মালদা, 12 মে : জেলায় কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে ৷ এইদিকে আগেই জেলায় ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টারগুলি বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন ৷ যে কয়টিতে এখনও কয়েকজন রয়েছেন, সেগুলিও বন্ধ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল ৷ তবে পরিস্থিতি আবার ঘোরালো হতে শুরু করায় ফের জেলায় ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার চালু করার উদ্যোগ নিচ্ছে প্রশাসন ৷ যদিও এবার আর 14 দিন নয়, ভিনরাজ্য থেকে জেলায় ফিরে আসা মানুষের লালারস সংগ্রহ করার পর তার রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত তাঁদের সেখানে রাখা হবে ৷
রিপোর্টের ভিত্তিতে কোরোনা নেগেটিভদের হোম কোয়ারানটিনে পাঠানো হবে ৷ এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত জেলা প্রশাসন বিস্তারিতভাবে কিছু না জানালেও প্রশাসনের এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন পুরাতন মালদা পৌরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ ৷ তিনি জানিয়েছেন, এবার আর স্কুল-কলেজ নয়, বিভিন্ন বেসরকারি লজ ও কমিউনিটি হলে ভিনরাজ্য ফেরত মানুষের থাকার ব্যবস্থা করা হচ্ছে ৷
কোরোনা প্রাদুর্ভাব শুরু হতেই মালদা জেলার 15টি ব্লকে 33টি ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার খোলে জেলা প্রশাসন ৷ এই সেন্টারগুলিতে প্রায় তিন হাজার লোকের থাকার ব্যবস্থা করা হয় ৷ কিন্তু প্রথম পর্যায়ে জেলায় কোরোনা আক্রান্তের সন্ধান না মেলায় সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই সেন্টারগুলি বন্ধ করা শুরু হয় ৷ এই মুহূর্তে গোটা জেলায় মাত্র দুটি সেন্টারেই লোকজন রয়েছে বলে জানা গিয়েছে ৷ এদিকে, সম্প্রতি জেলায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৷ এই পরিস্থিতিতে কেন সরকারি কোয়ারানটিন সেন্টারগুলি বন্ধ করা হয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ ৷ এনিয়ে হরিশ্চন্দ্রপুর 1 ব্লকে বিক্ষোভও দেখান সেখানকার বাসিন্দারা ৷
এখন প্রতিদিনই ভিনরাজ্য থেকে জেলায় ঢুকতে শুরু করেছে মানুষজন ৷ তাঁদের হোম কোয়ারানটিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হলেও কেউ তা মানছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ এই নিয়ে আলোচনা হয় নবান্নেও ৷ জেলা প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে রাজ্য সরকারের উপরমহলের বেশ কয়েকজন কর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে সরকারি সূত্রের খবর ৷ এতেই খানিকটা নড়েচড়ে বসেছে জেলা প্রশাসন ৷
জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র জানিয়েছেন, সব ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার বন্ধ হওয়ার খবর সঠিক নয় ৷ প্রয়োজন অনুযায়ী সেখানে ভিনরাজ্য থেকে ফেরা মানুষকে পাঠানো হচ্ছে ৷ গতকালই শতাধিক মানুষকে ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিনে পাঠানো হয়েছে ৷ জেলাশাসক এর বেশি আর কিছু বলতে না চাইলেও পুরাতন মালদা পৌরসভার চেয়ারম্যান কার্তিক ঘোষ বলেন, “পুরাতন মালদা ব্লকে মোট তিনটি সরকারি কোয়ারানটিন সেন্টার করা হয়েছিল ৷ সেখান থেকে শ্রমিকরা 14 দিন পর বাড়ি চলে যাওয়ায় সেই সেন্টারগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ৷ কিন্তু এখন প্রতিদিন ভিনরাজ্যের মানুষ ঘরে ফিরে আসছেন ৷ উদ্বেগ এতে বাড়ছে ৷ তাই ফের ইন্সটিটিউশনাল কোয়ারানটিন সেন্টার চালু করা হবে ৷ তবে এবার কোনও স্কুল বা কলেজ নয়, এলাকার বেসরকারি লজ ও কমিউনিটি সেন্টারগুলিতে সেই সেন্টার করা হবে ৷ এলাকায় ফিরে আসা মানুষকে সেখানে 2-3 দিন রাখা হবে ৷ তার মধ্যেই তাঁদের লালারস পরীক্ষা করা হবে ৷ রিপোর্ট এলে কোরোনা নেগেটিভদের হোম কোয়ারানটিনে থাকতে হবে ৷ পজ়িটিভদের কোভিড হাসপাতালে পাঠানো হবে ৷”