ETV Bharat / state

Kaliachak Murder Case : ক্রিপ্টোকারেন্সির জন্যই কি আসিফ বাবাকে ব্ল্যাকমেল করত ? উঠছে একাধিক প্রশ্ন

19 বছরের ছেলে আসিফের ঠান্ডা মাথা পরিকল্পনামাফিক সব কুকীর্তি দেখে অবাক হচ্ছেন পুলিশ আধিকারিক থেকে শুরু করে তদন্তকারীরা ৷ একজন সামান্য মাধ্যমিক পাশ ছেলের পক্ষে কী করে ডিপ ওয়েব পেরিয়ে ডার্ক ওয়েবে ঢোকা সম্ভব ? এরকমই একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে তদন্তকারীদের মনে ৷

আসিফ
আসিফ
author img

By

Published : Jun 25, 2021, 11:59 AM IST

মালদা, 25 জুন : আসিফ কি সত্যিই ডার্ক ওয়েবে বিচরণ করত ? বিট কয়েন পেতেই কি সে বাবাকে ব্ল্যাকমেল করে এত টাকা হাতিয়েছিল ? ক্রিপ্টোকারেন্সির লোভেই কি সে লিচুবাগান থেকে শুরু করে বাবার দু‘টি ডাম্পার, ছোট চারচাকা গাড়ি, দু‘টি মোটরবাইক-সহ একাধিক সব বিক্রি করে দিয়েছে ? তার মতো একজন সাধারণ মাধ্যমিক পাশ ছেলের পক্ষে কি সারফেস, ডিপ ওয়েব পেরিয়ে ডার্ক ওয়েবে ঢোকা সম্ভব ? সেখান থেকেই কি সে অস্ত্রশস্ত্র কিনেছিল ? তদন্ত এগোনোর পাশাপাশি এইসব একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা ৷

কালিয়াচকের আসিফ কাণ্ডে এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর অধরা ৷ এর মধ্যেই গতকাল আসিফের দাদা আরিফ এবং মামা শিস মহম্মদকে জেলা আদালতে তোলা হয়েছে ৷ দু’জনেই বিচারকের সামনে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন ৷ বিচারককে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দিয়েছেন আরিফ ৷ জানিয়েছেন, তাঁর চোখের সামনে ছোট ভাই কীভাবে বাড়ির চার সদস্যকে খুন করেছিল ৷ কীভাবে তিনি প্রাণে বেঁচেছিলেন ৷ কেন তিনি এতদিন কাউকে কিছু বলেননি ৷ কেন তিনি ঘটনার পর থেকে বাড়িতে আর যাননি এই সমস্ত বিষয় ৷

আসিফ কাণ্ডে ধৃত
আসিফ কাণ্ডে ধৃত

আরও পড়ুন : Kaliachak Murder Case : ডার্ক ওয়েবযোগের প্রমাণ মেলেনি, তবে ডিপ ওয়েবে পারদর্শী খুনি আসিফ

তাঁর কথায়, ঘটনার পর তিনি প্রথমে কলকাতা চলে যান ৷ কিন্তু আশঙ্কা ছিল, ভাই সেখানে গিয়েও তাঁকে খুন করতে পারে ৷ তাই সেখান থেকে রওনা দেন ঝাড়খণ্ডের পাকুড় জেলার চাঁদপুর গ্রামে মামার বাড়িতে ৷ সেখানে থাকাই নিরাপদ বলে মনে হয়েছিল তাঁর ৷

আসিফের মামা শিস মহম্মদ জানিয়েছেন, চাকরি দেওয়ার নামে তাঁর কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা নিয়েছিল আসিফ ৷ কিন্তু চাকরি না হওয়ায় ভাগ্নের কাছ থেকে সেই টাকা ফেরত চান ৷ এতে আসিফ তাঁকে খুন করার হুমকি দেয় ৷ সন্দেহ হওয়ায় তিনি আরিফকে সব ঘটনা জানান ৷ কথা বলে বুঝতে পারেন বড় ভাগ্নে আরিফ কিছু চেপে যাচ্ছে ৷ এরপরেই তিনি তাঁকে বিভিন্নভাবে প্রশ্ন করতে থাকেন ৷ একসময় আরিফ তাঁকে গোটা ঘটনা জানালে তিনি পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দেন ৷

ধৃত আসিফের দুই বন্ধুকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ
ধৃত আসিফের দুই বন্ধুকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ


ঘটনার তদন্তে শিস মহম্মদকেও কিন্তু সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন তদন্তকারীরা ৷ শিস মহম্মদের সাহায্যেই কি আসিফ ওই বিপুল অস্ত্রশস্ত্র কিনেছিল ? এই প্রশ্নও ভাবাচ্ছে তাঁদের ৷ এমনই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে জেলা পুলিশের একটি দল ইতিমধ্যেই চাঁদপুরে আসিফের মামার বাড়ির গ্রামে গিয়েছে ৷ সেখানে শিস মহম্মদের বিষয়ে তথ্যতালাশও শুরু করা হয়েছে ৷ তবে এখনও পর্যন্ত শিস মহম্মদের বিষয়ে সন্দেহজনক কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি বলেই জানিয়েছে জেলা পুলিশ সূত্র ৷

আরও পড়ুন : Kaliachak Murder Case : কীভাবে খুন-কীভাবেই বা বাঁচল দাদা, ঘটনার পুনর্নির্মাণে দেখাল আসিফ

এদিকে, গতকাল আসিফের দুই বন্ধু সাবির আলি ও মহম্মদ মাফুজকে চারদিনের পুলিশি হেফাজত শেষে জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে ৷ পুলিশ তাদের আর নিজেদের হেফাজতে নিতে চায়নি ৷ বিচারক দু’জনকেই 10 দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ গতকাল কোনও আইনজীবীও এই দু’জনের সমর্থনে জামিনের আবেদন করেননি ৷ তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ ৷ জেরায় তারা জানিয়েছে, আসিফ তাদের দু’জনকে দুটি সিল করা প্যাকেট রাখতে দিয়ে বলেছিল, কিছুদিন পর সে প্যাকেট দুটি ফেরত নিয়ে নেবে ৷ এর জন্য তাদের 50 হাজার টাকা দেবে বলে জানিয়েছিল আসিফ ৷

এদিকে পুরনো 16 মাইল গ্রাম যেখানে আসিফদের বাড়ি, তার খানিকটা দূরেই রয়েছে খাগড়াগড় কাণ্ডে ধৃত রেজাউল হকের বাড়ি ৷ রেজাউলের ভাই আবদুল্লার সঙ্গে আসিফের ভাল সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ ৷ আবদুল্লা গৃহ নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসায়ী ৷ বাড়ি থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে দোকানও রয়েছে তার ৷ সেই দোকান থেকেই আসিফ গুদামঘর তৈরির একাধিক সামগ্রী কিনেছিল বলে জানা গিয়েছে ৷

এমনকি প্লাইবোর্ডের যে চৌবাচ্চা আকৃতির প্রকোষ্ঠ বানিয়ে বাবা-মা, বোন ও ঠাকুমাকে ডুবিয়ে মেরেছিল, সেই প্লাইবোর্ডও আবদুল্লার দোকান থেকেই আনা হয় ৷ ফলে এই খুনের ঘটনায় আবদুল্লাকেও সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে ৷

আরও পড়ুন : Kaliachak Murder Case: আরিফ মহম্মদ ও তাঁর মামাকে আদালতে পেশ, নেওয়া হবে গোপন জবানবন্দি

মালদা, 25 জুন : আসিফ কি সত্যিই ডার্ক ওয়েবে বিচরণ করত ? বিট কয়েন পেতেই কি সে বাবাকে ব্ল্যাকমেল করে এত টাকা হাতিয়েছিল ? ক্রিপ্টোকারেন্সির লোভেই কি সে লিচুবাগান থেকে শুরু করে বাবার দু‘টি ডাম্পার, ছোট চারচাকা গাড়ি, দু‘টি মোটরবাইক-সহ একাধিক সব বিক্রি করে দিয়েছে ? তার মতো একজন সাধারণ মাধ্যমিক পাশ ছেলের পক্ষে কি সারফেস, ডিপ ওয়েব পেরিয়ে ডার্ক ওয়েবে ঢোকা সম্ভব ? সেখান থেকেই কি সে অস্ত্রশস্ত্র কিনেছিল ? তদন্ত এগোনোর পাশাপাশি এইসব একাধিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজছেন তদন্তকারীরা ৷

কালিয়াচকের আসিফ কাণ্ডে এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর অধরা ৷ এর মধ্যেই গতকাল আসিফের দাদা আরিফ এবং মামা শিস মহম্মদকে জেলা আদালতে তোলা হয়েছে ৷ দু’জনেই বিচারকের সামনে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন ৷ বিচারককে ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ দিয়েছেন আরিফ ৷ জানিয়েছেন, তাঁর চোখের সামনে ছোট ভাই কীভাবে বাড়ির চার সদস্যকে খুন করেছিল ৷ কীভাবে তিনি প্রাণে বেঁচেছিলেন ৷ কেন তিনি এতদিন কাউকে কিছু বলেননি ৷ কেন তিনি ঘটনার পর থেকে বাড়িতে আর যাননি এই সমস্ত বিষয় ৷

আসিফ কাণ্ডে ধৃত
আসিফ কাণ্ডে ধৃত

আরও পড়ুন : Kaliachak Murder Case : ডার্ক ওয়েবযোগের প্রমাণ মেলেনি, তবে ডিপ ওয়েবে পারদর্শী খুনি আসিফ

তাঁর কথায়, ঘটনার পর তিনি প্রথমে কলকাতা চলে যান ৷ কিন্তু আশঙ্কা ছিল, ভাই সেখানে গিয়েও তাঁকে খুন করতে পারে ৷ তাই সেখান থেকে রওনা দেন ঝাড়খণ্ডের পাকুড় জেলার চাঁদপুর গ্রামে মামার বাড়িতে ৷ সেখানে থাকাই নিরাপদ বলে মনে হয়েছিল তাঁর ৷

আসিফের মামা শিস মহম্মদ জানিয়েছেন, চাকরি দেওয়ার নামে তাঁর কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকা নিয়েছিল আসিফ ৷ কিন্তু চাকরি না হওয়ায় ভাগ্নের কাছ থেকে সেই টাকা ফেরত চান ৷ এতে আসিফ তাঁকে খুন করার হুমকি দেয় ৷ সন্দেহ হওয়ায় তিনি আরিফকে সব ঘটনা জানান ৷ কথা বলে বুঝতে পারেন বড় ভাগ্নে আরিফ কিছু চেপে যাচ্ছে ৷ এরপরেই তিনি তাঁকে বিভিন্নভাবে প্রশ্ন করতে থাকেন ৷ একসময় আরিফ তাঁকে গোটা ঘটনা জানালে তিনি পুলিশকে জানানোর পরামর্শ দেন ৷

ধৃত আসিফের দুই বন্ধুকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ
ধৃত আসিফের দুই বন্ধুকে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ


ঘটনার তদন্তে শিস মহম্মদকেও কিন্তু সন্দেহের তালিকায় রেখেছেন তদন্তকারীরা ৷ শিস মহম্মদের সাহায্যেই কি আসিফ ওই বিপুল অস্ত্রশস্ত্র কিনেছিল ? এই প্রশ্নও ভাবাচ্ছে তাঁদের ৷ এমনই সব প্রশ্নের উত্তর পেতে জেলা পুলিশের একটি দল ইতিমধ্যেই চাঁদপুরে আসিফের মামার বাড়ির গ্রামে গিয়েছে ৷ সেখানে শিস মহম্মদের বিষয়ে তথ্যতালাশও শুরু করা হয়েছে ৷ তবে এখনও পর্যন্ত শিস মহম্মদের বিষয়ে সন্দেহজনক কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি বলেই জানিয়েছে জেলা পুলিশ সূত্র ৷

আরও পড়ুন : Kaliachak Murder Case : কীভাবে খুন-কীভাবেই বা বাঁচল দাদা, ঘটনার পুনর্নির্মাণে দেখাল আসিফ

এদিকে, গতকাল আসিফের দুই বন্ধু সাবির আলি ও মহম্মদ মাফুজকে চারদিনের পুলিশি হেফাজত শেষে জেলা আদালতে পেশ করা হয়েছে ৷ পুলিশ তাদের আর নিজেদের হেফাজতে নিতে চায়নি ৷ বিচারক দু’জনকেই 10 দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন ৷ গতকাল কোনও আইনজীবীও এই দু’জনের সমর্থনে জামিনের আবেদন করেননি ৷ তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু করেছে পুলিশ ৷ জেরায় তারা জানিয়েছে, আসিফ তাদের দু’জনকে দুটি সিল করা প্যাকেট রাখতে দিয়ে বলেছিল, কিছুদিন পর সে প্যাকেট দুটি ফেরত নিয়ে নেবে ৷ এর জন্য তাদের 50 হাজার টাকা দেবে বলে জানিয়েছিল আসিফ ৷

এদিকে পুরনো 16 মাইল গ্রাম যেখানে আসিফদের বাড়ি, তার খানিকটা দূরেই রয়েছে খাগড়াগড় কাণ্ডে ধৃত রেজাউল হকের বাড়ি ৷ রেজাউলের ভাই আবদুল্লার সঙ্গে আসিফের ভাল সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ ৷ আবদুল্লা গৃহ নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসায়ী ৷ বাড়ি থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে দোকানও রয়েছে তার ৷ সেই দোকান থেকেই আসিফ গুদামঘর তৈরির একাধিক সামগ্রী কিনেছিল বলে জানা গিয়েছে ৷

এমনকি প্লাইবোর্ডের যে চৌবাচ্চা আকৃতির প্রকোষ্ঠ বানিয়ে বাবা-মা, বোন ও ঠাকুমাকে ডুবিয়ে মেরেছিল, সেই প্লাইবোর্ডও আবদুল্লার দোকান থেকেই আনা হয় ৷ ফলে এই খুনের ঘটনায় আবদুল্লাকেও সন্দেহের তালিকায় রাখা হয়েছে ৷

আরও পড়ুন : Kaliachak Murder Case: আরিফ মহম্মদ ও তাঁর মামাকে আদালতে পেশ, নেওয়া হবে গোপন জবানবন্দি

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.