মালদা, 27 জুলাই: গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের এক দাপুটে নেতার বিরুদ্ধে । এ নিয়ে জেলা আদালত ও পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই বধূ । তাঁর অভিযোগ খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশ আধিকারিক । ওই নেতার অপরাধ প্রমাণিত হলে, তাঁকে শাস্তি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি (Malda house wife allegedly raped by TMC leader) ।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে এই অভিযোগ হাতছাড়া করেনি বিজেপি । এই ঘটনা নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে বিঁধতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির । যদিও নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা ।
বধূর অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী, প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা জাহাঙ্গির আলম ওরফে ফিটু তাঁকে কুপ্রস্তাব দিচ্ছিল । তিনি রাজি না হওয়ায় তাঁর উপর হামলা চালাত সে । এমনকী লোক দিয়ে তাঁকে মারার চেষ্টাও করেছিল । জুন মাসের 12 তারিখ রাত 8.40 মিনিট নাগাদ ফিটু জোর করে তাঁদের বাড়িতে ঢোকে । তাঁর উপর অত্যাচার চালায়, ধর্ষণ করে । পাশাপাশি নেতা তাঁকে হুমকি দেয়, বাইরে তার লোক দাঁড়িয়ে আছে । তাই চিৎকার করে কোনও লাভ হবে না । এই গ্রাম ও থানা দুই-ই তার হাতে । থানায় অভিযোগ করলে সে তাঁকে গ্রামছাড়া করে দেবে । তাঁকে খুনেরও হুমকি দেয় তৃণমূল নেতা ।
আরও পড়ুন: স্ত্রী'র সহযোগিতায় পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ শ্বশুরের বিরুদ্ধে
এখন ফিটু সবসময় তাঁর বাড়িতে লোক পাঠাচ্ছে । মহিলা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন । এনিয়ে অভিযোগ দায়ের করতে তিনি মালদা থানায় গিয়েছিলেন । কিন্তু সেখানে তাঁর অভিযোগ নেওয়া হয়নি ৷ উলটে তাঁর গায়েই চরিত্রহীনের তকমা লাগিয়ে থানা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে । তাই তিনি আদালতের পাশাপাশি আজ পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন ।
এদিকে অভিযুক্ত নেতা জাহাঙ্গির আলমের দাবি, তাঁর বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন ওই মহিলা । ওই মহিলার দাবি অনুযায়ী গত 12 জুন নাকি তিনি ধর্ষণ করেছেন । অথচ এতদিন ওই মহিলা থানায় কোনও অভিযোগ করেনি । গ্রামেও কাউকে কিছু জানাননি । 14 তারিখ ওই মহিলা আদালতে অভিযোগ দায়ের করে এবং সেখান থেকে 7-8 দিন পর অভিযোগটি থানায় এসেছে ।
নেতার পালটা অভিযোগ, ওই মহিলা একাধিক পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িত । এর আগে গ্রামে তাঁকে নিয়ে বিচার হয়েছে । একটি ছেলের সঙ্গে ওই মহিলা পালিয়ে যান ৷ তারপর সেই ছেলেটির নামেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয় । তাই তিনি ওই মহিলাকে সামাজিকভাবে শাসন করেছিলেন মাত্র । যে সময় তিনি ওই মহিলাকে ধর্ষণ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, সেই সময় তিনি পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে বৈঠক করছিলেন । তার সিসিটিভির ফুটেজও নেতা মালদা থানায় পাঠিয়ে দিয়েছেন ।
জেলা তৃণমূল সভাপতি আবদুর রহিম বকসি অবশ্য বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে এড়িয়ে গিয়েছেন । তবে তিনি খোঁজ নিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন । কেউ অন্যায় করলে দল তাঁর পাশে নেই বলে জানিয়েছেন ঘাসফুলের জেলা সভাপতি । আইন আইনের পথে চলবে । বিজেপির উত্তর মালদা সাংগঠনিক জেলার সভাপতি উজ্জ্বল দত্তের প্রতিক্রিয়া, এটা তৃণমূলের সংস্কৃতি । ওরা মা-বোনদের সম্মান দিতে জানে না । এই ঘটনায় পুলিশ কোনও ব্যবস্থা না নিলে, তারা আন্দোলনে নামবে, হুঁশিয়ারি গেরুয়া শিবিরের ।
আরও পড়ুন: ধর্ষণের ঘটনায় মুকুন্দপুর এলাকায় লাইট লাগানোর নির্দেশ হাইকোর্টের