মালদা, 20 অক্টোবর : কোরোনা সংক্রমণ আটকাতে পুজোমণ্ডপগুলিতে দর্শনার্থীদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা হাইকোর্ট । সোমবার এই নির্দেশ দেয় বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ। কিন্তু আদালত নির্দেশ দিলেও উৎসবমুখর বাঙালি কি বছরের এই ক'টি দিন নিজেদের ঘরবন্দী করে রাখবে? তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে প্রায় সবারই ।
সরকার কিংবা প্রশাসনের পক্ষে যতই কোরোনা সতর্কতায় মানুষকে ঘর অথবা পাড়ার মধ্যে থাকার আবেদন জানানো হোক, সেই আবেদনে কতজন কান দেবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। তাই পুজোর পর সংক্রমণ এক ধাক্কায় কয়েকগুণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে মালদা জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। একই আশঙ্কা মালদা মেডিকেল কর্তৃপক্ষেরও। তাই প্রশাসনের নির্দেশে সেখানে কোভিড ইউনিটের শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে । 150 শয্যার ওই ইউনিট পরিবর্তিত হচ্ছে 250 শয্যায় ।
বেশ কিছুদিন কোরোনা সংক্রমনের রাশ টেনে রাখা গেলেও দিন পনেরো ধরে ফের জেলায় বাড়ছে সংক্রমণ । প্রায় প্রতিদিনই সংক্রমিত হচ্ছে 100 জনের বেশি মানুষ । স্বাস্থ্য দপ্তর ও বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পুজোর বাজারে ভিড় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়তে শুরু করেছে সংক্রমণ । বাড়ছে মৃত্যুও।
সম্প্রতি মালদা এসে কোভিড 19-এ নিযুক্ত অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি সুশান্ত রায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন । তিনি জানিয়েছিলেন, স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে ভিড় বাজারে মানুষের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে সেখানেই পরীক্ষা করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা । কারোর রিপোর্ট পজিটিভ হলে বাজার থেকেই তাঁকে পাঠানো হবে কোভিড হাসপাতালে । একইসঙ্গে রাস্তাঘাটে মানুষ কোরোনাবিধি মেনে চলছে কিনা তাও দেখবে প্রশাসন । সুশান্ত রায়ের এই নির্দেশের পর মালদা শহরের রাস্তায় মাস্কবিহীনদের ধরপাকড় শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত বাজারে স্বাস্থ্যকর্মীদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করতে দেখা যায়নি ।
কলকাতা থেকে মালদা মেডিকেলের সহকারী অধ্যক্ষ ও হাসপাতাল সুপার অমিত দাঁ জানিয়েছেন, "পুজোর পর সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কায় প্রশাসনের নির্দেশে আমরা মেডিকেলের কোভিড বিবাগের শয্যার সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি । বর্তমানে ট্রমা কেয়ার ইউনিটে 150 বেডের যে ইউনিট রয়েছে, তার উপরতলায় আরও 100 বেডের ইউনিট তৈরির কাজ শুরু হয়েছে । দ্রুতগতিতে সেই কাজ চলছে। আগামী 28 অক্টোবরের মধ্যে আমরা এই ইউনিটও চালু করে দেব । তবে মানুষের কাছে আমাদের আবেদন, এবার পুজোয় যেন সবাই নিজেদের ঘরবন্দী রাখেন । নিজেরা ভালো থাকলে সবাই ফের উৎসবে শামিল হতে পারবেন । কোরোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সবাইকে একজোট হয়ে কাজ করতে হবে । সরকার ও বিশেষজ্ঞদের নির্দেশ আমাদের সবাইকেই মেনে চলতে হবে । তা না হলে পুজোর পর পরিস্থিতি সামাল দেওয়া আরও কঠিন হয়ে যাবে । "