায়িত্বের দাবিতে ধরনায় বসেছি ৷’’

আরও পড়ুন : বিশ্বভারতীর আধিকারিককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ নিরাপত্তারক্ষীদের

এই কর্মীদের নিয়োগ যে বেআইনি ছিল তা মেনে নিয়েছেন এমএসভিপি পুরঞ্জয় সাহা ৷ তিনি বলেন, “মেডিক্যালে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিযুক্ত অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন 146 জন ৷ এতদিন ধরে রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে তাঁদের বেতন দেওয়া হচ্ছিল। সেই ফান্ড এখন আর নেই ৷ এই কর্মীদের স্থায়ীকরণের জন্য আমরা স্বাস্থ্য ভবনে ই-ফাইল পাঠিয়েছি ৷ প্রতিনিয়ত এ নিয়ে খোঁজ খবর রাখছি। এই কর্মীদের নোটিস দেওয়া হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্বাস্থ্য ভবন থেকে অনুমোদন না এলে আগামী 1 অগস্ট থেকে তাঁদের আর কাজে আসার প্রয়োজন নেই ৷ কারণ, এতদিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়ম বহির্ভূতভাবেই রোগী কল্যাণ সমিতির ফান্ড থেকে তাঁদের বেতন দেওয়া হচ্ছিল ৷ এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সেই ফান্ড বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ৷’’

মালদা, 16 জুলাই : সরকারি নিয়ম না মেনেই মালদা মেডিক্যালে নিয়োগ করা হয়েছিল অস্থায়ী কর্মী ৷ তাঁদের মাসিক বেতনও দেওয়া হত নিয়মবিধি তোয়াক্কা না করেই ৷ প্রায় 20 বছর ধরে এমনটাই চলে আসছিল ৷ কিন্তু যে তহবিল থেকে এই কর্মীদের এতদিন বেতন দেওয়া হয়েছে, প্রতি মাসে প্রায় 12 লাখ টাকা গুনতে গুনতে সেই ভাঁড়ার এখন ফাঁকা ৷ তাই মালদা মেডিক্যালের 177 জন অস্থায়ী কর্মীকে নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, আগামী অগস্ট মাস থেকে তাঁদের আর প্রয়োজন নেই ৷ ফলে কাজ হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন ওই কর্মীরা ৷ কাজে বহাল রাখার দাবিতে শুক্রবার তাঁরা মালদা মেডিক্য়ালের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান বিক্ষোভে শামিল হন ৷ যদিও কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছে, এই কর্মীদের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে স্বাস্থ্য ভবনের সিদ্ধান্তের উপর ৷

আরও পড়ুন : 30 জন অস্থায়ী কর্মীকে ছাঁটাই কালিয়াগঞ্জ পৌরবোর্ডের

অস্থায়ী কর্মীরা জানাচ্ছেন, তাঁদের কেউ 10 বছর, কেউ 15 বছর আবার কেউ 20 বছর ধরে এই হাসপাতালে কাজ করে আসছেন ৷ হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগেই তাঁদের নিয়োগ করা হয়েছে ৷ বৃহস্পতিবার হঠাৎই তাঁদের নোটিস দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়, অগস্ট মাস থেকে তাঁদের আর প্রয়োজন নেই ৷ এই পরিস্থিতিতে তাঁদের ভবিষ্যৎ যেমন অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়েছে, তেমনই হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবাতেও ব্যাঘাত ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে ৷

কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায় বিক্ষোভে সামিল অস্থায়ী কর্মীরা ৷

অনিমেষ রায় নামে এক অস্থায়ী কর্মী বলেন, “আমরা মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে দীর্ঘদিন ধরে পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছি ৷ আমরা চুক্তিভিত্তিক কর্মী হিসাবে কাজ করি ৷ অনেকে 20বছর ধরেও কাজ করছেন ৷ তখন মেডিকেল কলেজ তৈরি হয়নি ৷ অথচ গতকাল একটি নোটিস জারি করে বলা হয়েছে, 1 অগস্ট থেকে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের দিয়ে আর কাজ করানো যাবে না ৷ কর্তৃপক্ষ এর পিছনে একটাই কারণ দেখিয়েছে ৷ সেটা হল, আমাদের বেতন দেওয়ার মতো কোনও ফান্ড নেই ৷ এর আগে যে ফান্ড থেকে আমাদের বেতন হত, সেখানে আর অর্থ নেই ৷ আমাদের কাজে বহাল রাখার জন্য আমরা একাধিকবার কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছি ৷ বিক্ষোভ দেখিয়েছি ৷ কর্তৃপক্ষ আমাদের বিষয়টি দেখেছে ৷ 2019 সালে আমাদের স্থায়ীকরণের জন্য স্বাস্থ্য ভবনে ই-ফাইল পাঠানো হয়েছে ৷ কিন্তু সেই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হয়নি ৷’’

আরও এক বিক্ষোভকারী প্রিয়া সিং বলেন, “গতকাল নোটিস দিয়ে আমাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, সামনের মাস থেকে আমাদের আর বেতন দেওয়া যাবে না ৷ এতদিন আমাদের রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে বেতন দেওয়া হচ্ছিল ৷ সেখান থেকে আর বেতন হবে না ৷ হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান, জেলাশাসক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে নোটিসে জানানো হয়েছে ৷ অথচ নিরাপত্তাকর্মীদের ছাঁটাই করা হচ্ছে না ৷ তাঁদের অন্য পদে রেখে কাজ করানো হচ্ছে ৷ সেই নিরাপত্তাকর্মীদের সংখ্যা 153 জনেরও বেশি ৷ তাঁদের এজেন্সির মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়েছে ৷ আমরা মেডিক্যালের সহকারী অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল সুপারের অনুমোদনে কাজ পেয়েছি ৷ এমএসভিপি বলছেন, জেলাশাসকের নির্দেশে আমাদের আর কাজে বহাল রাখা যাবে না ৷ আর যতক্ষণ না স্বাস্থ্য ভবন থেকে আমাদের ই-ফাইল অনুমোদিত হয়ে আসছে, ততক্ষণ আমাদের দিয়ে কাজ করানো যাবে না ৷ আমরা সম কাজে সম বেতন পাই না ৷ ছুটিও পাই না। কাজে আসতে দেরি হলে শো-কজ করা হয় ৷ তবু কাজ করে যাই ৷ আমাদের বলে দেওয়া হয়েছে, সামনে মাস থেকে আমাদের আর প্রয়োজন নেই ৷ আমরা কাজের স্থায়িত্বের দাবিতে ধরনায় বসেছি ৷’’

আরও পড়ুন : বিশ্বভারতীর আধিকারিককে ঘেরাও করে বিক্ষোভ নিরাপত্তারক্ষীদের

এই কর্মীদের নিয়োগ যে বেআইনি ছিল তা মেনে নিয়েছেন এমএসভিপি পুরঞ্জয় সাহা ৷ তিনি বলেন, “মেডিক্যালে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে নিযুক্ত অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন 146 জন ৷ এতদিন ধরে রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে তাঁদের বেতন দেওয়া হচ্ছিল। সেই ফান্ড এখন আর নেই ৷ এই কর্মীদের স্থায়ীকরণের জন্য আমরা স্বাস্থ্য ভবনে ই-ফাইল পাঠিয়েছি ৷ প্রতিনিয়ত এ নিয়ে খোঁজ খবর রাখছি। এই কর্মীদের নোটিস দেওয়া হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, স্বাস্থ্য ভবন থেকে অনুমোদন না এলে আগামী 1 অগস্ট থেকে তাঁদের আর কাজে আসার প্রয়োজন নেই ৷ কারণ, এতদিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী নিয়ম বহির্ভূতভাবেই রোগী কল্যাণ সমিতির ফান্ড থেকে তাঁদের বেতন দেওয়া হচ্ছিল ৷ এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সেই ফান্ড বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে ৷’’

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.