মালদা, 31 জুলাই: পঞ্চায়েত ভোট মিটতেই ফের বেআব্রু হয়ে পড়ল শাসকদলের দ্বন্দ্ব ৷ ভরা মিছিলে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়লেন জেলা তৃণমূলের দুই নেতা-নেত্রী ৷ তাঁদের মধ্যে একজন ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান ৷ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রীও বটে ৷ আরেকজন সদ্য নির্বাচনে মালদা জেলা পরিষদের নির্বাচিত প্রার্থী ৷ প্রকাশ্যে বচসাই শুধু নয়, একে অন্যের দিকে তেড়ে যেতেও দেখা গিয়েছে দু'জনকে ৷ পুরো বিষয়টি ধামাচাপা দিতে ব্যস্ত দলের জেলা নেতৃত্ব ৷ তবে এনিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি গেরুয়া শিবির ৷
মণিপুর এবং কেন্দ্রীয় সরকারের জনবিরোধী নীতি ৷ এই দু’য়ের প্রতিবাদে বিজেপিকে বিঁধতে গতকাল বিকেলে মালদা শহরে মিছিলের আয়োজন করে ঘাসফুল শিবির ৷ মিছিল শেষে সভারও আয়োজন ছিল ৷ ওই মিছিল শুরুর সময় বৃন্দাবনি ময়দানে প্রকাশ্যে বচসায় জড়িয়ে পড়েন ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী এবং দলের যুবনেত্রী তথা মালদা জেলা পরিষদের সদ্য নির্বাচিত প্রার্থী প্রতিভা সিং ৷
আরও পড়ুন: একই আসনে জোড়া প্রার্থী জোড়াফুলের, দেগঙ্গায় শাসকদলের কোন্দল চরমে
দু'জনের বিরোধিতা অবশ্য নতুন নয় ৷ তাঁদের এই রাজনৈতিক সম্পর্কের কথা জেলা রাজনীতিতে সুপরিচিত ৷ তবে তাঁরা যে এভাবে প্রকাশ্যে বচসায় জড়িয়ে পড়বেন, একে অন্যের দিকে তেড়ে যাবেন, তা ভাবতে পারেনি উপস্থিত তৃণমূল নেতৃত্বও ৷ দু'জনকে সামাল দিতে এগিয়ে আসতে দেখা যায় দলের শ্রমিক সংগঠন, আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি শুভদীপ সান্যালকে ৷ তবে ব্যর্থ হন তিনি ৷ শেষ পর্যন্ত উপস্থিত সবার হস্তক্ষেপে তাঁরা নিরস্ত হন ৷ তবে কী কারণে এই বিরোধ, তা জানা যায়নি ৷ জানাতে চাননি যুযুধান দুই নেতা-নেত্রীও ৷
পুরো ঘটনায় হতবাক হয়ে পড়েন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা ৷ সংবাদমাধ্যমকেও সেই ছবি তুলতে বাধা দেওয়া হয় ৷ মিছিল শেষে দলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সিকে এনিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "এটা আমাদের ঘরের ব্যাপার ৷ সেই সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না ৷ সম্ভবত মিছিলে লোক আনা নিয়ে তাঁদের মধ্যে দু'-একটি কথা হয়েছে ৷ তবে এটা কোনও বড় ব্যাপার নয় ৷ আমরা সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি মিটিয়ে নিয়েছি ৷"
আরও পড়ুন: গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে আক্রান্ত 10 জন, নির্বাচনের মুখে অস্বস্তিতে তৃণমূল
এই ইস্যুতে শাসকদলকে তীব্র কটাক্ষ করেছেন বিজেপি নেতা অম্লান ভাদুড়ি ৷ তিনি বলেন, "এটা সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা ৷ তৃণমূল দলটার মধ্যে চরম বিশৃঙ্খলা চলছে ৷ শুধুমাত্র ক্ষমতায় আছে বলে সবাই এক জায়গায় আছে ৷ যেদিন ক্ষমতা থেকে চলে যাবে, এক মুহূর্তে দলটা আর টিকবে না ৷ এই বিশৃঙ্খলা দিনে দিনে বাড়ছে ৷ আমাদের একটাই বক্তব্য, এই বিশৃঙ্খলায় যেন সাধারণ মানুষ জড়িয়ে না-পড়ে ৷ মানুষের যাতে কোনও ক্ষতি না-হয় ৷ ওরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করছে, করুক ৷"