মালদা, 3 জুন : দু-একদিন খুঁড়িয়ে চলার পর ফের জেলায় দৌড় শুরু করেছে কোরোনা ৷ গতকাল রাতে মালদা মেডিকেলের ভাইরোলজি বিভাগে এই জেলার আরও 10 জনের শরীরে কোরোনা সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৷ বর্তমানে জেলায় কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা 158 ৷ তবে স্বস্তির কথা, ইতিমধ্যেই অধিকাংশ কোরোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছেন ৷
গতকাল রাতে মালদা মেডিকেলের ভাইরোলজি বিভাগে লালারস পরীক্ষার রিপোর্টে এই জেলার 11 জনের রিপোর্ট পজ়িটিভ এসেছে ৷ তবে এই 11 জনের মধ্যে একজনের লালারস দ্বিতীয় দফায় পরীক্ষা করা হয়েছে ৷ মেডিকেল সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন 10 আক্রান্তদের মধ্যে তিনজনের বাড়ি রতুয়া 2 ব্লকে, দু’জনের বাড়ি হবিবপুর ব্লকে, বাকি পাঁচজন রতুয়া 1, গাজোল, হরিশ্চন্দ্রপুর 1, মানিকচক ও পুরাতন মালদার বাসিন্দা ৷
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন কোরোনা আক্রান্তদের প্রত্যেকের খোঁজ মিলেছে ৷ তাদের কোভিড হাসপাতাল ও সংশ্লিষ্ট এলাকার আইসোলেশন সেন্টারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ৷ স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, গতকাল পর্যন্ত কোভিড হাসপাতাল ও বিভিন্ন আইসোলেশন সেন্টারে চিকিৎসাধীন ছিল মাত্র 33 জন কোরোনা আক্রান্ত ৷ বাকিদের সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গিয়েছে ৷ তাই এই জেলায় কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা দেড়শো ছাড়ালেও আতঙ্কের কিছু নেই ৷
এদিকে ভিনরাজ্য থেকে পরিযায়ী শ্রমিকরা এলাকায় ফেরার সঙ্গে সঙ্গে জেলায় কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়তে শুরু করেছে ৷ স্বাভাবিকভাবেই এতে চাপ বাড়ছে পুরাতন মালদার কোভিড হাসপাতালসহ আইসোলেশন সেন্টারগুলিতে ৷ কয়েকদিন আগে এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও ৷ তিনি বেশ কয়েকটি জেলায় নতুন কোভিড হাসপাতাল তৈরির কথা জানিয়েছিলেন ৷ তার মধ্যে ছিল মালদা জেলাও ৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে মালদা মেডিকেলে গড়ে তোলা হচ্ছে 150 শয্যাবিশিষ্ট নয়া কোভিড হাসপাতাল ৷
জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল জানিয়েছেন, মেডিকেলের সুপার স্পেশালিটি ভবনে অত্যাধুনিক ব্যবস্থাযুক্ত এই হাসপাতাল গড়ে তোলা হচ্ছে ৷ তবে শুধুমাত্র উপসর্গযুক্তদেরই সেখানে ভরতি করা হবে ৷ এদিকে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভূষণ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, “শুধু মেডিকেলে কোভিড হাসপাতালই নয়, মালদা শহরের মধ্যেই একটি আইসোলেশন সেন্টারও তৈরি করা হচ্ছে ৷ সেখানেও 150টি শয্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে৷ রাজ্য সরকারের নির্দেশেই এই দুটি চিকিৎসা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে ৷”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যাচ্ছে, জুন মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে মালদা জেলায় কোরোনা সংক্রমণ আরও অনেকটা গতি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ৷ বিশেষত সিংহভাগ পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফেরার পর সংক্রমণ আরও বাড়বে বলেই ধারণা ৷ সেকথা চিন্তা করেই জেলার বিভিন্ন জায়গায় আইসোলেশন সেন্টার খোলা হয়েছে ৷ এবার মালদা শহরে লোকালয় থেকে কিছুটা বাইরে এই সেন্টার খোলা হচ্ছে ৷