মালদা, 22 জুন : কথা ছিল আগামিকাল অর্থাৎ বুধবার কালিয়াচকের পুরানো 16 মাইল গ্রামের অভিশপ্ত বাড়িতে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে ৷ তার আগে মঙ্গলবার বিকেলেই সেই প্রক্রিয়া শেষ করেছে পুলিশ ৷ খুনি আসিফ মহম্মদ ও তার দাদা আরিফকে নিয়ে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে খুনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ চলে ৷ পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-সহ একাধিক আধিকারিকের সামনে আসিফ দেখায়, কীভাবে সে বাবা-মা, ছোট বোন ও ঠাকুমাকে খুন করেছিল ৷ পুনর্নির্মাণে চারটি ম্যানেকুইনও ব্যবহার করা হয় ৷ আরিফও পুলিশকে খুনের গোটা ঘটনা দেখায় ৷ কীভাবে সে প্রাণে বেঁচেছিল, তাও দেখায় পুলিশকর্তাদের ৷ তবে আজ একটি নতুন তথ্য জানা গিয়েছে ৷ আসিফ কড়া মাত্রার ঘুমের ওষুধ খেয়ে নেশা করত ৷ সেই ওষুধই সে পরিবারের সবাইকে খাইয়ে খুনের জন্য ব্যবহার করেছিল ৷
কালিয়াচকের খুন-কাণ্ড এখন গোটা রাজ্যের নজরে ৷ ইতিমধ্যে সিআইডির তরফেও আসিফকে জেরা করা হয়েছে ৷ জানা গিয়েছে, আসিফকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে জেরা করতে পারে এসটিএফও ৷ কথা ছিল, আগামিকাল আসিফ ও আরিফকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করবে পুলিশ ৷ কিন্তু আজ বিকেলেই সেই কাজ সারেন পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া ৷ শুধু বাড়ির ভিতর কিংবা গুদামঘরেই নয়, পুনর্নির্মাণে আসিফকে নিয়ে যাওয়া হয় দোতলায় তার নিজের ঘরেও ৷ সেখানে সে দেখায়, কীভাবে ওই ঘরে বসে গোটা বাড়িকে নিয়ন্ত্রণ করত সে ৷
পুলিশ সুপার বলেন, "আজ আসিফ ও তার দাদাকে নিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হল ৷ আসিফ দেখিয়েছে, সে কীভাবে পরিবারের চারজনকে খুন করেছে ৷ কীভাবে প্লাইউড দিয়ে প্রকোষ্ঠ বানিয়ে চারজনকে শ্বাসরোধ করে ডুবিয়ে মেরেছে, সেটাও সে দেখিয়েছে ৷ ঠান্ডা পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে সে সবাইকে খাইয়েছিল ৷ ওষুধের কাজ শুরু হলে বাড়ির দেওয়ালে থাকা সুড়ঙ্গ দিয়ে সবাইকে গুদামঘরে নিয়ে যায় ৷"
আরও পড়ুন : Kaliachak Murder Case : ডার্ক ওয়েবযোগের প্রমাণ মেলেনি, তবে ডিপ ওয়েবে পারদর্শী খুনি আসিফ
তিনি বলেন, "আমাদের তদন্ত প্রক্রিয়া খুব দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে ৷ আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত আমরা মামলার চার্জশিট পেশ এবং অভিযুক্তের কাস্টোডিয়াল ট্রায়াল করাতে পারব ৷ তবে আগ্নেয়াস্ত্র সে কোথায় থেকে সংগ্রহ করেছিল, কত টাকা দিয়ে কিনেছিল, কী কারণে সেই অস্ত্রের আমদানি, তা আমরা এখনও জানতে পারিনি ৷ সেটা জানার চেষ্টা চলছে ৷ মৃতদেহগুলি থেকে আমরা প্রয়োজনীয় ভিসেরা নমুনাও সংগ্রহ করেছি ৷"
আরও পড়ুন : Kaliachak Murder Case : আগামিকাল ঘটনার পুনর্নির্মাণ, আসিফের ফাঁসির দাবি স্থানীয়দের